Dhaka বুধবার, ১৩ অগাস্ট ২০২৫, ২৮ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের পর ১৪ মামলায় ইমরান খানের জামিন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তানের নির্বাচন হয় বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)। ফল ঘোষণা এখনো শেষ হয়নি। চলছে সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের প্রধান ইমরান খানকে ১২ মামলায় জামিন দিয়েছেন ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আদালত (এটিসি)।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ইসলামাবাদ এটিসির বিচারক মালিক ইজাজ আসিফ এক শুনানি শেষে এ রায় দিয়েছেন।

ইমরান যে ১২ মামলায় জামিন পেয়েছেন, তার মধ্যে পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তর এবং সেনা জাদুঘরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলাও আছে। এসব মামলায় ইমরানকে ১ লাখ পাকিস্তানি রুপির মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বিচারক মালিক ইজাজ আসিফ জামিন আবেদনের শুনানি করেন।

তিনি বলেছেন, পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতাকে গ্রেপ্তার করে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ৯ মে-এর ঘটনায় অভিযুক্ত সবাই জামিনে আছেন।

যেসব মামলায় ইমরান খান জামিন পেয়েছেন- সেগুলো গত বছরের ৯ মে পাকিস্তানের একাধিক সেনাঘাঁটিতে হামলা চালানোর অভিযোগে ইমরান খান ও পিটিআইয়ের নেতাদের বিরুদ্ধে হয়েছিল। ইসলামাবাদ থেকে ইমরান খানকে গ্রেফতার করে প্যারামিলিটারি রেঞ্জার্স। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রাওয়ালপিন্ডিতে সেনার সদর দফতরসহ প্রায় ২০টি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। লাহোরের কর্পস কম্যান্ডারের বাড়ি, শাদমান পুলিশ স্টেশনেও হামলা হয়। শতাধিক পিটিআই কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। ওই মামলাতেই অভিযুক্ত ছিলেন ইমরান।

ইমরান খানের পাশাপাশি তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) জ্যেষ্ঠ নেতা শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও ১৩ মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে।

যেসব মামলায় ইমরান ও কুরেশি জামিন পেয়েছেন সবগুলোই গত ৯ মে দাঙ্গার সঙ্গে সম্পর্কিত। ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজিরা দিতে গিয়ে গত ৯ মে আদালত চত্বরে গ্রেফতার হয়েছিলেন ইমরান খান। তার পর অভূতপূর্ব বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের নেতাকর্মী-সমর্থকরা। পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেবার সেনানিবাস ও সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়।

যেসব মামলায় জামিন পেয়েছেন ইমরান, সেগুলোর মধ্যে ১২টি ৯ মে দাঙ্গায় উসকানি সংক্রান্ত; বাকি ২টির মধ্যে একটি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টার (জিএইচকিউ) এবং অপরটি সামরিক বাহিনীর জাদুঘরে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

আর যে ১৩ মামলায় শাহ মুহম্মদ কুরেশি জামিন পেয়েছেন, সেগুলোর সবই দাঙ্গায় উসকানি সংক্রান্ত।

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচন হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। অ্যাসেম্বলির মোট আসনসংখ্যা ২৬৬টি। এসব আসনের মধ্যে একটি ব্যতীত বাকি সবগুলোতে নির্বাচনী ভোটগ্রহণ হয়েছে বৃহস্পতিবার।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পার্লামেন্টের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে। আর নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) প্রার্থীরা পেয়েছে ৭১ টি আসন। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থীরা পেয়েছে ৫৪টি, জামিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম (জেইউআই-এফ) ৩টি ও অন্যান্যরা পেয়েছে ৩৩টি আসন।

একটি আসনে ভোট স্থগিত হয়েছে এবং ১২টি আসনের ফলাফল ঘোষণা এখনও বাকি আছে।

ঘোষিত ফলে এটা স্পষ্ট হয়েছে, কোনো দলই পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা ১৩৩টা আসন পাচ্ছে না। ফলে একটি ‘ঝুলন্ত’ পার্লামেন্টই পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ঘোষণাপত্রে ছাড় দিয়েছি, জুলাই সনদে একটুও ছাড় নয় : নাহিদ ইসলাম

নির্বাচনের পর ১৪ মামলায় ইমরান খানের জামিন

প্রকাশের সময় : ০৫:৫৭:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

পাকিস্তানের নির্বাচন হয় বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি)। ফল ঘোষণা এখনো শেষ হয়নি। চলছে সরকার গঠনের জন্য বিভিন্ন দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা। পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের প্রধান ইমরান খানকে ১২ মামলায় জামিন দিয়েছেন ইসলামাবাদের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী আদালত (এটিসি)।

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) ইসলামাবাদ এটিসির বিচারক মালিক ইজাজ আসিফ এক শুনানি শেষে এ রায় দিয়েছেন।

ইমরান যে ১২ মামলায় জামিন পেয়েছেন, তার মধ্যে পাকিস্তানের সেনা সদর দপ্তর এবং সেনা জাদুঘরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলাও আছে। এসব মামলায় ইমরানকে ১ লাখ পাকিস্তানি রুপির মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডির সন্ত্রাসবিরোধী আদালতের বিচারক মালিক ইজাজ আসিফ জামিন আবেদনের শুনানি করেন।

তিনি বলেছেন, পাকিস্তান তেহরিক ই ইনসাফের (পিটিআই) প্রতিষ্ঠাতাকে গ্রেপ্তার করে রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই। ৯ মে-এর ঘটনায় অভিযুক্ত সবাই জামিনে আছেন।

যেসব মামলায় ইমরান খান জামিন পেয়েছেন- সেগুলো গত বছরের ৯ মে পাকিস্তানের একাধিক সেনাঘাঁটিতে হামলা চালানোর অভিযোগে ইমরান খান ও পিটিআইয়ের নেতাদের বিরুদ্ধে হয়েছিল। ইসলামাবাদ থেকে ইমরান খানকে গ্রেফতার করে প্যারামিলিটারি রেঞ্জার্স। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রাওয়ালপিন্ডিতে সেনার সদর দফতরসহ প্রায় ২০টি সামরিক ঘাঁটিতে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়েছিল। লাহোরের কর্পস কম্যান্ডারের বাড়ি, শাদমান পুলিশ স্টেশনেও হামলা হয়। শতাধিক পিটিআই কর্মী-সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়। ওই মামলাতেই অভিযুক্ত ছিলেন ইমরান।

ইমরান খানের পাশাপাশি তার রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) জ্যেষ্ঠ নেতা শাহ মেহমুদ কুরেশিকেও ১৩ মামলায় জামিন দেওয়া হয়েছে।

যেসব মামলায় ইমরান ও কুরেশি জামিন পেয়েছেন সবগুলোই গত ৯ মে দাঙ্গার সঙ্গে সম্পর্কিত। ইসলামাবাদ হাইকোর্টে হাজিরা দিতে গিয়ে গত ৯ মে আদালত চত্বরে গ্রেফতার হয়েছিলেন ইমরান খান। তার পর অভূতপূর্ব বিক্ষোভে ফেটে পড়েন তার দল পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের নেতাকর্মী-সমর্থকরা। পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো সেবার সেনানিবাস ও সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা হয়।

যেসব মামলায় জামিন পেয়েছেন ইমরান, সেগুলোর মধ্যে ১২টি ৯ মে দাঙ্গায় উসকানি সংক্রান্ত; বাকি ২টির মধ্যে একটি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর জেনারেল হেডকোয়ার্টার (জিএইচকিউ) এবং অপরটি সামরিক বাহিনীর জাদুঘরে হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

আর যে ১৩ মামলায় শাহ মুহম্মদ কুরেশি জামিন পেয়েছেন, সেগুলোর সবই দাঙ্গায় উসকানি সংক্রান্ত।

পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির নির্বাচন হয়েছে গত ৮ ফেব্রুয়ারি, বৃহস্পতিবার। অ্যাসেম্বলির মোট আসনসংখ্যা ২৬৬টি। এসব আসনের মধ্যে একটি ব্যতীত বাকি সবগুলোতে নির্বাচনী ভোটগ্রহণ হয়েছে বৃহস্পতিবার।

পাকিস্তানের গণমাধ্যম ডনের দেওয়া সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, পার্লামেন্টের ২৬৬টি আসনের মধ্যে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৯২টি আসনে জয় পেয়েছে। আর নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান মুসলিম লীগের (পিএমএল-এন) প্রার্থীরা পেয়েছে ৭১ টি আসন। বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির নেতৃত্বাধীন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রার্থীরা পেয়েছে ৫৪টি, জামিয়তে উলেমা-ই-ইসলাম (জেইউআই-এফ) ৩টি ও অন্যান্যরা পেয়েছে ৩৩টি আসন।

একটি আসনে ভোট স্থগিত হয়েছে এবং ১২টি আসনের ফলাফল ঘোষণা এখনও বাকি আছে।

ঘোষিত ফলে এটা স্পষ্ট হয়েছে, কোনো দলই পার্লামেন্টে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা বা ১৩৩টা আসন পাচ্ছে না। ফলে একটি ‘ঝুলন্ত’ পার্লামেন্টই পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান।