Dhaka সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫, ২৬ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেই আন্তঃদেশীয় ট্রেন চালু করবে ভারত

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

১৫ মাস ধরে বন্ধ থাকা ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃদেশীয় ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত ক্ষীণ। ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, আন্তঃদেশীয় ট্রেন সেবা তখনই পুনরায় শুরু করা সম্ভব হবে যখন বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে।

অন্যদিকে, নিরাপত্তার সংকট আছে বলে মনে করে না বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, নিরাপত্তার চেয়ে সম্পর্কটা এখন গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, এখন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির ওপর নির্ভর করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই কেবল এই ট্রেনগুলো চালু করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে ভারত।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের জেরে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস (ঢাকা-কলকাতা), বন্ধন এক্সপ্রেস (খুলনা-কলকাতা) এবং মিতালী এক্সপ্রেস (ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি) বন্ধ রাখা হয়।

জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে দুই দফায় ভারতকে চিঠি পাঠিয়েছে, কিন্তু ভারতের কোনো উত্তর মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে গত ৬ অক্টোবর রেল মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ৩৮তম আইজিআরএম প্রস্তুতিমূলক সভায় পুনরায় চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পদ্মা সেতু হয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্তাব ভারতকে পাঠানো হবে। এছাড়া, যাত্রীদের অতিরিক্ত মালামাল বহনের জন্য লাগেজ ভ্যান সংযুক্ত করা এবং রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন পরিচালনার অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তাব রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের কাছে পাঠানো হবে। বন্ধন এক্সপ্রেসের জন্য খুলনা স্টেশনে নতুন অবকাঠামো তৈরি এবং বিশেষ ভিসা প্রদানের ব্যবস্থাও করা হবে।

ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, নিরাপত্তা ইস্যুতে ভিসা সেন্টারগুলো সম্পূর্ণভাবে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে চিকিৎসা বা অন্য জরুরি ভিসা দেওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যারা ভারতের ভিসা পাচ্ছেন তারা অভিযোগ করছেন, ট্রেন চলাচল না থাকায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাদের, বিশেষ করে রোগীদের।

বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে ভারতীয় হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা সম্প্রতি বাংলাদেশে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের মতো কিছু ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন।

অপরদিকে, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারত নিরাপত্তার কথা বললেও মূলত রাজনৈতিক কারণে সীমান্তবর্তী ট্রেনে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে বর্তমানে চলমান পণ্যবাহী ট্রেন এবং জরুরি ভিসা দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত কিছুটা সম্ভব হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে চিঠি লিখেছি। রেলপথ মন্ত্রণালয় এটা দেখছে। এখনও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়নি। নিরাপত্তা সংকট আছে বলে আমরা মনে করি না। তবে নিরাপত্তার চেয়ে সম্পর্কটা এখন গুরুত্বপূর্ণ। এটা (ট্রেন চলাচল) সম্পর্কের ওপর নির্ভর করবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলেই আন্তঃদেশীয় ট্রেন চালু করবে ভারত

প্রকাশের সময় : ০৩:২২:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

১৫ মাস ধরে বন্ধ থাকা ভারত-বাংলাদেশের আন্তঃদেশীয় ট্রেন চালু হওয়ার সম্ভাবনা আপাতত ক্ষীণ। ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, আন্তঃদেশীয় ট্রেন সেবা তখনই পুনরায় শুরু করা সম্ভব হবে যখন বাংলাদেশে নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল হবে।

অন্যদিকে, নিরাপত্তার সংকট আছে বলে মনে করে না বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। তারা বলছে, নিরাপত্তার চেয়ে সম্পর্কটা এখন গুরুত্বপূর্ণ।

ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছে, এখন বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতির ওপর নির্ভর করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলেই কেবল এই ট্রেনগুলো চালু করা সম্ভব হবে বলে মনে করছে ভারত।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনের জেরে ২০২৪ সালের ১৯ জুলাই থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস (ঢাকা-কলকাতা), বন্ধন এক্সপ্রেস (খুলনা-কলকাতা) এবং মিতালী এক্সপ্রেস (ঢাকা-নিউ জলপাইগুড়ি) বন্ধ রাখা হয়।

জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে দুই দফায় ভারতকে চিঠি পাঠিয়েছে, কিন্তু ভারতের কোনো উত্তর মেলেনি। এই পরিস্থিতিতে গত ৬ অক্টোবর রেল মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ৩৮তম আইজিআরএম প্রস্তুতিমূলক সভায় পুনরায় চিঠি পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়, পদ্মা সেতু হয়ে মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেন চালুর প্রস্তাব ভারতকে পাঠানো হবে। এছাড়া, যাত্রীদের অতিরিক্ত মালামাল বহনের জন্য লাগেজ ভ্যান সংযুক্ত করা এবং রাজশাহী-কলকাতা ট্রেন পরিচালনার অনুমোদনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তাব রেলপথ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতের কাছে পাঠানো হবে। বন্ধন এক্সপ্রেসের জন্য খুলনা স্টেশনে নতুন অবকাঠামো তৈরি এবং বিশেষ ভিসা প্রদানের ব্যবস্থাও করা হবে।

ভারতীয় হাইকমিশন জানায়, নিরাপত্তা ইস্যুতে ভিসা সেন্টারগুলো সম্পূর্ণভাবে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে চিকিৎসা বা অন্য জরুরি ভিসা দেওয়াকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু যারা ভারতের ভিসা পাচ্ছেন তারা অভিযোগ করছেন, ট্রেন চলাচল না থাকায় বেশ বেগ পেতে হচ্ছে তাদের, বিশেষ করে রোগীদের।

বিষয়টি নিয়ে আলাপকালে ভারতীয় হাইকমিশনের একজন কর্মকর্তা সম্প্রতি বাংলাদেশে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপ ও ভাঙচুরের মতো কিছু ঘটনার কথাও উল্লেখ করেন।

অপরদিকে, বাংলাদেশের কর্মকর্তারা বলছেন, ভারত নিরাপত্তার কথা বললেও মূলত রাজনৈতিক কারণে সীমান্তবর্তী ট্রেনে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। তবে বর্তমানে চলমান পণ্যবাহী ট্রেন এবং জরুরি ভিসা দিয়ে যাত্রীদের যাতায়াত কিছুটা সম্ভব হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন বলেন, ট্রেন চলাচল শুরুর জন্য আমরা মন্ত্রণালয়কে চিঠি লিখেছি। রেলপথ মন্ত্রণালয় এটা দেখছে। এখনও ভারতীয় কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়নি। নিরাপত্তা সংকট আছে বলে আমরা মনে করি না। তবে নিরাপত্তার চেয়ে সম্পর্কটা এখন গুরুত্বপূর্ণ। এটা (ট্রেন চলাচল) সম্পর্কের ওপর নির্ভর করবে।