আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উনকে অত্যন্ত কঠোর শাসক হিসেবে বিবেচনা করা হলেও একটি ভিডিও সামনে এসেছে, যেটিতে একেবারে ভিন্নরূপে ধরা দিয়েছেন তিনি। সেখানে কিমকে কাঁদতে দেখা গেছে।আবেগী অবস্থায় দেশের নারীদের আরও সন্তান নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার প্রধান।
স্কাই নিউজ ও ইয়াহু নিউজের খবরে বলা হয়েছে, কিম জং উন উত্তর কোরিয়ার মহিলাদের কাছে আরও সন্তান নেওয়ার আবেদন জানানোর সময় কেঁদে ফেলেন। উত্তর কোরিয়ায় জন্মহার ক্রমেই কমে আসছে। এমন অবস্থায় আরও বেশি সন্তান গ্রহণের আবেদন করেছে কিম।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করা ভিডিওতে রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে নারীদের একটি অনুষ্ঠানে কিম জং উনকে কাঁদতে ও রুমাল দিয়ে চোখ মুছতে দেখা যায়।
খবরে বলা হয়েছে, অনুষ্ঠান চলাকালীন কিম বলেছিলেন, ‘জন্মহারের পতন বন্ধ করা এবং শিশুদের ভাল যত্ন নেওয়া এবং তাদের ভাল শিক্ষা দেওয়া পারিবারিক বিষয়, যা আমাদের সমাধান করা উচিত।’
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বলছে যে, উত্তর কোরিয়ার জন্মহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে। ২০২৩ সাল নাগাদ উত্তর কোরিয়ায় মা প্রতি সন্তানের গড় সংখ্যা ছিল ১.৮। উত্তর কোরিয়ার মতো তার প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়াতেও জন্মহার ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রজনন হার বিশ্বে সবচেয়ে কম। জন্মহার হ্রাসের প্রধান কারণ হল উচ্চ বিদ্যালয়ের ফি, শিশুদের যত্ন নিতে অক্ষমতা এবং পুরুষ কেন্দ্রিক কর্পোরেট সমাজ।
১৯৭০-১৯৮০ এর দশকে উত্তর কোরিয়া যুদ্ধের পরে জনসংখ্যা বৃদ্ধির গতি কমানোর জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। কিন্তু ১৯৯০ এর দশকের মাঝামাঝি একটি দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, যাতে লক্ষাধিক মানুষ মারা যায়। এ কারণে উত্তর কোরিয়ার জনসংখ্যা কমতে শুরু করে, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
উত্তর কোরিয়া জন্মহার বাড়ানোর জন্য বেশ কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে। তিন বা ততোধিক সন্তানের বাবা-মাকে বিভিন্ন সুবিধা প্রদান করা হয়। এই সুবিধার অধীনে, শিশুদের জন্য বাসস্থান, ভর্তুকি, বিনামূল্যে খাবার, ওষুধ, গৃহস্থালী সামগ্রী এবং শিক্ষাগত সুবিধাও রয়েছে।
হুন্ডাই ইনস্টিটিউটের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, উত্তর কোরিয়ার জনসংখ্যা ২০৩৪ সালের মধ্যে আরও হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি অনুমান করা হয় যে ২০৭০ সালের মধ্যে উত্তর কোরিয়ার জনসংখ্যা ২৩.৭ মিলিয়নে চলে আসবে। ২০২১ সালের তথ্য অনুসারে, উত্তর কোরিয়ার জনসংখ্যা ২৬ মিলিয়ন।