পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধি :
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে একদিকে রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে গণসংযোগ করছে, অন্যদিকে আমরা নির্বাচনের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটাও দেখতে পাচ্ছি।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সন্ধ্যায় শহরের চৌরাস্তা পটুয়াখালী জেলা গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে একদিকে রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে গণসংযোগ করছে, অন্যদিকে আমরা নির্বাচনের আকাশে কালো মেঘের ঘনঘটাও দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচন হবে বলে সবাই আশাবাদী এবং মানুষ ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে, তাদের মধ্যে আগ্রহ-উচ্ছ্বাস রয়েছে।
নুরুল হক নুর বলেন, নির্বাচন হবে, আমরা সবাই আশাবাদী। মানুষ ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন করবে, তাদের মধ্যে আগ্রহ-উচ্ছ্বাস রয়েছে। তাই গণঅভ্যুত্থানের শক্তিসমূহ বিএনপি যদি সরকারকে দুর্বল করে; জামায়াত যদি সরকারকে দুর্বল করে; আমরা যদি সবাই মিলে সরকারের নগ্ন সমালোচনা করে তাকে যদি নাস্তানাবুদ করি, তাহলে কিন্তু সামনে শনির দশা সবার জন্য অপেক্ষা করছে। কাজেই প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে আমাদের (রাজনৈতিক দলের) কথা বলা প্রয়োজন। কীভাবে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন করা যায় সকল রাজনৈতিক দলকে সেই দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত।
তিনি বলেন, আমরা সেদিন বলেছিলাম- খালেদা জিয়ার মুক্তি ও গণতন্ত্রের মুক্তি একই সূত্রে গাঁথা। কাজেই আমরা যদি ফ্যাসিবাদকে হটাতে পারি তাহলে গণতন্ত্রের মুক্তি হবে, খালেদা জিয়ারও মুক্তি হবে। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, গণতন্ত্রের মুক্তি হয়েছে, খালেদা জিয়ার মুক্তি হয়েছে এবং বিএনপির নেতাকর্মীদেরও মুক্তি হয়েছে। আমরা যে কথা বলি তা ছয় মাস, এক বছর পরে হলেও বাস্তবে ফলে।
তিনি আরও বলেন, আগামীতে আমরা যে কাঙ্ক্ষিত নতুন বাংলাদেশ চাই, সেই বাংলাদেশ রাতারাতি গড়ে উঠবে না। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং আমলাতন্ত্রের স্বভাব ও চরিত্রের পরিবর্তন না হলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। সেজন্য রাজনৈতিক সমঝোতা, ঐক্য এবং সম্মতির ভিত্তিতে আগামীতে একটি নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জাতীয় সরকার গঠিত হলে সেই সরকার পাঁচ বছরে বাংলাদেশকে একটি স্থিতিশীল এবং উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে পারবে। যদি আমাদের মধ্যে রাজনৈতিক বিভাজন থাকে, অনৈক্য থাকে তাহলে ওই স্বৈরাচারী শক্তি আবার ফিরে আসবে, ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেবে। আমরা কেউ নিরাপদ থাকবো না।
নুর বলেন, গত ২৯ আগস্ট সেনাবাহিনীর একটি পথভ্রষ্ট অংশ দেশে নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য আমাদের ওপরে হামলা চালিয়েছিল। কিন্তু যখন তারা দেখেছে দেশের সমস্ত রাজনৈতিক দল একবিন্দুর নিচে এসে দাঁড়িয়েছে, একই দাবিতে একই সুরে কথা বলছে, তারা পেছনে সরে যেতে বাধ্য হয়েছে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সাহসী ভূমিকায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচারের জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আমরা জানতে চাই তাদের বিরুদ্ধে কী কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এই সরকার আমাদের সকলের সরকার, কিন্তু তাদেরকে আমরা যেই পরামর্শ দিই, সেসব পরামর্শ সরকার সঠিকভাবে আমলে নেয় না। যার ফলে শুরুতে এ সরকারের যে আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা ছিল তা দিন দিন কমছে। কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড সরকারের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। আমরা বলেছিলাম, মুজিব কোটের আধিপত্য একদিন শেষ হবে। এখন ফ্রি দিলেও মানুষ মুজিব কোট নেবে না। ভয়েও এখন কেউ মুজিব কোট পরে না।
জেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক সৈয়দ নজরুল ইসলাম লিটুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দলের উচ্চতর পরিষদ সদস্য কৃষিবিদ মো. শহিদুল ইসলাম ফাহিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম, জেলা গণঅধিকার পরিষদের যুগ্ম-আহবায়ক মো. মশিউর রহমান সাদ্দাম, জেলা সদস্য সচিব মো. শাহ আলম সিকদার। সমাবেশে বিভিন্ন ইউনিট থেকে দলীয় নেতাকর্মীরা যোগ দেয়।