Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিত্যপণ্যের চড়া দামে নাকাল ক্রেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নিত্যপণ্য, কাঁচাবাজার, মাছ-মাংস, এমনকি মসলাজাত পণ্যের দামে দীর্ঘদিন ধরেই হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। বাজার অস্বস্তিতে ভোগান্তির অন্ত নেই। বিভিন্ন সময় নানা পণ্যের দাম কিছুটা ওঠানামা করলেও বাজার ছুটছে ঊর্ধ্বমুখী। সবজির বাজার দীর্ঘদিন ধরে চড়া, যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে লাগামছাড়া। এরই মাঝে নতুন করে বেড়েছে দাম। পেঁপে ও শসা ছাড়া কেজিতে ৮০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি। এছাড়া ঊর্ধ্বমুখী মাছ-মাংসের বাজারে দাম কমার কোনো লক্ষণও নেই। ফলে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে এখনো কোনো পণ্যের দাম কমেনি। বরং একটু একটু করে আরও বেড়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৮০ টাকার নিচে মিলছে না পেঁপে ছাড়া অন্য কোনো সবজি। অধিকাংশ বিক্রি হচ্ছে একশো টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে।

বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১৬০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১২০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকায়, ধুন্দল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৪০০ টাকা, কলার হালি ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ৪৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ছোট ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ৮০ টাকা, শিম ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, পাকা টমেটো ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা এবং গাজর ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে লাল শাকের আঁটি ৪০ টাকা, লাউ শাক ৬০ টাকা, মুলা শাক ২৫ টাকা, পালং শাক ৩০ টাকা, কলমি শাক ১৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, মোটামুটি সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। শীতকালে বাজারে সাধারণত লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, দেশি পেঁয়াজ, ভারতীয় পিঁয়াজ, বেগুন, মুলা, লালশাক, পালংশাক, পটোল, ঢেঁড়স, বরবটি, ঝিঙা, পেঁপে, আলু, করলা, কচু, শসাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরপুর থাকে। তবে এ বছর টানা বৃষ্টির কারণে সবজি উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। যে কারণে বাজারে সবজি তুলনামূলক কম। তাই সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরেই থাকছে শীতের সবজি।

এদিকে মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। এছাড়া সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি ৩৪০-৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। কিছু স্থানে ৭০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্থানভেদে কম-বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়। আর দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকা। বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজিপ্রতি এক হাজার ৫০-এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশ মাছ বিক্রি বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। এসব বাজারে চাষের শিং মাছের কেজি (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৬০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, মলা ৪৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ২০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকা এবং পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকা, রুপচাঁদা এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারের রিকশাচালক নান্টু মিয়া বলেন, দামের চোটে আমরা কিছুই কিনতে পারছি না। আগে মাছ-মাংস না খেতে পারলে শাকসবজি খেয়ে থাকতাম। এখন সেটাও সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এভাবে চললে গরিব মানুষ না খেয়ে মারা যাবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক চার লেন দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন 

নিত্যপণ্যের চড়া দামে নাকাল ক্রেতারা

প্রকাশের সময় : ১২:৫৭:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২০ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

নিত্যপণ্য, কাঁচাবাজার, মাছ-মাংস, এমনকি মসলাজাত পণ্যের দামে দীর্ঘদিন ধরেই হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। বাজার অস্বস্তিতে ভোগান্তির অন্ত নেই। বিভিন্ন সময় নানা পণ্যের দাম কিছুটা ওঠানামা করলেও বাজার ছুটছে ঊর্ধ্বমুখী। সবজির বাজার দীর্ঘদিন ধরে চড়া, যা দুই সপ্তাহের ব্যবধানে লাগামছাড়া। এরই মাঝে নতুন করে বেড়েছে দাম। পেঁপে ও শসা ছাড়া কেজিতে ৮০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি। এছাড়া ঊর্ধ্বমুখী মাছ-মাংসের বাজারে দাম কমার কোনো লক্ষণও নেই। ফলে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়েই চলেছে।

শুক্রবার (২০ অক্টোবর) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে এখনো কোনো পণ্যের দাম কমেনি। বরং একটু একটু করে আরও বেড়েছে। খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ৮০ টাকার নিচে মিলছে না পেঁপে ছাড়া অন্য কোনো সবজি। অধিকাংশ বিক্রি হচ্ছে একশো টাকা বা তার চেয়ে বেশি দরে।

বাজারে প্রতি কেজি বেগুন ৮০ থেকে ১৬০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১২০ টাকা, ঢেঁড়স ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বরবটি ১২০ টাকায়, ধুন্দল ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ৮০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৭০ থেকে ৯০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ২০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৪০০ টাকা, কলার হালি ৩০ টাকা, জালি কুমড়া ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি ৪৫ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ১০০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ টাকা, কাঁচা মরিচ ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ছোট বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ছোট ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, প্রতি কেজি মুলা ৮০ টাকা, শিম ২০০ থেকে ২৪০ টাকা, পাকা টমেটো ১০০ থেকে ১৪০ টাকা, কচুরমুখী ১০০ টাকা এবং গাজর ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে লাল শাকের আঁটি ৪০ টাকা, লাউ শাক ৬০ টাকা, মুলা শাক ২৫ টাকা, পালং শাক ৩০ টাকা, কলমি শাক ১৫ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, মোটামুটি সব ধরনের সবজির দামই বেড়েছে। শীতকালে বাজারে সাধারণত লাউ, মিষ্টি কুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, দেশি পেঁয়াজ, ভারতীয় পিঁয়াজ, বেগুন, মুলা, লালশাক, পালংশাক, পটোল, ঢেঁড়স, বরবটি, ঝিঙা, পেঁপে, আলু, করলা, কচু, শসাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজিতে ভরপুর থাকে। তবে এ বছর টানা বৃষ্টির কারণে সবজি উৎপাদন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। যে কারণে বাজারে সবজি তুলনামূলক কম। তাই সাধারণ ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতার বাইরেই থাকছে শীতের সবজি।

এদিকে মাংসের বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির দাম ১৯০ থেকে ২০০ টাকা কেজি। এছাড়া সোনালি জাতের মুরগির কেজি ৩০০ থেকে ৩৩০ টাকা। পাকিস্তানি মুরগি ৩৪০-৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দেশি মুরগি কিনতে কেজিতে খরচ হচ্ছে ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা। কিছু স্থানে ৭০০ টাকাও বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংস ৮০০ টাকা, খাসির মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। স্থানভেদে কম-বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।

লাল ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ টাকায়, হাঁসের ডিম ২২০ টাকায়। আর দেশি মুরগির ডিমের হালি ৮০ টাকা। বাজারে গরুর মাংস কেজিপ্রতি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস কেজিপ্রতি এক হাজার ৫০-এক হাজার ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ইলিশ মাছ বিক্রি বন্ধ রয়েছে। অন্যান্য মাছের দাম কিছুটা বেড়েছে। এসব বাজারে চাষের শিং মাছের কেজি (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা। প্রতি কেজি রুই মাছের দাম বেড়ে (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

প্রতি কেজি পাঙাশ ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, বোয়াল প্রতি কেজি ৬০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৮০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২৪০ থেকে ২৫০ টাকা, মলা ৪৫০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ২০০ টাকা, কাচকি মাছ ৬০০ টাকা এবং পাঁচমিশালি মাছ ২২০ টাকা, রুপচাঁদা এক হাজার ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মালিবাগ বাজারের রিকশাচালক নান্টু মিয়া বলেন, দামের চোটে আমরা কিছুই কিনতে পারছি না। আগে মাছ-মাংস না খেতে পারলে শাকসবজি খেয়ে থাকতাম। এখন সেটাও সামর্থ্যের বাইরে চলে যাচ্ছে। এভাবে চললে গরিব মানুষ না খেয়ে মারা যাবে।