নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি : 

নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে হামলা চালিয়েছে একদল উশৃঙ্খল যুবক। ক্রিকেটের ব্যাট হাতে প্রথমে যুবকরা ট্রেনে ভাঙচুর চালায়। এরপর হামলার বিষয় জানতে চাইলে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে এলোপাতাড়ি ট্রেনে ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে আঘাত করতে থাকে। এ সময় ট্রেনের জানালা লাগিয়ে দিলে ওই যুবকরা পাথর নিক্ষেপ করে। এতে ট্রেনের জানালার গ্লাস ভেঙে যায় এবং দেশের প্রথম নারী ট্রেন চালক সালমা খাতুনসহ ৩ জন আহত হন।

শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকার গেন্ডারিয়া স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।

এদিন রাতেই সালমা খাতুন ঘটনার বিস্তারিত সামাজিক মাধ্যমে লেখেন। তার টাইমলাইন থেকে লেখাটি ‘রেল তথ্য নারায়ণগঞ্জ’ নামে একটি আইডি কপি করে ফেসবুকে পোস্ট করেন।

সেই পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, এটাই হচ্ছে আমাদের চাকরির ধরন। মেয়ে মানুষ হলে তো আরও রিস্কি। আজ ৩/১০/২৫ ইং ডিউটিরত অবস্থায় যখন নারায়ণগঞ্জ স্টেশন থেকে ট্রেন চালিয়ে এসে গেন্ডারিয়া স্টেশনে ট্রেন দাঁড়াই। নিয়মমতো লাইন ক্লিয়ার পাওয়ার পর যখন ঢাকার উদ্দেশ্যে ট্রেনটা স্টার্ট করি। তখনই কয়েকটা ছেলে এসে ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে জানালায় বাড়ি দিতে থাকে। তখনই আমার সহকর্মী এবং আরেকজন সহকর্মী ইঞ্জিনের ভিতরে ছিল। ওরা দুজন যখন জানালা দিয়ে বলতে যায় কি হয়েছে আপনাদের তখনই ওদেরকে ক্রিকেটের ব্যাট দিয়ে মারতে উদ্যত হয়। ওরা তাড়াতাড়ি জানালাটা আটকে দেয়। সাথে সাথে ছেলেগুলা পাথর মারতে থাকে। জানালার ভেঙ্গে কাচগুলো আমাদের সবার চোখে মুখে লেগে যায়। আমার সহকর্মীর হাত কেটে যায় এবং ওর পেটে গিয়ে পাথরটা লাগে। পরবর্তীতে আমি জানার চেষ্টা করি কি কারণে আমাদেরকে পাথর ছুড়েছে। পরে জানতে পারি আমার ইঞ্জিনের উপর থেকে একজন ছিনতাইকারী নেমে একটা ছেলের নিকট থেকে মোবাইল নিয়ে আবার ইঞ্জিনের উপরে উঠে যায়। আমাদেরকে মারার কারণ ইঞ্জিনের উপরে কেন ছিনতাইকারী? এই হচ্ছে আমার এবং আমাদের দেশের অবস্থা।

এ বিষয়ে গেন্ডারিয়া রেলস্টেশনের মাস্টার আলমগীর হোসেন জানান, ঘটনাটি লোকমুখে শুনছি, কিন্তু ট্রেন চালক আমাদের কাছে কোন অভিযোগ করেননি।

নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মিজানুর রহমান জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জানতে পেরেছি নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী ট্রেনে কিছু উচ্ছৃঙ্খল যুবক পাথর নিক্ষেপ করেছে। সেই ট্রেনের চালক ছিলেন সালমা খাতুন। কিন্তু এ বিষয়ে কেউ কমলাপুর রেলওয়ে থানায় অভিযোগ করেনি। তারপরও কমলাপুর থানা পুলিশের সহযোগীতায় উশৃঙ্খল যুবকদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।