Dhaka সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ১২ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবজাতককে সেতু থেকে নদীতে ফেলে দিলেন মা

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

পাঁচ দিনের এক নবজাতককে দপদপিয়া সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে তার মা।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। সবশেষ খবর অনুযায়ী, ওই নবজাতকটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি প্রথমে গোপন থাকলেও পরে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লোকমুখে জানাজানি হলে নগরীজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এদিকে শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতার কারণ দেখিয়ে নবজাতকের মা ঐশি আক্তারকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা। যদিও ভর্তি রেজিস্ট্রারে কৌশলে তার নাম রাবেয়া উল্লেখ করে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি।

খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

ঐশি আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে। তিনি একই উপজেলার হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তার স্বামীর নাম সোহেল আহমেদ। তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে আমার স্ত্রী একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এর দুই দিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে যাই। সেখান থেকে বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন আমার স্ত্রী। পরে তিনি অটোরিকশাযোগে দপদপিয়া সেতুতে গিয়ে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর থেকে সন্তানের হদিস মিলছে না। এ ঘটনায় আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

নবজাতকের মামা মো. মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতায় ভুগছেন। এ জন্য তাকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নবজাতক শিশুটি কোথায় আছে এ প্রশ্নের জবাবে তার বোন কিছুই বলতে পারছে না।

হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশি। তাই রাবেয়া লেখা হয়েছে।

শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ট হয়। সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যায়। বুধবার বিকেলে ওই শিশুর মাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটি তার সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তার মা। খবর পেয়ে পুলিশও হাসপাতালে খোঁজখবর নিয়েছে।

নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের একটি টিম এ বিষয়ে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ওই নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছ থেকে পরিষ্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

নবজাতককে সেতু থেকে নদীতে ফেলে দিলেন মা

প্রকাশের সময় : ০৯:৫৭:১৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫

বরিশাল জেলা প্রতিনিধি : 

পাঁচ দিনের এক নবজাতককে দপদপিয়া সেতুর ওপর থেকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেওয়ার ঘটনা ঘটিয়েছে তার মা।

বুধবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। সবশেষ খবর অনুযায়ী, ওই নবজাতকটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি প্রথমে গোপন থাকলেও পরে বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় লোকমুখে জানাজানি হলে নগরীজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।

এদিকে শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতার কারণ দেখিয়ে নবজাতকের মা ঐশি আক্তারকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন তার স্বজনরা। যদিও ভর্তি রেজিস্ট্রারে কৌশলে তার নাম রাবেয়া উল্লেখ করে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি।

খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের একটি টিম বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে হাসপাতালে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন।

ঐশি আক্তারের বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার মগড় ইউনিয়নের আমিরাবাদ গ্রামে। তিনি একই উপজেলার হয়বৎপুর তৌকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তার স্বামীর নাম সোহেল আহমেদ। তিনি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার হিসেবে কর্মরত আছেন।

নবজাতকের বাবা সোহেল আহমেদ জানান, গত ১০ জানুয়ারি ভোরে শেবাচিম হাসপাতালে আমার স্ত্রী একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। এর দুই দিন পর স্ত্রী-সন্তানকে নগরীর বাংলাবাজার এলাকায় স্ত্রীর বড় বোনের বাসায় রেখে যাই। সেখান থেকে বুধবার দুপুরে সন্তানকে নিয়ে বের হন আমার স্ত্রী। পরে তিনি অটোরিকশাযোগে দপদপিয়া সেতুতে গিয়ে সন্তানকে কীর্তনখোলা নদীতে ফেলে দেন। এ ঘটনার পর থেকে সন্তানের হদিস মিলছে না। এ ঘটনায় আমার স্ত্রী ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

নবজাতকের মামা মো. মাসুদ জানান, তার বোন শারীরিক অসুস্থতা ও বিষণ্ণতায় ভুগছেন। এ জন্য তাকে বুধবার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে নবজাতক শিশুটি কোথায় আছে এ প্রশ্নের জবাবে তার বোন কিছুই বলতে পারছে না।

হাসপাতালে দ্বিতীয়বার ভর্তির ক্ষেত্রে ভিন্ন নাম ব্যবহারের কারণ জানতে চাইলে তিনি জানান, তার বোনের নাম রাবেয়া আক্তার ঐশি। তাই রাবেয়া লেখা হয়েছে।

শেবাচিম হাসপাতালে কর্মরত নার্সরা জানান, গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এই হাসপাতালেই শিশুটি ভূমিষ্ট হয়। সোমবার স্বজনরা শিশুসহ তার মাকে বাসায় নিয়ে যায়। বুধবার বিকেলে ওই শিশুর মাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিন্তু শিশুটি তার সঙ্গে দেখা যায়নি। পরে লোকমুখে জানতে পেরেছি, শিশুটিকে নদীতে ফেলে দিয়েছেন তার মা। খবর পেয়ে পুলিশও হাসপাতালে খোঁজখবর নিয়েছে।

নলছিটি থানার ওসি আব্দুস সালাম বলেন, আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুলিশের একটি টিম এ বিষয়ে ওই নারী ও তার স্বজনদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমাদের অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। ওই নবজাতকের মা অসুস্থ থাকায় তার কাছ থেকে পরিষ্কারভাবে কিছুই জানা যাচ্ছে না।