নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জে আড়াইহাজারে বিএনপি-জামায়াতের ডাকা অবরোধের প্রথমদিনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষের পুলিশ সদস্যসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। এদের মধ্যে দুইজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকালে আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও পুলিশের মধ্যে ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
গুলির আওয়াজ ও ইট পাটকেল ছুড়াছুড়িতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকায়। এই সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় তিন পুলিশ সদস্যসহ অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। বর্তমানে এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পাঁচরুখী এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে মহাসড়ক অবরোধ করে মিছিল করে। এ সময় বিএনপির সন্ত্রাস নৈরাজ্যের প্রতিবাদে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মিছিল বের করলে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। এ সময় একটি বিআরটিসি বাসসহ দুটি বাস ভাঙচুর করে অবরোধকারীরা।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমির খসরু বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা সড়কে আগুন জ্বালিয়ে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে তারা পুলিশের ওপরও হামলা চালায়। এ সময় দুই পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। এছাড়া আরও পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে জখম করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বিএনপির তিনজনকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, অবরোধের সমর্থনে বিএনপির নেতাকর্মীরা আগুন দিয়ে রাস্তা অবরোধ করলে পুলিশ তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। বিএনপির নেতাকর্মীরাও পুলিশের ওপর পাল্টা ইটপাটকেল ছুড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়াশেল রাবার বুলেট ছুড়ে। পরে তাদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাও যুক্ত হয়। শুরু হয় ত্রিমুখী সংঘর্ষ। প্রায় কয়েকঘণ্টা ধরে এই সংঘর্ষ চলে।
নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (সি সার্কেল) আবির হোসেন বলেন, সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলায় আমাদের অনেক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে। তবুও আমরা ৭২ ঘণ্টা রাজপথে থেকে অবরোধ সফল করবো।
নারায়ণগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) চাইলাউ মারমা বলেন, সকালে পাঁচরুখী এলাকায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন পুলিশ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া অবরোধকারীরা বেশ কয়েকটি যাত্রীবাহী বাস ভাঙচুর করেছে। এখন পরিস্থিতি অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে।