নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশে অতি দ্রুত যৌথ অভিযান শুরু হবে বলে জানিয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ বিঘ্নিত করে এমন কোন কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না। এমন কর্মকাণ্ড ঘটলে যা করা প্রয়োজন তা করবে বাহিনীগুলো। মাঠ পর্যায়ে অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধারসহ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হবে।
রোববার (২১ ডিসেম্বর) নির্বাচন ভবন মিলনায়তনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট উপলক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, যারা দস্যুতা করতে চায়, যারা আমার ভাইকে হত্যা করতে চায়, যারা ভোটে বিশৃঙ্খলা করতে চায়, তাদের প্রতি মানবিক হবো না। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে নির্দেশ দেওয়া হবে। যারা আবেগ ব্যবহার করে অপকর্ম করেছে, তার প্রতিদান তারা পাবেন।
ইসি আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, শহীদ ওসমান হাদির শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যেতে হবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে তিনি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ঠিক রাখতে এখন থেকে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলবে।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, অভিযান চলমান আছে। আমরা বলেছি এটা নিয়মিতভাবে প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে জানানো হবে। প্রতিদিনই প্রায় দুই হাজার জন করে গ্রেপ্তার হচ্ছে।
এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ ক্ষতি করে এমন বিষয়কে বাধা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন কমিশন। এখন থেকে মাঠপর্যায়ে যৌথবাহিনীর অভিযান চালু হবে। তারা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আটক শুরু করবে। পুলিশের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
মো. সানাউল্লাহ বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে যা যা প্রয়োজন সব নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন তিন বাহিনীর প্রধানরা। নির্বাচনকে সামনে রেখে ১ লাখ সেনা মাঠে থাকবে। সেনাবাহিনী একটি ভালো নির্বাচন অনুষ্ঠানে বদ্ধ পরিকর।
প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটের জন্য নিবন্ধনের সময় বাড়ানো হতে পারে বলেও জানিয়েছেন ইসি সচিব। এছাড়াও তিনি বলেন, ‘ তফসিলের ঘোষণার পরে যে কোন নাশকতা নির্বাচনের উপর প্রভাব তৈরি করে। যারা নির্বাচন বানচাল করতে চায় তাদের ওপর মানবিক হওয়ার সুযোগ নেই। নির্বাচন বিঘ্নিত করার জন্য শহর এলাকা টার্গেট করা হয়েছে জনমনে আতঙ্ক তৈরির জন্য, যা চিহ্নিত করা হয়েছে।’
ইসি সচিব বলেন, ‘তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে আলোচনায় তাদের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন। নির্বাচনের মাঠে এক লাখ সেনাসদস্য থাকবে। বাহিনী স্ব স্ব কমান্ডে কাজ করবে। তারা আশ্বস্ত করেছেন তারা সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত আছেন।
এর আগে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক পর্যালোচনায় বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। নির্বাচন ভবনে দুপুর ২টা ৫০ মিনিটে এই বৈঠক শুরু হয়।
সিইসির সভাপতিত্বে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, তিন বাহিনী প্রধান বা তাদের উপযুক্ত প্রতিনিধি, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি), এনএসআই, ডিজিএফআই, কোস্টগার্ড, বিজিবি, র্যাব, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার অংশ নেন।
বৈঠকে চার নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ, তাহমিদা আহমদ, মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ এবং নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
এরও আগে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে বৈঠক করেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনী প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান ও বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খান।
ভোটের তফসিল ঘোষণার পর তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের এটি প্রথম সাক্ষাৎ।
নিজস্ব প্রতিবেদক 




















