Dhaka বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিউজিল্যান্ডকে হতাশায় ভাসিয়ে বৃষ্টি আইনে ভাগ্য ফিরল পাকিস্তানের

  • স্পোর্টস ডেস্ক
  • প্রকাশের সময় : ০৮:৪৩:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩
  • ২০০ জন দেখেছেন

স্পোর্টস ডেস্ক : 

পাকিস্তানের জন্য জয়ের লক্ষ্যটা ছিল বেশ বড়। ৫০ ওভারে ৪০২ রান। কথায় আছে ভাগ্য নাকি সাহসীর সঙ্গে থাকতেই পছন্দ করে। সেটাই আরো একবার সত্যি প্রমাণ করল পাকিস্তান। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ভেঙে পরেনি, বরং উড়ন্ত শুরু করেন বাবর আজম-ফখর জামান। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের মধ্যেই হানা দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকায় যা একপর্যায়ে নেমে আসে ৪১ ওভারে ৩৪১ রানে। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার বৃষ্টিই ঠিক করে দিয়েছে ম্যাচের গতিপথ। নিউজিল্যান্ডকে বৃষ্টি আইনে ২১ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে বাবর আজমের দল।

এ জয়ে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের আশা বেঁচে রইল পাকিস্তানের। হেরে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের সম্ভাবনাও অবশ্য মিলিয়ে যায়নি। দুই দলেরই ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট। রান রেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট তালিকায় নিউজিল্যান্ড চারে, পাকিস্তান পাঁচে। সমান পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তান নেমে গেছে ছয়ে।

বৃষ্টি-বাগড়ার আগপর্যন্ত পাকিস্তানের সামনে ছিল রেকর্ড রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। বিশ্বকাপে সাড়ে তিন শর বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই, কিন্তু ওভারপ্রতি ৮ এর বেশি রান তুলে সেটিই করতে হতো বাবরদের। আর এই ম্যাচ হারলেই লিগ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেত।

কিউইদের ৪০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন আবদুল্লাহ শফিক ও ফখর জামান। তবে শুরুটা ভালো হয়নি ম্যান ইন গ্রিনদের। রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন আবদুল্লাহ শফিক। ৪ রান করেন তিনি। তবে এই ধাক্কার পর আর পেছনে দিকে তাকায়নি বাবরা। ফখর জামান ও বাবর আজম রান তুলতে থাকেন দুরন্ত গতিতে। চিন্নাস্বামীর একপ্রান্তে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে কিউই বোলারদের তুলোধুনো করে মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করেছেন ফখর। অন্যপ্রান্তে বাবরও দেন যোগ্য সঙ্গ। তিনি ৫২ বলে পূরণ করেন অর্ধশতক।

তাদের ঝড়ো ইনিংসের মধ্যে ব্যাঙ্গালুরুর আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে। পরে বৃষ্টির কারণে লক্ষ্য কমে দাঁড়ায়। প্রথমবার বৃষ্টি শেষে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ৩৪২ রান। সেটিও বেশ ভালোভাবেই পার করেছে আনপ্রেডিক্টেবলরা। তবে দ্বিতীয়বার বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধের পর আর খেলা হয়নি। ফলে ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি অনুযায়ী ২৫.৩ ওভারে পাকিস্তানকে ১৭৯ করলেই চলতো। তবে তারা ২১ রানে এগিয়ে ছিল। শেষপর্যন্ত আর খেলা না হওয়ায় বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ২১ রানের অবিশ্বাস্য এক জয়ের দেখা পেয়েছে পাকিস্তান।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে নিউজিল্যান্ড। পাওয়ারপ্লে’তে কোন উইকেট না হারিয়ে ৬৬ রান তোলে তারা। তবে ইনিংসের এগারোতম ওভারে খেই হারান ডেভন কনওয়ে। ৩৯ বলে ৩৫ রান করে হাসান আলীর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

তবে এরপরই পাল্টায় ম্যাচের দৃশ্যপট। ইনজুরি কাটিয়ে এ ম্যাচের একাদশে ফেরেন কিউই অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। রীবন্দ্র-কেইন জুটিতেই মূলত পাকিস্তানের বিপক্ষে রান উৎসবে মাতে নিউজিল্যান্ড। ১৪২ বলে এই জুটিতে আসে ১৮০ রান। উইলিয়ামসনের সামনে সুযোগ ছিল সেঞ্চুরির মাধ্যমে ক্যামব্যাককে রাঙানো। তবে ব্যক্তিগত ৯৫ রানে পাক অলরাউন্ডার ইফতিখারের বলে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কিউই অধিনায়ক। এই রান তুলতে তিনি খেলেন মাত্র ৭৯ বল। ১০টি চার ও ২ ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।

উইলিয়ামসন ফিরে গেলেও তার আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন রাচীন রবীন্দ্র। মাত্র ৮৮ বলেই তিনি তিন অঙ্কে পৌঁছে যান। শেষ পর্যন্ত ৯৪ বলে ১০৮ রান করে ওয়াসিম জুনিয়রের শিকার হয়ে ফেরেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই কিউই ব্যাটার। ইনিংসটি খেলার পথে তিনি ১৫টি চার এবং একটি ছক্কা মারেন।

এই দুই ব্যাটার ফেরার পর কিউই অন্য ব্যাটাররা বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে পরের ব্যাটারদের মাঝারি ইনিংসে ভর করে কিউইরা থামে ৪০১ রানে। যেটি এই আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

মিচেল ২৯ রান, চাপম্যান ৩৯ এবং ফিলিপস খেলেন ৪১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। মিচেল স্যান্টনার অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে। এই ম্যাচের খরুচে ছিলেন পাকিস্তানি বোলাররা। শাহিন শাহ আফ্রিদি ১০ ওভারে ৯০ রান খরচ করলেও কোনো উইকেটের দেখা পাননি। হারিস রউফ ৮৫ এবং হাসান আলী ৮২ রান খরচায় একটি করে উইকেট শিকার করেন। তবে ওয়াসিম কিছুটা সফল ছিলেন। এই পাকিস্তানি পেসার ১০ ওভারে ৬০ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নিউজিল্যান্ডকে হতাশায় ভাসিয়ে বৃষ্টি আইনে ভাগ্য ফিরল পাকিস্তানের

প্রকাশের সময় : ০৮:৪৩:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৪ নভেম্বর ২০২৩

স্পোর্টস ডেস্ক : 

পাকিস্তানের জন্য জয়ের লক্ষ্যটা ছিল বেশ বড়। ৫০ ওভারে ৪০২ রান। কথায় আছে ভাগ্য নাকি সাহসীর সঙ্গে থাকতেই পছন্দ করে। সেটাই আরো একবার সত্যি প্রমাণ করল পাকিস্তান। পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে ভেঙে পরেনি, বরং উড়ন্ত শুরু করেন বাবর আজম-ফখর জামান। তাদের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের মধ্যেই হানা দেয় বৃষ্টি। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকায় যা একপর্যায়ে নেমে আসে ৪১ ওভারে ৩৪১ রানে। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় দফার বৃষ্টিই ঠিক করে দিয়েছে ম্যাচের গতিপথ। নিউজিল্যান্ডকে বৃষ্টি আইনে ২১ রানে হারিয়ে টুর্নামেন্টে চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে বাবর আজমের দল।

এ জয়ে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালের আশা বেঁচে রইল পাকিস্তানের। হেরে যাওয়া নিউজিল্যান্ডের সম্ভাবনাও অবশ্য মিলিয়ে যায়নি। দুই দলেরই ৮ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট। রান রেটে এগিয়ে থাকায় পয়েন্ট তালিকায় নিউজিল্যান্ড চারে, পাকিস্তান পাঁচে। সমান পয়েন্ট নিয়ে আফগানিস্তান নেমে গেছে ছয়ে।

বৃষ্টি-বাগড়ার আগপর্যন্ত পাকিস্তানের সামনে ছিল রেকর্ড রান তাড়ার চ্যালেঞ্জ। বিশ্বকাপে সাড়ে তিন শর বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড নেই, কিন্তু ওভারপ্রতি ৮ এর বেশি রান তুলে সেটিই করতে হতো বাবরদের। আর এই ম্যাচ হারলেই লিগ পর্ব থেকেই বিদায় নিশ্চিত হয়ে যেত।

কিউইদের ৪০২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের হয়ে ইনিংস শুরু করতে আসেন আবদুল্লাহ শফিক ও ফখর জামান। তবে শুরুটা ভালো হয়নি ম্যান ইন গ্রিনদের। রান তাড়া করতে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই সাজঘরে ফেরেন আবদুল্লাহ শফিক। ৪ রান করেন তিনি। তবে এই ধাক্কার পর আর পেছনে দিকে তাকায়নি বাবরা। ফখর জামান ও বাবর আজম রান তুলতে থাকেন দুরন্ত গতিতে। চিন্নাস্বামীর একপ্রান্তে ব্যাট হাতে ঝড় তুলে কিউই বোলারদের তুলোধুনো করে মাত্র ৬৩ বলে সেঞ্চুরি করেছেন ফখর। অন্যপ্রান্তে বাবরও দেন যোগ্য সঙ্গ। তিনি ৫২ বলে পূরণ করেন অর্ধশতক।

তাদের ঝড়ো ইনিংসের মধ্যে ব্যাঙ্গালুরুর আকাশ ভেঙে বৃষ্টি নামে। পরে বৃষ্টির কারণে লক্ষ্য কমে দাঁড়ায়। প্রথমবার বৃষ্টি শেষে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১ ওভারে ৩৪২ রান। সেটিও বেশ ভালোভাবেই পার করেছে আনপ্রেডিক্টেবলরা। তবে দ্বিতীয়বার বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধের পর আর খেলা হয়নি। ফলে ডার্ক ওয়ার্থ লুইস পদ্ধতি অনুযায়ী ২৫.৩ ওভারে পাকিস্তানকে ১৭৯ করলেই চলতো। তবে তারা ২১ রানে এগিয়ে ছিল। শেষপর্যন্ত আর খেলা না হওয়ায় বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় ২১ রানের অবিশ্বাস্য এক জয়ের দেখা পেয়েছে পাকিস্তান।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দারুণ শুরু করে নিউজিল্যান্ড। পাওয়ারপ্লে’তে কোন উইকেট না হারিয়ে ৬৬ রান তোলে তারা। তবে ইনিংসের এগারোতম ওভারে খেই হারান ডেভন কনওয়ে। ৩৯ বলে ৩৫ রান করে হাসান আলীর বলে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।

তবে এরপরই পাল্টায় ম্যাচের দৃশ্যপট। ইনজুরি কাটিয়ে এ ম্যাচের একাদশে ফেরেন কিউই অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসন। রীবন্দ্র-কেইন জুটিতেই মূলত পাকিস্তানের বিপক্ষে রান উৎসবে মাতে নিউজিল্যান্ড। ১৪২ বলে এই জুটিতে আসে ১৮০ রান। উইলিয়ামসনের সামনে সুযোগ ছিল সেঞ্চুরির মাধ্যমে ক্যামব্যাককে রাঙানো। তবে ব্যক্তিগত ৯৫ রানে পাক অলরাউন্ডার ইফতিখারের বলে ফখর জামানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন কিউই অধিনায়ক। এই রান তুলতে তিনি খেলেন মাত্র ৭৯ বল। ১০টি চার ও ২ ছয়ে সাজানো ছিল তার ইনিংসটি।

উইলিয়ামসন ফিরে গেলেও তার আগেই সেঞ্চুরি তুলে নেন রাচীন রবীন্দ্র। মাত্র ৮৮ বলেই তিনি তিন অঙ্কে পৌঁছে যান। শেষ পর্যন্ত ৯৪ বলে ১০৮ রান করে ওয়াসিম জুনিয়রের শিকার হয়ে ফেরেন দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই কিউই ব্যাটার। ইনিংসটি খেলার পথে তিনি ১৫টি চার এবং একটি ছক্কা মারেন।

এই দুই ব্যাটার ফেরার পর কিউই অন্য ব্যাটাররা বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। তবে পরের ব্যাটারদের মাঝারি ইনিংসে ভর করে কিউইরা থামে ৪০১ রানে। যেটি এই আসরে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।

মিচেল ২৯ রান, চাপম্যান ৩৯ এবং ফিলিপস খেলেন ৪১ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। মিচেল স্যান্টনার অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে। এই ম্যাচের খরুচে ছিলেন পাকিস্তানি বোলাররা। শাহিন শাহ আফ্রিদি ১০ ওভারে ৯০ রান খরচ করলেও কোনো উইকেটের দেখা পাননি। হারিস রউফ ৮৫ এবং হাসান আলী ৮২ রান খরচায় একটি করে উইকেট শিকার করেন। তবে ওয়াসিম কিছুটা সফল ছিলেন। এই পাকিস্তানি পেসার ১০ ওভারে ৬০ রানের বিনিময়ে নেন ৩ উইকেট।