রংপুর জেলা প্রতিনিধি :
জাতীয় নির্বাচনের তারিখ পেছানোর কোনো সুযোগ নেই বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) বেগম রাশেদা সুলতানা।
শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) রংপুর নগরীর উত্তম এলাকায় বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রংপুর, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রাম জেলার রিটার্নিং অফিসার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাসহ অন্যদের সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক সভা শেষে সাংবাদিকদের কালে এসব কথা বলেন তিনি।
রাশেদা সুলতানা বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ পর্যায়ের প্রশাসন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই। সবার সহযোগিতায় সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে কমিশন। আগের মত দিন নেই। কমিশন এবার নতুন আইন করেছে ভোটারদের জন্য। তাদের অধিকার কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বলে জানিয়ে আসছে। এর মধ্যেই নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়েছে। সে মোতাবেক ৭ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হবে। এই অবস্থায় আলোচনা তৈরি হয়েছে, বিএনপি নির্বাচনে এলে তফসিল পেছানোর সুযোগ আছে কি না।
সেই সূত্রে সাংবাদিকরা নির্বাচনের তারিখ পেছানো হবে কি না জানতে চাইলে কমিশনার রাশেদা সুলতানা বলেন, যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। পেছানোর কোনো সুযোগ নেই। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রাশেদা সুলতানা বলেন, হরতাল-অবরোধ কারা দেবে কি দেবে না, সেটি আমরা বলতে পারবো না। তবে আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত আছে। ভোটের পরিবেশ পুরোপুরি তৈরি আছে, তৈরি থাকবে। আশা করি কোনোভাবে ভোটের পরিবেশ বিঘ্নিত হবে না।
তিনি বলেন, বর্তমানে ভোটের যে পরিবেশ তৈরি রয়েছে, সেই পরিবেশ বজায় থাকবে। ভোটাররা সংসদ সদস্য হিসেবে যাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবেন, তিনিই সংসদে যাবেন। আসন্ন নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী থাকবে কিনা তা নিয়ে কমিশন চিন্তা করছে।
বেগম রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচনকে উৎসবমুখর করতে আমরা প্রচার-প্রচারণা, উদ্দীপনামূলক এবং টিভিসি প্রস্তুতের কাজ করছি।আগে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখালে কোনো ধরনের শাস্তির বিধান ছিল না। এবার সংশোধিত আইনে ভয়-ভীতি প্রদর্শনকারীকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিষয়টি নিয়ে আমরা আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানিয়েছি। ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে এসে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারবেন।
ইসি রাশেদা সুলতানা বলেন, নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে অবশ্যই থাকবে। এখনও আমরা পুরোপুরি সিদ্ধান্ত নিইনি। তবে অতীতের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেনাবাহিনী ছিল, আশা করছি এই নির্বাচনেও থাকবে।
ভোটারদের নির্ভয়ে কেন্দ্রে গিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এবার ভোটকেন্দ্রে যেতে কিংবা ভোট দিতে বাধা দিলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আগে ভোটারদের ভয়ভীতি দেখালে, হুমকি-ধামকি দিলে শাস্তির আওতায় আনার আইন ছিল না; এবার কমিশন আইন সংশোধন করে এই অপকর্মের বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান করেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এই আইন কঠোরভাবে প্রতিপালন করার জন্য আজ সভাতেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
রংপুর বিভাগীয় কমিশনার হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, বিজিবি উত্তর-পশ্চিম রিজিয়নের কমান্ডার বিগ্রেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার শফিকুজ্জামান, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও লালমনিরহাট জেলার রিটার্নিং কর্মকর্তা, পুলিশ সুপার, সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন অফিসারসহ থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন।