Dhaka শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার পদত্যাগের চূড়ান্ত আন্দোলনের এক দফা দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ আজ। মহাসমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই দলীয় কার্যালয়ের সামনে খণ্ড খণ্ড মিছিলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেনে নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টনে এখন যারা আসছেন তাদের বেশিরভাগই ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মী। শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে শুরু হবে সমাবেশ। সকাল ৭টা থেকে দলটির নেতা-কর্মীরা ভিড় করতে থাকেন।

মহাসমাবেশ উপলক্ষে রাতেই মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। সে সময়ও বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা যায়। ভোর থেকেও খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন নেতাকর্মীরা।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফারহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৫ বছর ধরে নির্যাতিত হচ্ছি। জনগণকে মুক্তি দিতে, জনগণের গণঅধিকার, ভোটের দাবি নিয়ে রাস্তায় এসেছি। আমাদের এক দফা, এক দাবি; শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগ ঘটিয়ে বাড়ি ফিরবো। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধ করছি, প্রয়োজনে অবস্থান ধর্মঘটের কর্মসূচি দেন। আমরা রাস্তায় থাকব।

নওগাঁ সদর থানার কিলপপুর ইউনিয়নের কৃষকদলের সভাপতি কৃষক গোলাম মোস্তফা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে দেশের কৃষকরা ভালো নেই। তাই অনেকের অনেক দাবি থাকলেও আমার দাবি একটাই- সরকারের পদত্যাগ। বাড়ি থেকে কাফনের কাপড় পরে এসেছি। রাজপথে আমার মৃত্যু হলে কোনো আফসোস নেই। আমরা গরীব মানুষ, এই সরকারের অধীনে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকা অনেকটা মৃতের মতোই। আমরা সরকারের পদত্যাগ চাই, প্রয়োজনে আমার মৃত্যু হোক।

তিনি বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ১০ টাকার জিনিস এই সরকারের আমলে ১০০ টাকা, ২০ টাকার জিনিস ২০০ টাকা হয়ে গেছে। মানুষ চলতে পারে না। দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। এই সরকারকে আমরা আর দেখতে চাই না।

গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, আমাদের ভোটের কোনো অধিকার নেই। পুনঃনির্বাচনে আমরা ভোট দিতে পারি না। কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই ভোট শেষ হয়ে যায়। আমরা চাই সুষ্ঠু একটা ভোটের আয়োজন করা হোক, তখন যদি আবার হাসিনা ক্ষমতায় আসে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

শেরপুর জেলা যুবদল নেতা সাজ্জাদুল আলম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এই দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব।

ময়মনসিংহ থেকে আসা বিএনপি কর্মী মো. আরিফ বলেন, গতকাল রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। আসতে কষ্ট হলেও মহাসমাবেশে এসে খুবই ভালো লাগছে। গতকাল রাতেই বের হয়ে এসেছি, সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরবো না।

চাঁদপুর থেকে আসা বিএনপি কর্মী মো. জয়নাল খান বলেন, সরকার স্বৈরাচারের রূপ ধারণ করেছে, এই সরকার আর জনগণের সরকার নয়। শুধু বিএনপি কর্মীরাই নয়, সাধারণ মানুষও আর এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই আমরা শেখ হাসিনার পদত্যাগের পূর্বে ঘরে ফিরে যাব না।

বেশিরভাগ নেতাকর্মীই ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। সমাবেশে অংশ নেওয়া বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির জমাদার বলেন, তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ডাকে দুইদিন আগেই ঢাকা এসেছেন।

তিনি বলেন, এ আন্দোলন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন। আমরা সকাল ৭টায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে এখানে এসেছি।

বরিশাল জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ খান, শোলক ইউনিয়ন যুবদলের সোহাগ ফকির, সজিব মোল্লাও এসেছেন মহাসমাবেশে। তারা জানান, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এসেছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মহিপুরে পাঁচ কিমি কাঁচা সড়কে হাঁটুজল, দুর্ভোগে পথচারী

নয়াপল্টনে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ভিড়

প্রকাশের সময় : ১২:১০:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

সরকার পদত্যাগের চূড়ান্ত আন্দোলনের এক দফা দাবিতে রাজধানীতে বিএনপির মহাসমাবেশ আজ। মহাসমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই দলীয় কার্যালয়ের সামনে খণ্ড খণ্ড মিছিলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। বর্তমান সরকারের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেনে নেতাকর্মীরা। নয়াপল্টনে এখন যারা আসছেন তাদের বেশিরভাগই ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মী। শুক্রবার (২৮ জুলাই) দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে শুরু হবে সমাবেশ। সকাল ৭টা থেকে দলটির নেতা-কর্মীরা ভিড় করতে থাকেন।

মহাসমাবেশ উপলক্ষে রাতেই মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়ে যায়। সে সময়ও বিএনপির কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড় দেখা যায়। ভোর থেকেও খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে ঢাকার বিভিন্ন জায়গা থেকে আসছেন নেতাকর্মীরা।

লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফারহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৫ বছর ধরে নির্যাতিত হচ্ছি। জনগণকে মুক্তি দিতে, জনগণের গণঅধিকার, ভোটের দাবি নিয়ে রাস্তায় এসেছি। আমাদের এক দফা, এক দাবি; শেখ হাসিনার পদত্যাগ। সরকারের পদত্যাগ ঘটিয়ে বাড়ি ফিরবো। কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুরোধ করছি, প্রয়োজনে অবস্থান ধর্মঘটের কর্মসূচি দেন। আমরা রাস্তায় থাকব।

নওগাঁ সদর থানার কিলপপুর ইউনিয়নের কৃষকদলের সভাপতি কৃষক গোলাম মোস্তফা বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ে দেশের কৃষকরা ভালো নেই। তাই অনেকের অনেক দাবি থাকলেও আমার দাবি একটাই- সরকারের পদত্যাগ। বাড়ি থেকে কাফনের কাপড় পরে এসেছি। রাজপথে আমার মৃত্যু হলে কোনো আফসোস নেই। আমরা গরীব মানুষ, এই সরকারের অধীনে খেয়ে-পড়ে বেঁচে থাকা অনেকটা মৃতের মতোই। আমরা সরকারের পদত্যাগ চাই, প্রয়োজনে আমার মৃত্যু হোক।

তিনি বলেন, প্রতিটি জিনিসের দাম অনেক বেড়ে গেছে। ১০ টাকার জিনিস এই সরকারের আমলে ১০০ টাকা, ২০ টাকার জিনিস ২০০ টাকা হয়ে গেছে। মানুষ চলতে পারে না। দেয়ালে আমাদের পিঠ ঠেকে গেছে। এই সরকারকে আমরা আর দেখতে চাই না।

গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, আমাদের ভোটের কোনো অধিকার নেই। পুনঃনির্বাচনে আমরা ভোট দিতে পারি না। কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই ভোট শেষ হয়ে যায়। আমরা চাই সুষ্ঠু একটা ভোটের আয়োজন করা হোক, তখন যদি আবার হাসিনা ক্ষমতায় আসে আমাদের কোনো আপত্তি নেই।

শেরপুর জেলা যুবদল নেতা সাজ্জাদুল আলম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। এই দাবি আদায়ে রাজপথে নেমেছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব।

ময়মনসিংহ থেকে আসা বিএনপি কর্মী মো. আরিফ বলেন, গতকাল রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছি। আসতে কষ্ট হলেও মহাসমাবেশে এসে খুবই ভালো লাগছে। গতকাল রাতেই বের হয়ে এসেছি, সরকারের পতন ছাড়া ঘরে ফিরবো না।

চাঁদপুর থেকে আসা বিএনপি কর্মী মো. জয়নাল খান বলেন, সরকার স্বৈরাচারের রূপ ধারণ করেছে, এই সরকার আর জনগণের সরকার নয়। শুধু বিএনপি কর্মীরাই নয়, সাধারণ মানুষও আর এই সরকারকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই আমরা শেখ হাসিনার পদত্যাগের পূর্বে ঘরে ফিরে যাব না।

বেশিরভাগ নেতাকর্মীই ঢাকার বাইরের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। সমাবেশে অংশ নেওয়া বরিশালের উজিরপুর উপজেলার শোলক ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনির জমাদার বলেন, তারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ডাকে দুইদিন আগেই ঢাকা এসেছেন।

তিনি বলেন, এ আন্দোলন গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলন, ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার আন্দোলন। আমরা সকাল ৭টায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী নিয়ে এখানে এসেছি।

বরিশাল জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল মাহমুদ, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান সোহাগ খান, শোলক ইউনিয়ন যুবদলের সোহাগ ফকির, সজিব মোল্লাও এসেছেন মহাসমাবেশে। তারা জানান, সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে এসেছেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকবেন।