Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নরসিংদীতে জোড়া হত্যা মামলায় জেলা ছাত্রদল সভাপতি গ্রেফতার

নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি : 

নরসিংদীতে জোড়া খুনের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে নরসিংদী জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র সরকার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা সাদেকুর রহমানসহ জোড়া হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। ঢাকার শাহবাগ এলাকায় অবস্থান করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে থেকে নাহিদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে নিয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে নরসিংদী মডেল থানাধীন চিনিশপুর সাকিনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের বাড়ির (নরসিংদী জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়) দ্বিতীয় তলায় লুকানো অবস্থায় একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। সিদ্দিকুর রহমান নাহিদের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ছাত্র ঐক্যের কনভেনশন চলাকালে নাহিদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আটক করে। পরে তাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ওই সময় তার সঙ্গে ছাত্রদলের দুই কর্মী ছিলেন। তাদেরকেও নিয়ে আসে। পরে তাদেরকে মাধবদী এসে ছেড়ে দেয়। এর আগে বিএনপির আন্দোলন ঠেকাতে ২০১৭ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নাহিদকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ৯ মাস গুম থাকার পর অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র সরকার বলেন, জোড়া হত্যা মামলায় পলাতক আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ। গোপন সংবাদে ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেখানো তথ্যের ভিত্তিতে খায়রুল কবির খোকনের বাড়ির ২য় তলার উত্তর পাশের বাথরুমের ফলস ছাদের পশ্চিম পাশে লুকানো অবস্থায় একটি বিদেশি পিস্তল ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে।

ছাত্রদল সভাপতিকে আটকের পর পর তৎক্ষনিক গ্রেফতারের বিষয়টি প্রকাশ করেনি পুলিশ।

এদিকে, ছাত্রদল সভাপতিকে গ্রেফতারের পর তাৎক্ষণিক বিষয়টি প্রকাশ করেনি পুলিশ। তাই এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিরোধীদলীয় কোনো নেতাকর্মীকে আটক এবং হদিস না দেওয়াটা ভয়াবহ অমানবিক ও দস্যুবৃত্তিমূলক কাজ। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় থেকে এ ধরনের ঘটনাকে একটি সংস্কৃতিতে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রের মদদে এখনো বিরোধীদল নিধনে বেপরোয়া কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত ও বহিষ্কৃত নেতারা। চলতি বছরের ২৬ মে ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা সাদেকুর রহমান ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে তাদের শত শত সমর্থক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। ওই সময় চিনিশপুর বিএনপি অস্থায়ী কার্যালয়ের অদূরে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে আহত হন সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল ইসলাম। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রথমে সাদেকুর রহমান ও পরে আশাফুল ইসলাম মারা যান। ওই ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, তার স্ত্রী ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ বিএনপির ৩০ নেতার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

নরসিংদীতে জোড়া হত্যা মামলায় জেলা ছাত্রদল সভাপতি গ্রেফতার

প্রকাশের সময় : ০৭:০৭:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৩

নরসিংদী জেলা প্রতিনিধি : 

নরসিংদীতে জোড়া খুনের মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদকে গ্রেফতার করেছে নরসিংদী জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে তার দেওয়া তথ্যমতে নরসিংদী জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয় থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।

শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোকন চন্দ্র সরকার গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গোয়েন্দা পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা সাদেকুর রহমানসহ জোড়া হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছিলেন। ঢাকার শাহবাগ এলাকায় অবস্থান করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র সরকারের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) বিকেলে ডিবি পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সামনে থেকে নাহিদকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে নিয়ে অভিযানে নামে পুলিশ। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে নরসিংদী মডেল থানাধীন চিনিশপুর সাকিনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকনের বাড়ির (নরসিংদী জেলা বিএনপির অস্থায়ী কার্যালয়) দ্বিতীয় তলায় লুকানো অবস্থায় একটি বিদেশি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। সিদ্দিকুর রহমান নাহিদের বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) মিলনায়তনে ছাত্র ঐক্যের কনভেনশন চলাকালে নাহিদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে আটক করে। পরে তাকে চোখ বেঁধে গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। ওই সময় তার সঙ্গে ছাত্রদলের দুই কর্মী ছিলেন। তাদেরকেও নিয়ে আসে। পরে তাদেরকে মাধবদী এসে ছেড়ে দেয়। এর আগে বিএনপির আন্দোলন ঠেকাতে ২০১৭ সালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে নাহিদকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। পরে ৯ মাস গুম থাকার পর অস্ত্র উদ্ধার দেখিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ওসি খোকন চন্দ্র সরকার বলেন, জোড়া হত্যা মামলায় পলাতক আসামি ছিলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান নাহিদ। গোপন সংবাদে ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার দেখানো তথ্যের ভিত্তিতে খায়রুল কবির খোকনের বাড়ির ২য় তলার উত্তর পাশের বাথরুমের ফলস ছাদের পশ্চিম পাশে লুকানো অবস্থায় একটি বিদেশি পিস্তল ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার হয়। তার বিরুদ্ধে ১৬টি মামলা রয়েছে।

ছাত্রদল সভাপতিকে আটকের পর পর তৎক্ষনিক গ্রেফতারের বিষয়টি প্রকাশ করেনি পুলিশ।

এদিকে, ছাত্রদল সভাপতিকে গ্রেফতারের পর তাৎক্ষণিক বিষয়টি প্রকাশ করেনি পুলিশ। তাই এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এক বিবৃতিতে মির্জা ফখরুল বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক বিরোধীদলীয় কোনো নেতাকর্মীকে আটক এবং হদিস না দেওয়াটা ভয়াবহ অমানবিক ও দস্যুবৃত্তিমূলক কাজ। আওয়ামী শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতায় থেকে এ ধরনের ঘটনাকে একটি সংস্কৃতিতে পরিণত করেছে। রাষ্ট্রের মদদে এখনো বিরোধীদল নিধনে বেপরোয়া কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, নরসিংদী জেলা ছাত্রদলের নতুন কমিটি ঘোষণার পর থেকে কমিটি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামে ছাত্রদলের পদবঞ্চিত ও বহিষ্কৃত নেতারা। চলতি বছরের ২৬ মে ছাত্রদলের বহিষ্কৃত নেতা সাদেকুর রহমান ও মাইনুদ্দিনের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল বহর নিয়ে তাদের শত শত সমর্থক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে। ওই সময় চিনিশপুর বিএনপি অস্থায়ী কার্যালয়ের অদূরে দুর্বৃত্তদের ছোড়া গুলিতে আহত হন সাদেকুর রহমান ও আশরাফুল ইসলাম। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর প্রথমে সাদেকুর রহমান ও পরে আশাফুল ইসলাম মারা যান। ওই ঘটনায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, তার স্ত্রী ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ বিএনপির ৩০ নেতার বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা দায়ের করা হয়।