Dhaka সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে, ভোটের মাঠে জনগণের সঙ্গে থাকবো : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেবলমাত্র ‘এক্সপেরিমেন্ট আর এক্সপেরিয়েন্স’ অর্জনের নির্বাচন নয়। অতীতের চেয়ে এবারের নির্বাচন জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন-সাধ-আশা-আকাঙ্ক্ষা- স্বার্থ এবং সম্ভাবনা। আছে বাংলাদেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখার প্রশ্ন। তিনি বলেন, ‘‘আশা করি, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে। ভোটের মাঠে জনগণের সঙ্গে থাকবো।’’

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি হুঁশিয়ারি দেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে অপব্যাখ্যা করতে ষড়যন্ত্রকারীদের রং এবং রূপ পরিবর্তন হলেও তাদের চরিত্র একই রয়ে গেছে।

তারেক রহমান বলেন, একটি চক্র নিজেদের স্বার্থে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছিল। সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পরাজিত একটি চক্র এখন নতুন ইতিহাস তৈরির চেষ্টা করছে।

তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, কখনোই জনগণকে ক্ষমতাহীন করে রাষ্ট্রযন্ত্র ক্ষমতাশালী হতে পারে না।

তারেক রহমান দেশের স্বার্থবিরোধী একটি চক্র নির্বাচনবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই এবং ওসমান হাদি সেই ষড়যন্ত্রেরই শিকার। হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে আছে তাদের আড়ালে, যারা বর্তমান সরকার এবং নির্বাচনকে ব্যর্থ করতে চায়।

কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ভয় দেখিয়ে পিছিয়ে দিতে চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। বিজয়ের মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটবেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আগামী নির্বাচন শুধু অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য নয়। এই নির্বাচনে জড়িয়ে আছে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা। দেশের সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখাও আগামী নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে।

তারেক রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবস দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে কখনোই এই দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য মলিন হবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ হঠাৎ করে গড়ে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয়; লাখো শহীদের আত্মত্যাগ এবং অসংখ্য মা-বোনের সম্মান ও ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে অসংখ্য গবেষণা, বই ও সাহিত্য রচিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ নিবন্ধকে স্বাধীনতার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন।

তারেক রহমান অভিযোগ করেন, পতিত ও পলাতক একটি চক্র নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে। ইতিহাসকে দলীয়করণের এই অপচেষ্টার সুযোগ নিয়েই মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি এখন ‘বিজয়’-এর নতুন ইতিহাস রচনার চেষ্টা করছে, যা ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নয়, বরং বিজয়ের সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই হওয়া উচিত বিজয় দিবসের অঙ্গীকার। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত না হলে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র টেকসই হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, দেশের ইতিহাসে যতবার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে, ততবারই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বও বিপন্ন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে এই সত্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, জনগণকে ক্ষমতাবান করার পূর্বশর্ত হলো জনগণের সরাসরি ভোটে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা। সে কারণেই বিএনপি সবসময় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

নানা ষড়যন্ত্র ও বাধা উপেক্ষা করে দীর্ঘ সময় পর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হওয়াকে তিনি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

তবে ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই দাবি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদির ওপর হামলা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে বা নির্বাচন না হলে কারা লাভবান হবে— এই প্রশ্নগুলোর মধ্যেই হামলাকারীদের পরিচয় লুকিয়ে আছে।

বিজয় দিবসের প্রেরণায় তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা ব্যর্থ হবে। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে গেলে ষড়যন্ত্রকারীদের পিছু হটতে বাধ্য হতে হবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এই নির্বাচনের সঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন, আশা ও দেশের সার্বভৌমত্ব জড়িত। আগামী দশক হবে রূপান্তরের দশক— এই লক্ষ্য সামনে রেখে বিএনপি ‘দেশ গড়ার কর্মসূচি’ বাস্তবায়নে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য এই বিজয়ের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক—আমরা বিভাজন ভুলে, হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকব। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সকলের প্রতি সেই আহবান জানাই।

তারেক রহমান বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন আমাদের মহান বিজয় দিবস। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে কখনোই এই দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য মলিন হবে না। তবে একটি বিষয় আমাদের সবার স্মরণে রাখা দরকার, সতর্ক থাকা দরকার।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ হঠাৎ করেই সাগরের বুকে ভেসে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয়। লাখো শহীদের আত্মত্যাগ আর অসংখ্য মা বোনের সম্মান সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডটির স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে অসংখ্য গল্প বই কবিতা রচিত হয়েছে। অনেকেই হয়ত জানেন, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর ঘটনাবলি নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক নিবন্ধ রয়েছে। এই নিবন্ধটি আমাদের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দলিল।

তারেক রহমান বলেন, পতিত পলাতক একটি চক্র স্রেফ নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে দলীয় ইতিহাসে পরিণত করার অপরিণামদর্শী অপচেষ্টার কারণেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত একটি চক্র ‘বিজয়ে’র নতুন ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা করছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পরাজিত চক্রকে মোকাবেলায় প্রতিশোধ প্রতিহিংসার পরিবর্তে ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্বনির্ভর সমৃদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই হোক এবারের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার। আমি মনে করি, বিএনপি মনে করে, যতদিন পর্যন্ত এই রাষ্ট্রে জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যাবে না ততদিন পর্যন্ত স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে না।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে আজ পর্যন্ত যতবার দেশে গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন হয়েছে আমরা দেখেছি ততবারই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে এর সত্যতা প্রমাণিত। জনগণকে ক্ষমতাহীন করে রাষ্ট্রযন্ত্র কখনো ক্ষমতাশীল হয়ে উঠতে পারে না।

ভোটের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণকে ক্ষমতাবান করার পূর্ব শর্তই হচ্ছে, জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা। এ কারণেই বিএনপি সবসময় রাষ্ট্র এবং সরকারে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই যেকোনো মূল্যে দেশে অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, দেশের জনগণ সাক্ষী, অকারণ শর্তের পর শর্ত জুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একাধিক চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানারকম বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ, সব রকম বাধা উপেক্ষা করে প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় পর নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের সেই কাঙ্ক্ষিত সেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু এখনো থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কী ছিল ওসমান হাদির অপরাধ? আমি মনে করি কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা গেলে কারা খুশি হবে? নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? আমি বিশ্বাস করি এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের শত্রুরা ঘাঁপটি মেরে রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, আমি বিজয় দিবসের এই গৌরবজনক সময়ে দৃঢ়ভাবে বলে দিতে চাই, যারা স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ। ভয়ের কিছু নেই, মানুষের জয় পরাজয়-জীবন মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর হাতে নির্ধারিত। সুতরাং, আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি, ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৭১ সালে প্রমাণিত হয়েছে, ২০২৪ সালে প্রমাণিত হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে প্রমাণিত হয়েছে, জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে জনতার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারেনা। আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গ্রামেগঞ্জে শহরে নগরে বন্দরে বাজারে মহল্লায় অলিতে গলিতে-রাজপথে জনগণের নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো ইনশাআল্লাহ।

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেবলমাত্র ‘এক্সপেরিমেন্ট আর এক্সপেরিয়েন্স’ অর্জনের নির্বাচন নয়। আমি বারবার বলেছি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অতীতের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন-সাধ-আশা-আকাঙ্খা- স্বার্থ এবং সম্ভাবনা। সর্বোপরি এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখার প্রশ্ন।

তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে আমি দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কৃষিজীবী শ্রমজীবী পেশাজীবী শিল্পী-সাহিত্যিক-শিক্ষক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী আলেম ওলামা-পীর মাশায়েখ তথা বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ/প্রতিটি নাগরিককে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে’বিজয়’ বার্তাকে শুধুমাত্র উদ্দীপ্ত স্লোগানে সীমাবদ্ধ না রেখে ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি নাগরিকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আবারো জনগণের সহযোগিতা সমর্থন এবং সুযোগ প্রত্যাশা করছে।

বক্তব্যের শেষাংশে তারেক রহমান মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দল-মত নির্বিশেষে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে শুভেচ্ছা জানান এবং ১৯৭১ ও ২০২৪ সালসহ গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।

আবহাওয়া

আমিরাবাদ-চাঁদপুর সড়কের ১৭ কিলোমিটারে শতাধিক বাঁক

নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে, ভোটের মাঠে জনগণের সঙ্গে থাকবো : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ০৭:২৮:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেবলমাত্র ‘এক্সপেরিমেন্ট আর এক্সপেরিয়েন্স’ অর্জনের নির্বাচন নয়। অতীতের চেয়ে এবারের নির্বাচন জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন-সাধ-আশা-আকাঙ্ক্ষা- স্বার্থ এবং সম্ভাবনা। আছে বাংলাদেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখার প্রশ্ন। তিনি বলেন, ‘‘আশা করি, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন হবে। ভোটের মাঠে জনগণের সঙ্গে থাকবো।’’

সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে বিএনপির আয়োজিত আলোচনা সভায় লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি হুঁশিয়ারি দেন, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধকে অপব্যাখ্যা করতে ষড়যন্ত্রকারীদের রং এবং রূপ পরিবর্তন হলেও তাদের চরিত্র একই রয়ে গেছে।

তারেক রহমান বলেন, একটি চক্র নিজেদের স্বার্থে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করেছিল। সেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে পরাজিত একটি চক্র এখন নতুন ইতিহাস তৈরির চেষ্টা করছে।

তিনি দৃঢ়ভাবে বলেন, কখনোই জনগণকে ক্ষমতাহীন করে রাষ্ট্রযন্ত্র ক্ষমতাশালী হতে পারে না।

তারেক রহমান দেশের স্বার্থবিরোধী একটি চক্র নির্বাচনবিরোধী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বলে সতর্ক করেন। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই এবং ওসমান হাদি সেই ষড়যন্ত্রেরই শিকার। হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে আছে তাদের আড়ালে, যারা বর্তমান সরকার এবং নির্বাচনকে ব্যর্থ করতে চায়।

কর্মীদের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, ভয় দেখিয়ে পিছিয়ে দিতে চাওয়া হচ্ছে। কিন্তু ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই। বিজয়ের মিছিল নিয়ে এগিয়ে গেলে ষড়যন্ত্রকারীরা পিছু হটবেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আগামী নির্বাচন শুধু অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য নয়। এই নির্বাচনে জড়িয়ে আছে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আশা, আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা। দেশের সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখাও আগামী নির্বাচনের ওপর নির্ভর করছে।

তারেক রহমান বলেন, মহান বিজয় দিবস দেশের ইতিহাসের সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে কখনোই এই দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য মলিন হবে না।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ হঠাৎ করে গড়ে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয়; লাখো শহীদের আত্মত্যাগ এবং অসংখ্য মা-বোনের সম্মান ও ত্যাগের বিনিময়ে এই স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে অসংখ্য গবেষণা, বই ও সাহিত্য রচিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ নিবন্ধকে স্বাধীনতার ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে উল্লেখ করেন।

তারেক রহমান অভিযোগ করেন, পতিত ও পলাতক একটি চক্র নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করেছে। ইতিহাসকে দলীয়করণের এই অপচেষ্টার সুযোগ নিয়েই মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি এখন ‘বিজয়’-এর নতুন ইতিহাস রচনার চেষ্টা করছে, যা ইতিহাসের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতার শামিল।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পরাজিত শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নয়, বরং বিজয়ের সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি স্বনির্ভর, সমৃদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই হওয়া উচিত বিজয় দিবসের অঙ্গীকার। জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত না হলে স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র টেকসই হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান আরও বলেন, দেশের ইতিহাসে যতবার গণতন্ত্র হুমকির মুখে পড়েছে, ততবারই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বও বিপন্ন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে এই সত্য বারবার প্রমাণিত হয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, জনগণকে ক্ষমতাবান করার পূর্বশর্ত হলো জনগণের সরাসরি ভোটে দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিমূলক সরকার প্রতিষ্ঠা। সে কারণেই বিএনপি সবসময় অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

নানা ষড়যন্ত্র ও বাধা উপেক্ষা করে দীর্ঘ সময় পর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হওয়াকে তিনি জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেন তারেক রহমান।

তবে ষড়যন্ত্র এখনও থেমে নেই দাবি করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদির ওপর হামলা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ হলে বা নির্বাচন না হলে কারা লাভবান হবে— এই প্রশ্নগুলোর মধ্যেই হামলাকারীদের পরিচয় লুকিয়ে আছে।

বিজয় দিবসের প্রেরণায় তিনি বলেন, যারা স্বাধীনতাপ্রিয় ও গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা ব্যর্থ হবে। আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে গেলে ষড়যন্ত্রকারীদের পিছু হটতে বাধ্য হতে হবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, এই নির্বাচনের সঙ্গে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন, আশা ও দেশের সার্বভৌমত্ব জড়িত। আগামী দশক হবে রূপান্তরের দশক— এই লক্ষ্য সামনে রেখে বিএনপি ‘দেশ গড়ার কর্মসূচি’ বাস্তবায়নে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, একটি বৈষম্যহীন বাংলাদেশের জন্য এই বিজয়ের দিনে আমাদের অঙ্গীকার হোক—আমরা বিভাজন ভুলে, হিংসা ভুলে মানুষ হিসেবে মানুষের পাশে থাকব। মহান বিজয় দিবসে আমি দেশবাসী সকলের প্রতি সেই আহবান জানাই।

তারেক রহমান বলেন, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গৌরবোজ্জ্বল দিন আমাদের মহান বিজয় দিবস। যতদিন বাংলাদেশ থাকবে কখনোই এই দিবসের গুরুত্ব এবং তাৎপর্য মলিন হবে না। তবে একটি বিষয় আমাদের সবার স্মরণে রাখা দরকার, সতর্ক থাকা দরকার।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ হঠাৎ করেই সাগরের বুকে ভেসে ওঠা কোনো ভূখণ্ড নয়। লাখো শহীদের আত্মত্যাগ আর অসংখ্য মা বোনের সম্মান সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ নামক এই ভূখণ্ডটির স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের সেই গৌরবময় ইতিহাস নিয়ে অসংখ্য গল্প বই কবিতা রচিত হয়েছে। অনেকেই হয়ত জানেন, স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপর ঘটনাবলি নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নিজের লেখা ‘একটি জাতির জন্ম’ শীর্ষক নিবন্ধ রয়েছে। এই নিবন্ধটি আমাদের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের এক অনন্য দলিল।

তারেক রহমান বলেন, পতিত পলাতক একটি চক্র স্রেফ নিজেদের হীন দলীয় স্বার্থে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের বিকৃতি ঘটিয়েছে। স্বাধীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে দলীয় ইতিহাসে পরিণত করার অপরিণামদর্শী অপচেষ্টার কারণেই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে এখন মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত একটি চক্র ‘বিজয়ে’র নতুন ইতিহাস রচনার অপচেষ্টা করছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, পরাজিত চক্রকে মোকাবেলায় প্রতিশোধ প্রতিহিংসার পরিবর্তে ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি মানুষের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার জন্য স্বনির্ভর সমৃদ্ধ একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাই হোক এবারের বিজয় দিবসের অঙ্গীকার। আমি মনে করি, বিএনপি মনে করে, যতদিন পর্যন্ত এই রাষ্ট্রে জনগণের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা যাবে না ততদিন পর্যন্ত স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র টেকসই ভিত্তির ওপর দাঁড়াবে না।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর থেকে আজ পর্যন্ত যতবার দেশে গণতন্ত্র হুমকির সম্মুখীন হয়েছে আমরা দেখেছি ততবারই দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বও হুমকির সম্মুখীন হয়েছে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর কিংবা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ইতিহাসের প্রতিটি বাঁকে এর সত্যতা প্রমাণিত। জনগণকে ক্ষমতাহীন করে রাষ্ট্রযন্ত্র কখনো ক্ষমতাশীল হয়ে উঠতে পারে না।

ভোটের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, জনগণকে ক্ষমতাবান করার পূর্ব শর্তই হচ্ছে, জনগণের সরাসরি ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক রাষ্ট্র ও সরকার প্রতিষ্ঠা। এ কারণেই বিএনপি সবসময় রাষ্ট্র এবং সরকারে, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতেই যেকোনো মূল্যে দেশে অবাধ সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, দেশের জনগণ সাক্ষী, অকারণ শর্তের পর শর্ত জুড়ে দিয়ে কিংবা নানা অজুহাতে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী একাধিক চক্র নির্বাচন অনুষ্ঠানের পথে বারবার নানারকম বিঘ্ন সৃষ্টির অপচেষ্টা চালিয়েছিল। আলহামদুলিল্লাহ, সব রকম বাধা উপেক্ষা করে প্রায় দেড় দশকের বেশি সময় পর নির্বাচন কমিশন শেষ পর্যন্ত জনগণের সেই কাঙ্ক্ষিত সেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের তারিখ ঘোষণা করেছে। তবে ষড়যন্ত্রকারীরা কিন্তু এখনো থেমে নেই। গণতন্ত্রের পক্ষের সাহসী সন্তান ওসমান হাদিকে গুলি করা সেই ষড়যন্ত্রেরই অংশ। কী ছিল ওসমান হাদির অপরাধ? আমি মনে করি কয়েকটি প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই গণতন্ত্রকামী জনগণের সামনে ঘাতকদের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে উঠবে।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণ করা গেলে কারা খুশি হবে? নির্বাচন ছাড়াই বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বহাল রাখা গেলে কারা লাভবান হবে? দেশে জনগণের ভোটে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হলে কাদের লাভ? আমি বিশ্বাস করি এসব প্রশ্নের জবাবের মধ্যেই হাদির ঘাতকেরা লুকিয়ে রয়েছে। স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণের শত্রুরা ঘাঁপটি মেরে রয়েছে।

তারেক রহমান বলেন, আমি বিজয় দিবসের এই গৌরবজনক সময়ে দৃঢ়ভাবে বলে দিতে চাই, যারা স্বাধীনতাপ্রিয় গণতন্ত্রকামী জনগণকে ভয় দেখাতে চায়, তারা অবশ্যই ব্যর্থ হবে ইনশাআল্লাহ। ভয়ের কিছু নেই, মানুষের জয় পরাজয়-জীবন মৃত্যু সবকিছুই আল্লাহর হাতে নির্ধারিত। সুতরাং, আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে যদি আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার মিছিল নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকি, ষড়যন্ত্রকারীরা অবশ্যই পিছু হটতে বাধ্য হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৭১ সালে প্রমাণিত হয়েছে, ২০২৪ সালে প্রমাণিত হয়েছে, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর, ৯০ এর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে প্রমাণিত হয়েছে, জনগণ ঐক্যবদ্ধ থাকলে জনতার বিজয় কেউ ঠেকিয়ে রাখতে পারেনা। আমি দৃঢ় কণ্ঠে বলতে চাই, নির্ধারিত সময়েই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে গ্রামেগঞ্জে শহরে নগরে বন্দরে বাজারে মহল্লায় অলিতে গলিতে-রাজপথে জনগণের নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠার এই নির্বাচনী মিছিলে আমিও আপনাদের সঙ্গে থাকবো ইনশাআল্লাহ।

নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন কেবলমাত্র ‘এক্সপেরিমেন্ট আর এক্সপেরিয়েন্স’ অর্জনের নির্বাচন নয়। আমি বারবার বলেছি, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন অতীতের যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ। এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন-সাধ-আশা-আকাঙ্খা- স্বার্থ এবং সম্ভাবনা। সর্বোপরি এবারের নির্বাচনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের স্বার্থ এবং সার্বভৌমত্ব সুসংহত রাখার প্রশ্ন।

তিনি বলেন, মহান বিজয় দিবসের প্রাক্কালে আমি দল মত ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে কৃষিজীবী শ্রমজীবী পেশাজীবী শিল্পী-সাহিত্যিক-শিক্ষক-সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবী আলেম ওলামা-পীর মাশায়েখ তথা বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ/প্রতিটি নাগরিককে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে’বিজয়’ বার্তাকে শুধুমাত্র উদ্দীপ্ত স্লোগানে সীমাবদ্ধ না রেখে ‘বিজয়ে’র সুফল প্রতিটি নাগরিকের ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি আবারো জনগণের সহযোগিতা সমর্থন এবং সুযোগ প্রত্যাশা করছে।

বক্তব্যের শেষাংশে তারেক রহমান মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে দল-মত নির্বিশেষে দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে শুভেচ্ছা জানান এবং ১৯৭১ ও ২০২৪ সালসহ গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করেন।