নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচনের সিডিউল হবে নভেম্বরের মাঝামাঝি। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে জানুয়ারিতে। নভেম্বরে নির্বাচনের ট্রেন ছেড়ে দেবে, মিস করলে পিছিয়ে পড়বেন। কারও জন্য অপেক্ষা করবে না। যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রোববার (২২ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ আয়োজিত জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সংবিধানকে যারা কচুকাটা করেছে, তারাই এখন সংবিধান মানে না। অস্বাভাবিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার উচ্চ আদালত বাদ দিয়েছে। আওয়ামী লীগ বাদ দেয়নি। যে জিনিস নাই, সেটা দাবি করছে বিএনপি। এদেশে আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর আসবে না। এই সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। কারো জন্য নির্বাচন আটকে থাকবে না। কেউ আসুক আর না আসুক, তার জন্য অপেক্ষা করা হবে না।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আপনারা ভোট চুরি করেছেন, ভুয়া ভোটার তৈরি করেছেন। এই দেশটাকে এদেশের সংবিধান অনুযয়ী চালাতে হবে। নির্বাচন ব্যবস্থা সংবিধান অনুযায়ী হবে। অবরোধের খায়েস পূর্ণ হবে না। এসব জ্বালাও-পোড়াও, ধ্বংসের হুমকি যারা দিচ্ছে, ঢাকা অবরোধ-দখলের নামে আবারও আগুন সন্ত্রাসের হুমকি আসছে। শেখ হাসিনা গরীবের সঙ্গে আছেন, দুঃখী মানুষের সঙ্গে আছেন। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। দেশকে বাঁচাতে হবে, দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আর আমাদের গাড়িগুলোর দিকে যখন তাকাই, মনে হয় গরীব গরীব চেহারা। এটা তো বাংলাদেশ না। উপর থেকে মনে হয় ইউরোপ আর নামলে এ কোন বাংলাদেশ। ঢাকা শহরে মুড়ির টিনগুলো (বাস) চলছে। আল্লাহর নামে চলিলাম। গাড়ির গায়ে লেখা আল্লাহর নামে চলিলাম। আর যেতে যেতে খাদের মধ্যে অথবা পাশের আইল্যান্ডের উপর চলে যায়। এই হইলো অবস্থা।’
মালিক সমিতির নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের আজ যে হাইট সেই হাইটের সঙ্গে এটি মানায় না। আমাদের গ্রামগুলোতে ঢাকা শহরের চেয়ে ভালো বাস চলে। তাহলে ঢাকা সিটিতে কেন চলবে না। আপনারা বন্ধ না করলে আমি কি এগুলো বন্ধ করতে পারব। অসুস্থতার পর আমি ভিজিট করতে পারিনি। কিন্তু অসুস্থতার আগে আমি রাত বারোটা পর্যন্ত ভিজিট করেছি।
সড়ক পরিবহন আইনের সংশোধনের বিষয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আইন পরিবর্তন করার কি সময় আছে? জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। জানুয়ারিতে নির্বাচনে যারাই (ক্ষমতায়) আসেন প্রয়োজনে সংযোজন, বিয়োজন ও সংশোধন বিবেচনা করতে পারবেন। এসব বিষয় আপাতত মূলতবি রাখতে হবে।
দাবিগুলো ন্যায় ও যুক্তিসঙ্গত হলেও এখন কিছু করা যাবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমি পারফেক্ট মানুষ এ দাবি করবো না। ভুলত্রুটি হতে পারে। ভালো করার চেষ্টা করেছি, দুর্নীতি কমানোর চেষ্টা করেছি। টেন্ডার বাণিজ্য, বদলি বাণিজ্য বন্ধ করতে পেরেছি। সড়ক পরিবহন আইন সংশোধনসহ যেসব দাবি উত্থাপিত হয়েছে তা এতো অল্প সময়ে ফেরেশতারাও বাস্তবায়ন করতে পারবেন না।
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেগম রওশন আরা মান্নান, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, হাইওয়ে পুলিশ প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি এ কে এম শাহাবুদ্দিন খান, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা, মহাসচিব এনায়েত উল্যাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)- এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন।