স্পোর্টস ডেস্ক :
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শেষ বলে দারুণ এক জয় পেয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর আজ দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছিল দুই দল। অকল্যান্ডের ইডেন পার্কে আগে ব্যাট করতে নেমে ট্রাভিস হেডের ২২ বলে ৪৫ রানের ইনিংসে ১৯.৫ ওভারে ১৭৪ রানের সংগ্রহ পেয়েছিল অজিরা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে অ্যাডাম জাম্পার ঘূর্ণিতে ব্ল্যাকক্যাপসরা অল আউট হয়েছে ১৭ ওভারে ১০২ রান করেই। ফলে ৭২ রানের জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে মিচেল মার্শের দল।
১৭৫ রান তাড়া করতে নেমে দলীয় ৬ রানেই ভেঙে যায় নিউজিল্যান্ডের উদ্বোধনী জুটি। ইনিংসের ষষ্ঠ বলে ফিন অ্যালেনকে বোল্ড করেন জশ হ্যাজলউড। ৬ বলে ১ ছক্কায় ৬ রান করেন অ্যালেন। উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানোর তালে তালে রানের চাকাও ধীরগতির হয়ে যায় নিউজিল্যান্ডের। দলটির স্কোর মুহূর্তেই হয়ে যায় ৬.৩ ওভারে ৪ উইকেটে ২৯ রান। সাধারণত মিডল অর্ডারে ব্যাটিং করা মিচেল স্যান্টনার এই ম্যাচে ব্যাটিং করেন ৩ নম্বরে। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক করেন ১৩ বলে ৭ রান।
বিপদে পড়া নিউজিল্যান্ডের হাল ধরেন গ্লেন ফিলিপস ও জশ ক্লার্কসন। পঞ্চম উইকেটে ৩২ বলে ৪৫ রানের জুটি গড়েন তাঁরা। ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে ক্লার্কসনকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন অ্যাডাম জাম্পা। ১৩ বলে ১০ রান করেন ক্লার্কসন। এরপর জাম্পার বলে বোল্ড হয়ে নিজের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলেই ডাক মারেন অ্যাডাম মিলনে।
টানা দুই বলে দুই উইকেট নিয়েই জাম্পা শুধু ক্ষান্ত হননি। অস্ট্রেলিয়ার এই লেগস্পিনার এরপর নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ গ্লেন ফিলিপসের উইকেট। ১৪তম ওভারের তৃতীয় বলে জাম্পাকে তুলে মারতে যান ফিলিপস। লং অনে ক্যাচ ধরেন টিম ডেভিড। ৩৫ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪২ রান করেন ফিলিপস। নিঃসঙ্গ শেরপার মতো লড়ে যাওয়া ফিলিপসের ইনিংসটাই যেন কিউইদের ইনিংসের একমাত্র বিজ্ঞাপন।
ফিলিপসের আউটে কিউইদের স্কোর হয়ে যায় ১৩.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ৮৩ রান। এরপর শেষের দিকে ট্রেন্ট বোল্টের ১১ বলে ১৬ রানের ইনিংসটা শুধু ব্যবধানই কমাতে পেরেছে। ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলে বোল্টকে ফেরান জাম্পা। এরপর ১৭তম ওভারের শেষ বলে লকি ফার্গুসনকে যখন নাথান এলিস বোল্ড করেন, তখন কিউইদের স্কোর হয়ে যায় ১৭ ওভারে ৯ উইকেটে ১০২ রান। নিউজিল্যান্ডের উইকেটরক্ষক ব্যাটার চোটে পড়ায় ব্যাটিংয়ে নামতে পারেননি ডেভন কনওয়ে। এখানেই শেষ হয়ে যায় কিউইদের ইনিংস।
ম্যাচসেরা হয়েছেন প্যাট কামিন্স। ২২ বলে ৫ চারে ২৮ রান করেন কামিন্স। বোলিংয়ে ৩ ওভারে ১৯ রানে নেন ১ উইকেট।
এর আগে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিউজিল্যান্ড। প্রথমে ব্যাটিং পেয়ে অস্ট্রেলিয়া ঝোড়ো শুরু করেছিল। ৮.৫ ওভারে ৩ উইকেটে ১০৪ রান করে অজিরা। এরপর থেকেই অস্ট্রেলিয়ার রানরেট যেমন কমতে থাকে, তেমনি উইকেটও পড়তে থাকে নিয়মিত গতিতে। ৭০ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে অস্ট্রেলিয়া ১৯.৫ ওভারে ১৭৪ রানে অলআউট হয়ে যায়। ইনিংস সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন ট্রাভিস হেড। ২২ বলের ইনিংসে ২ চার ও ৫ ছক্কা মেরেছেন হেড। নিউজিল্যান্ডের বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন লকি ফার্গুসন। ৩.৫ ওভার বোলিং করে ১২ রান খরচ করেন। ২টি করে উইকেট নিয়েছেন স্যান্টনার, অ্যাডাম মিলনে ও বেন সিয়ার্স।
এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাটিং করা অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা ছিল দাপুটে। নবম ওভারে গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল বিদায়ের পর রান চাকা মন্থর হয়ে পড়ে। রানের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্রমশ উইকেট পড়তে থাকে। পরের ১২ ওভারে ওঠে ৭১ রান। ১ বল বাকি থাকতেই অলআউটও হয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া।
এদিন ওপেনিংয়ে ওয়ার্নারের জায়গায় নামেন স্টিভেন স্মিথ। সুযোগ সদ্ব্যব্যবহার করতে পারেননি অজি ব্যাটার। ৭ বলে করেন ১১ রান। স্মিথ ব্যর্থ হলেও ট্রাভিস হেড রুদ্ধ মূর্তিমান রুপ ধারণ করেন। ২২ বলে ৪৫ রানের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে উপহার দেন। এরপর নামেন গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল। তিনি খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। মাত্র একটি ছক্কা মারেন। তাতেই খেরোখাতায় রেকর্ড লেখান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১২৬ ছক্কা মেরে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটারদের মধ্যে ছক্কায় সবার ওপরে ম্যাক্সি। ম্যাক্সওয়েল ফিরে গেলে রান ভাটা পড়ে। শেষের ১২ ওভারে কেবল ৭১ রান করতে পারে দল। মাত্র ১২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ফার্গুসন।