Dhaka বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিরাপত্তার ঝুঁকিতে আছেন প্রধানমন্ত্রী: ডিএমপি কমিশনার

  • প্রতিনিধির নাম
  • প্রকাশের সময় : ০১:৫৬:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২
  • ১৮৯ জন দেখেছেন

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, পৃথিবীর অন্যান্য প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন।

তিনি বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে দৃশ্যমান নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পাশাপাশি অদৃশ্য ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।’

রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর কেন্দ্রিক নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।

এ সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলদেশের কেন, পৃথিবীর এখন যারা প্রধানমন্ত্রী আছেন, সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওনার ওপর একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল, তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য যাবতীয় চেষ্টার সবগুলো করেছেন। আমার বিশ্বাস আল্লাহ ওনার হায়াৎ রেখেছেন, তাই উনি আমাদের মধ্যে আছেন। না হলে ওনার বেঁচে থাকার কথা না।’

‘এ দিকটা মাথায় রেখে সবসময়ই তার নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। প্রধানমন্ত্রী যতদিন থাকবে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের যতদিন বাংলাদেশে অস্তিত্ব থাকবে ততদিন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসবেন। তাই যারা ষড়যন্ত্র করতে চায় তারা চাইলে ১০ বছর ধরে পরিকল্পনা করতে পারে। বিষয়টা মাথায় রেখে, দেশীয়-আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট, নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে’ —বলেন ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, ‘ভিভিআইপি নিরাপত্তার বিষয়ে খুব বেশি প্রকাশের সুযোগ থাকে না। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি সবার জানার দরকার আছে বলে মনে করি না। সর্বোচ্চভাবে যেটি করা সম্ভব সেই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাঙালির আবেগের জায়গা। ১৫ আগস্টের কষ্ট এবং শোকের সঙ্গে পালন করতে হাজার হাজার মানুষ ৩২ নম্বরে আসেন। সে অনুযায়ী এখানে নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রণয়ন করা হয়েছে। ভেন্যুগুলো ডগ স্কোয়াড ও মাইন ডিটেক্টরের মাধ্যমে সুইপিং করা হয়েছে। পুরো এলাকা সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি করা হবে।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লেকে নৌ পুলিশ ও নৌ বাহিনীর পেট্রোল টিম থাকবে। দৃশ্যমান প্রতিটি জায়গায় নিরাপরাপত্তা বলয় থাকবে। গত কয়েকদিন ধরে আশেপাশের প্রতিটি আবাসিক হোটেল ও মেসে একাধিকবার নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বনানীতে যাবেন, সেখানেও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’

‘রাসেল স্কয়ারের দিক দিয়ে জনসাধারণ প্রবেশ করবেন এবং পশ্চিম দিক দিয়ে বের হয়ে যাবেন। চারদিকে নিরাপত্তা বেস্টনির সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যারিকেড থাকবে। নির্ধারিত রুটম্যাপ অনুসরণ করে এলে সবাই কম সময় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে চলে যেতে পারবেন।’

ব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক না আনার অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এর বাইরে রোড লাইনিং, রুফটপে পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সিটিটিসিও তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। মোবাইল পেট্রোল থাকবে, মানুষজন যাতে ৩২ নম্বরে ঢুকার আগে যথাযথ নিরাপত্তা তল্লাশি হয়, সেজন্য আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। অনুরোধ করবো ব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক নিয়ে যেন কেউ না আসেন।’

‘আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ও সোয়াত টিম সবসময় প্রস্তুত থাকে। এখানে স্থাপিত কন্ট্রোলরুম থেকে সবকিছু মনিটরিং করা হবে। যাতে সার্বক্ষণিক আমরা দেখতে পারি এবং যখন যেখানে প্রয়োজন ব্যবস্থা নিতে পারি।’

৩২ নম্বরের চারপাশ ঘিরে নির্দিষ্ট বলয় তৈরি থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোভিডের ঝুঁকি চলে গেছে বলতে পারি না। যারা এখানে আসবেন অনুরোধ করবো ন্যূনতম নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে যেন একটি মাস্ক পরে আসেন। কারণ এখানে লাখ লাখ লোক জমায়েত হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সব গোয়েন্দা সংস্থা থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো হামলার তথ্য নেই। সারাদেশে পুলিশ আগস্ট মাসে সমস্ত দিক থেকে সতর্ক থাকে, কারণ এটি কলঙ্কিত মাস। এ মাসে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাসহ সারাদেশে ৫০০ স্পটে বোমা হামলা, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। সবকিছু বিবেচনা নিয়ে যতোটা বেশি সম্ভব সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।’

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সরকারের একটি অংশ নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে : তারেক রহমান

নিরাপত্তার ঝুঁকিতে আছেন প্রধানমন্ত্রী: ডিএমপি কমিশনার

প্রকাশের সময় : ০১:৫৬:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ অগাস্ট ২০২২

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, পৃথিবীর অন্যান্য প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে আছেন।

তিনি বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে দৃশ্যমান নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার পাশাপাশি অদৃশ্য ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।’

রোববার (১৪ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচি নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর কেন্দ্রিক নেওয়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা জানান।

এ সময় ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘বাংলদেশের কেন, পৃথিবীর এখন যারা প্রধানমন্ত্রী আছেন, সবচেয়ে বেশি নিরাপত্তা ঝুঁকিতে থাকেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওনার ওপর একাধিকবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। যারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল, তারা প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য যাবতীয় চেষ্টার সবগুলো করেছেন। আমার বিশ্বাস আল্লাহ ওনার হায়াৎ রেখেছেন, তাই উনি আমাদের মধ্যে আছেন। না হলে ওনার বেঁচে থাকার কথা না।’

‘এ দিকটা মাথায় রেখে সবসময়ই তার নিরাপত্তা ঝুঁকি থাকে। প্রধানমন্ত্রী যতদিন থাকবে, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের যতদিন বাংলাদেশে অস্তিত্ব থাকবে ততদিন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে আসবেন। তাই যারা ষড়যন্ত্র করতে চায় তারা চাইলে ১০ বছর ধরে পরিকল্পনা করতে পারে। বিষয়টা মাথায় রেখে, দেশীয়-আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট, নিরাপত্তার ঝুঁকির বিষয় মাথায় রেখে নিরাপত্তা ব্যবস্থা হাতে নেওয়া হয়েছে’ —বলেন ডিএমপি কমিশনার।

তিনি বলেন, ‘ভিভিআইপি নিরাপত্তার বিষয়ে খুব বেশি প্রকাশের সুযোগ থাকে না। প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার বিষয়টি সবার জানার দরকার আছে বলে মনে করি না। সর্বোচ্চভাবে যেটি করা সম্ভব সেই ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।’

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ধানমন্ডি ৩২ নম্বর বাঙালির আবেগের জায়গা। ১৫ আগস্টের কষ্ট এবং শোকের সঙ্গে পালন করতে হাজার হাজার মানুষ ৩২ নম্বরে আসেন। সে অনুযায়ী এখানে নিরাপত্তা পরিকল্পনা গ্রহণ এবং প্রণয়ন করা হয়েছে। ভেন্যুগুলো ডগ স্কোয়াড ও মাইন ডিটেক্টরের মাধ্যমে সুইপিং করা হয়েছে। পুরো এলাকা সিসিটিভির মাধ্যমে নজরদারি করা হবে।’

শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘লেকে নৌ পুলিশ ও নৌ বাহিনীর পেট্রোল টিম থাকবে। দৃশ্যমান প্রতিটি জায়গায় নিরাপরাপত্তা বলয় থাকবে। গত কয়েকদিন ধরে আশেপাশের প্রতিটি আবাসিক হোটেল ও মেসে একাধিকবার নিরাপত্তা তল্লাশি চালানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বনানীতে যাবেন, সেখানেও একই ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে।’

‘রাসেল স্কয়ারের দিক দিয়ে জনসাধারণ প্রবেশ করবেন এবং পশ্চিম দিক দিয়ে বের হয়ে যাবেন। চারদিকে নিরাপত্তা বেস্টনির সঙ্গে সঙ্গে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যারিকেড থাকবে। নির্ধারিত রুটম্যাপ অনুসরণ করে এলে সবাই কম সময় শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে চলে যেতে পারবেন।’

ব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক না আনার অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘এর বাইরে রোড লাইনিং, রুফটপে পুলিশ সদস্য মোতায়েনসহ সাদা পোশাকে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সিটিটিসিও তাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন। মোবাইল পেট্রোল থাকবে, মানুষজন যাতে ৩২ নম্বরে ঢুকার আগে যথাযথ নিরাপত্তা তল্লাশি হয়, সেজন্য আর্চওয়ে, মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। অনুরোধ করবো ব্যাগ বা ব্যাকপ্যাক নিয়ে যেন কেউ না আসেন।’

‘আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ও সোয়াত টিম সবসময় প্রস্তুত থাকে। এখানে স্থাপিত কন্ট্রোলরুম থেকে সবকিছু মনিটরিং করা হবে। যাতে সার্বক্ষণিক আমরা দেখতে পারি এবং যখন যেখানে প্রয়োজন ব্যবস্থা নিতে পারি।’

৩২ নম্বরের চারপাশ ঘিরে নির্দিষ্ট বলয় তৈরি থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কোভিডের ঝুঁকি চলে গেছে বলতে পারি না। যারা এখানে আসবেন অনুরোধ করবো ন্যূনতম নিজের নিরাপত্তার কথা ভেবে যেন একটি মাস্ক পরে আসেন। কারণ এখানে লাখ লাখ লোক জমায়েত হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সব গোয়েন্দা সংস্থা থেকে সুনির্দিষ্ট কোনো হামলার তথ্য নেই। সারাদেশে পুলিশ আগস্ট মাসে সমস্ত দিক থেকে সতর্ক থাকে, কারণ এটি কলঙ্কিত মাস। এ মাসে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাসহ সারাদেশে ৫০০ স্পটে বোমা হামলা, প্রধানমন্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা করা হয়েছে। সবকিছু বিবেচনা নিয়ে যতোটা বেশি সম্ভব সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে।’