নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি :
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত হকার জুবায়ের হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড ও দুজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আক্তারুজ্জামান ভূঁইয়া এ রায় দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ বরুমদী এলাকার আব্দুস সামাদ মুন্সীর ছেলে মো ইকবাল হোসেন (৩৭), বন্দরের নূর ইসলামের ছেলে মো. স্বপন (৪৯), কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকার মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে সায়মন ওরফে ইউনুস মিয়া (২৬) ও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ এলাকার মো. মুহিতুর রহমানের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন সানি (২৭)।
সেই সঙ্গে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুমিল্লার মুরাদনগর এলাকার মো. কবির হোসেনের ছেলে মো. হাছান আল মামুন (২২) ও কুমিল্লার বাঙ্গারা বাজার এলাকার মো. রাসেল হোসেন (২৭)। তাদের মধ্যে রাসেল পলাতক রয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নারায়ণগঞ্জের আলোচিত হকার জুবায়ের হত্যা মামলায় চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অপর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
মামলার বাদী মুক্তা বেগম বলেন, আমার দুই মেয়ে এক ছেলে ছিল। ছেলেটি মাদরাসায় পড়তো। সংসারের আর্থিক সহযোগিতার জন্য আমার একমাত্র ছেলে জুবায়েরকে ফুটপাতে জুতার দোকানে কাজে দেই। সেই সন্তানকে নির্মমভাবে পেটে ছুরিকাঘাত করে, হাতের কব্জি কেটে ও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আদালতের এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট।
প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ১৪ অক্টোবর নারায়ণগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে বলাকা পেট্রল পাম্পের সামনে ফুটপাতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে হকার জুবায়েরকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। জুবায়ের ফতুল্লার উত্তর মাসদাইরের আমজাদ হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় তার মা মুক্তা বাদী হয়ে ইকবালসহ আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করে।
মামলা সূত্রে জানা যায়, শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে সাধু পৌলের গির্জার সামনে ফুটপাতে সাদেকের জুতার দোকানে চাকরি করতেন জুবায়ের। ফুটপাতে দোকান বসানো নিয়ে হকার স্বপনের সঙ্গে জুবায়েরের বাগবিতণ্ডা হয় এবং একপর্যায়ে স্বপন তাকে বলাকা পেট্রল পাম্পের সামনে নিয়ে চড়-থাপ্পড় মারতে থাকে। পরবর্তী সময়ে ভুক্তভোগী এর প্রতিবাদ করলে ইকবাল পাশের মহসিনের দোকান থেকে ধারালো চাকু এনে জুবায়েরকে কুপিয়ে জখম করে এবং অন্যান্য আসামিরাও তাকে মারধর করে পালিয়ে যায়। পরে জুবায়েরকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।