Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন দল গঠনের জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা জনগণ মেনে নেবে না : মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল গোছানোর এটা একটা কৌশল কিনা, এখন সেই প্রশ্ন উঠেছে। নতুন দল গঠনের জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা জনগণ মেনে নেবে না।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ নবায়ন ও গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের নতুন ধারার রাজনীতি শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষতা হারালে আরেকটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার হবে। আমার এমন মন্তব্যের পর অনেকে বলেছিল, আমরা আরেকটি এক-এগারো চাচ্ছি। কিন্তু খেয়াল করলে সবাই বুঝবে, এক-এগারোতে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী আমরা (বিএনপি)। তাই হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, আবারও এক-এগারোর চেষ্টা কিংবা চিন্তা করলে জনগণ তা কখনওই মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। শুধু মহল্লা ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুললে হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সংগঠন যদি গড়ে না তোলা হয় তাহলে কিন্তু হবে না। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তোমাকে নেতৃত্ব দিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংসদ নির্বাচনে তোমাকে জয় লাভ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাহিত্য প্রতিযোগিতায় তুমি এগিয়ে যাবা; এ বিষয়গুলো না হলে তোমার যে বিকাশ, সেই বিকাশটা হবে না।

বক্তব্যে নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব সরকারে থেকে দল গোছানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল নেওয়ার সমালোচনা করেন। বলেন, অন্তর্র্বতী সরকার নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চাচ্ছে। এটা বিপজ্জনক। নতুন দলকে অবশ্যই বিএনপি স্বাগত জানাবে। তবে, সরকারে থেকে দল গোছানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল…এসব বিষয় দেশের মানুষ মেনে নেবে না। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্তবর্তীকালীন সরকারে থেকে ‘কতিপয় উপদেষ্টা’ নতুন দল গঠনের কৌশল নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল আপনারা পত্রিকায় দেখেছেন যে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা যিনি আছেন তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তাহলে তারা অংশ নিতে পারবে। এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে তারা এখন নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চায়। তিনি যে কথাটা বলেছেন, ইট ইজ ডেঞ্জারাস। তার মানে কি আমরা ধরে নেব যে তারা সরকারে থেকে দল গুছানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছেন। ওই কৌশল নিলে আমরা তা হতে দেব না। এ দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।

সরকারের এক উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তখন তিনি বলেছিলেন আমি নাকি এক-এগারোর দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা এক-এগারোর ভুক্তভোগী। এক-এগারো যারা তৈরি করেছে তারা টিকতে পারেনি মানুষের কাছে। আবারও হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই যদি আবার কেউ সেই এক-এগারোর কথা চিন্তা করেন, গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে সেই একদলীয় শাসন ফ্যাসিস্ট সরকারের দিকে যেতে চান, তাহলে কখনোই জনগণ তা মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, তোমরাই হচ্ছো ভবিষ্যৎ। তোমরা এ দেশের সব কিছু তৈরি করবে। চাকরিতে বলো, রাজনীতিতে বলো, অর্থনীতিতে বলো, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের ক্ষেত্রে বল তোমাদেরকেই বিষয়গুলোর সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের জ্ঞান চর্চার ওপর গুরত্বারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের শুধু আন্দোলন, শুধু সংগঠন এসব করলেই চলবে না, আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য অবশ্যই জ্ঞানচর্চাটা করতে হবে। জ্ঞানচর্চাই হবে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে মূল কেন্দ্র। তা না হলে আমরা এগোতে পারব না। যারা মেধাবীদের সামনে আনতে হবে। প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে, ধারণা থাকতে হবে। আমি নিজেই ছাত্র রাজনীতির প্রোডাক্ট। আমি ৬০-এর দশকে ছাত্র রাজনীতি করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তিনি বলেন, সেই সময়ে আমাদের সংগঠন পড়াশোনা জন্য স্টাডি সেল তৈরি করতো.. সেখানে পড়াশোনা হতো, পরীক্ষা হতো, তারপরে পদোন্নতি হতো। পদ পাওয়া নির্ভর করতো যে আমি কতটুকু জানি তার ওপরে এই বিষয়টা যদি আমরা ছাত্রদলের মধ্যে চালু করতে পারি তবেই শক্তিশালী হবে সংগঠন। আমি অনুরোধ রাখব এরকম চিন্তাভাবনা নিয়ে আসতে হবে।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা এমবিবিএস পাস করে বিদেশে সরাসরি ভর্তি হতে পারে না। কারণ ওরা (বিদেশ) মনে করে যে, এখানে যে এমবিবিএস পড়াশোনা সঠিক হয় না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশে মাস্টার্স পাস করে উচ্চ শিক্ষায় বিদেশে গেলে তাদের আবার ল্যাংগুয়েজসহ বিভিন্ন পরীক্ষা দিতে হয় যেটা আগে ছিল না। কারণ শিক্ষার ব্যবস্থাটা আগে এমন ছিল যে, একজন শিক্ষার্থী সব বিষয়ে পারদর্শী হতে পারে তার ব্যবস্থা ছিল। শিক্ষার ওপর কতটুকু গুরুত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি সকল প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে জাহাজে সমুদ্রে দেখতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেটা শুধু সমুদ্র দেখার জন্য নয়, ওখানে বসে সমুদ্রের নিচে কি সম্পদ আছে, সমুদ্র যে কি একটা বিশাল সম্পদের ক্ষেত্র যেখান থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তন হতে পারে যেটাকে ব্লু ইকোনমি বলা হয় সেই বিষয়টা শহীদ প্রেসিডেন্ট ৭৯-৮০ সালে দেখেছিলেন সেজন্য আমরা তাকে বলি একজন ক্ষণজন্মা নেতা। ছাত্রদেরও বললো, তোমরা বেশি করে জ্ঞান অর্জন করো।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই লড়াইটা আমরা এখন একটা ক্রান্তিকালের লড়াইয়ে এসে পৌঁছেছি। এই লড়াইয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য, টলারেন্স এবং মেধার চর্চা করা। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমাদেরকে সক্রিয় হতে হবে। তোমরা মোবাইল সেটটা ভালো বুঝ..ওখানে লড়াইটা চালাও, ওই জায়গায় যদি তোমরা লড়াই করতে পারো তাহলে কেউ তোমাদের বিজয় ঠেকাতে পারবে না।

আলোচনা সভায় এবার ‘স্লোগান’ না থাকায় নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে খুব আমার লাগছে যে, কোনো স্লোগান হয়নি, হচ্ছে না। এটা আমার খুব আনন্দ লাগছে যে, আমার মনে হচ্ছে যে, এতো দিন যে কথা বলেছি অন্তত আজকে একটা বাস্তবায়ন হয়েছে।

কারণ ছাত্রদল ছাত্রদল। উত্তর-দক্ষিণ? স্লোগান দাও যে মাঝে-মধ্যে অমুক ভাই এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে এটাও দরকার নাই। আমাদের ভাই একজনই তারেক রহমান, আমাদের নেত্রী একজনই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, আমাদের দার্শনিক আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা একজনই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তরের মোস্তফা জামান, ছাত্রদলের পূর্বের সভাপতি সোহাগ ভূঁইয়া, উত্তরের সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণের সভাপতি শামীম মাহমুদ ও পশ্চিমের সভাপতি রবির খান বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

গুলিস্তানে সড়ক দুর্ঘটনায় ট্রাকের হেলপার নিহত

নতুন দল গঠনের জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা জনগণ মেনে নেবে না : মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ০৯:৫০:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নতুন রাজনৈতিক দল গোছানোর এটা একটা কৌশল কিনা, এখন সেই প্রশ্ন উঠেছে। নতুন দল গঠনের জন্য সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা জনগণ মেনে নেবে না।

বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগর ছাত্রদলের সদস্য সংগ্রহ ফরম বিতরণ নবায়ন ও গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের নতুন ধারার রাজনীতি শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষতা হারালে আরেকটি নিরপেক্ষ সরকার দরকার হবে। আমার এমন মন্তব্যের পর অনেকে বলেছিল, আমরা আরেকটি এক-এগারো চাচ্ছি। কিন্তু খেয়াল করলে সবাই বুঝবে, এক-এগারোতে সবচেয়ে বড় ভুক্তভোগী আমরা (বিএনপি)। তাই হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, আবারও এক-এগারোর চেষ্টা কিংবা চিন্তা করলে জনগণ তা কখনওই মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুলতে হবে। শুধু মহল্লা ভিত্তিক সংগঠন গড়ে তুললে হবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভিত্তিক সংগঠন যদি গড়ে না তোলা হয় তাহলে কিন্তু হবে না। ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তোমাকে নেতৃত্ব দিতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সংসদ নির্বাচনে তোমাকে জয় লাভ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাহিত্য প্রতিযোগিতায় তুমি এগিয়ে যাবা; এ বিষয়গুলো না হলে তোমার যে বিকাশ, সেই বিকাশটা হবে না।

বক্তব্যে নির্বাচনের বিষয়ে সরকারের আন্তরিকতা নিয়ে মানুষের মধ্যে সন্দেহ তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব সরকারে থেকে দল গোছানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল নেওয়ার সমালোচনা করেন। বলেন, অন্তর্র্বতী সরকার নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চাচ্ছে। এটা বিপজ্জনক। নতুন দলকে অবশ্যই বিএনপি স্বাগত জানাবে। তবে, সরকারে থেকে দল গোছানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল…এসব বিষয় দেশের মানুষ মেনে নেবে না। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

অন্তবর্তীকালীন সরকারে থেকে ‘কতিপয় উপদেষ্টা’ নতুন দল গঠনের কৌশল নিচ্ছেন বলে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল আপনারা পত্রিকায় দেখেছেন যে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা যিনি আছেন তিনি বলেছেন, ফ্যাসিস্টদের লোকেরা যদি কেউ মাফ চেয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তাহলে তারা অংশ নিতে পারবে। এর থেকে এটাই প্রমাণিত হয় যে তারা এখন নিজেদের স্বার্থে ফ্যাসিস্টদের জায়গা দিতে চায়। তিনি যে কথাটা বলেছেন, ইট ইজ ডেঞ্জারাস। তার মানে কি আমরা ধরে নেব যে তারা সরকারে থেকে দল গুছানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল নিচ্ছেন। ওই কৌশল নিলে আমরা তা হতে দেব না। এ দেশের মানুষ তা হতে দেবে না।

সরকারের এক উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, তখন তিনি বলেছিলেন আমি নাকি এক-এগারোর দিকে নজর দিচ্ছি। আমরা এক-এগারোর ভুক্তভোগী। এক-এগারো যারা তৈরি করেছে তারা টিকতে পারেনি মানুষের কাছে। আবারও হুঁশিয়ার করে বলে দিতে চাই যদি আবার কেউ সেই এক-এগারোর কথা চিন্তা করেন, গণতন্ত্রকে বিসর্জন দিয়ে সেই একদলীয় শাসন ফ্যাসিস্ট সরকারের দিকে যেতে চান, তাহলে কখনোই জনগণ তা মেনে নেবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, তোমরাই হচ্ছো ভবিষ্যৎ। তোমরা এ দেশের সব কিছু তৈরি করবে। চাকরিতে বলো, রাজনীতিতে বলো, অর্থনীতিতে বলো, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের ক্ষেত্রে বল তোমাদেরকেই বিষয়গুলোর সামনে এগিয়ে নিতে হবে।

ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের জ্ঞান চর্চার ওপর গুরত্বারোপ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমাদের শুধু আন্দোলন, শুধু সংগঠন এসব করলেই চলবে না, আমাদের সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য অবশ্যই জ্ঞানচর্চাটা করতে হবে। জ্ঞানচর্চাই হবে আমাদের এই প্রতিষ্ঠানে মূল কেন্দ্র। তা না হলে আমরা এগোতে পারব না। যারা মেধাবীদের সামনে আনতে হবে। প্রতিটি বিষয় সম্পর্কে জানতে হবে, ধারণা থাকতে হবে। আমি নিজেই ছাত্র রাজনীতির প্রোডাক্ট। আমি ৬০-এর দশকে ছাত্র রাজনীতি করেছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে।

তিনি বলেন, সেই সময়ে আমাদের সংগঠন পড়াশোনা জন্য স্টাডি সেল তৈরি করতো.. সেখানে পড়াশোনা হতো, পরীক্ষা হতো, তারপরে পদোন্নতি হতো। পদ পাওয়া নির্ভর করতো যে আমি কতটুকু জানি তার ওপরে এই বিষয়টা যদি আমরা ছাত্রদলের মধ্যে চালু করতে পারি তবেই শক্তিশালী হবে সংগঠন। আমি অনুরোধ রাখব এরকম চিন্তাভাবনা নিয়ে আসতে হবে।

বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ‘সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিক্ষাখাত’ দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা এমবিবিএস পাস করে বিদেশে সরাসরি ভর্তি হতে পারে না। কারণ ওরা (বিদেশ) মনে করে যে, এখানে যে এমবিবিএস পড়াশোনা সঠিক হয় না। আমাদের ছেলে-মেয়েরা দেশে মাস্টার্স পাস করে উচ্চ শিক্ষায় বিদেশে গেলে তাদের আবার ল্যাংগুয়েজসহ বিভিন্ন পরীক্ষা দিতে হয় যেটা আগে ছিল না। কারণ শিক্ষার ব্যবস্থাটা আগে এমন ছিল যে, একজন শিক্ষার্থী সব বিষয়ে পারদর্শী হতে পারে তার ব্যবস্থা ছিল। শিক্ষার ওপর কতটুকু গুরুত্ব দিয়েছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যিনি সকল প্রতিষ্ঠানের মেধাবী ছাত্রদের নিয়ে জাহাজে সমুদ্রে দেখতে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেটা শুধু সমুদ্র দেখার জন্য নয়, ওখানে বসে সমুদ্রের নিচে কি সম্পদ আছে, সমুদ্র যে কি একটা বিশাল সম্পদের ক্ষেত্র যেখান থেকে বাংলাদেশের অর্থনীতির পরিবর্তন হতে পারে যেটাকে ব্লু ইকোনমি বলা হয় সেই বিষয়টা শহীদ প্রেসিডেন্ট ৭৯-৮০ সালে দেখেছিলেন সেজন্য আমরা তাকে বলি একজন ক্ষণজন্মা নেতা। ছাত্রদেরও বললো, তোমরা বেশি করে জ্ঞান অর্জন করো।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই লড়াইটা আমরা এখন একটা ক্রান্তিকালের লড়াইয়ে এসে পৌঁছেছি। এই লড়াইয়ে আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন ধৈর্য, টলারেন্স এবং মেধার চর্চা করা। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমাদেরকে সক্রিয় হতে হবে। তোমরা মোবাইল সেটটা ভালো বুঝ..ওখানে লড়াইটা চালাও, ওই জায়গায় যদি তোমরা লড়াই করতে পারো তাহলে কেউ তোমাদের বিজয় ঠেকাতে পারবে না।

আলোচনা সভায় এবার ‘স্লোগান’ না থাকায় নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে খুব আমার লাগছে যে, কোনো স্লোগান হয়নি, হচ্ছে না। এটা আমার খুব আনন্দ লাগছে যে, আমার মনে হচ্ছে যে, এতো দিন যে কথা বলেছি অন্তত আজকে একটা বাস্তবায়ন হয়েছে।

কারণ ছাত্রদল ছাত্রদল। উত্তর-দক্ষিণ? স্লোগান দাও যে মাঝে-মধ্যে অমুক ভাই এগিয়ে চলো, আমরা আছি তোমার সাথে এটাও দরকার নাই। আমাদের ভাই একজনই তারেক রহমান, আমাদের নেত্রী একজনই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া, আমাদের দার্শনিক আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা একজনই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মজনু, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক, দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, উত্তরের মোস্তফা জামান, ছাত্রদলের পূর্বের সভাপতি সোহাগ ভূঁইয়া, উত্তরের সভাপতি সালাহউদ্দিন আহমেদ, দক্ষিণের সভাপতি শামীম মাহমুদ ও পশ্চিমের সভাপতি রবির খান বক্তব্য রাখেন।