Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না : অর্থ উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বাস্তব ভিত্তিক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) নেওয়া হবে বলে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করবো না। ধার করে বড় বড় মেগা প্রকল্প করবো না।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেনে, বিরাট একটা গ্যাপ নিয়ে বাজেট করব না। বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নিয়ে ধার করে ডেফিসিট (ঘাটতি) দিয়ে এগুলো করব না। ব্যাংক থেকে বড় ঋণ করে, টাকা ছাপিয়ে আমরা এসব করব না।

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের তেলের একটু ঘাটতি আছে। আমরা রাইস ব্রান অয়েল আনার বিষয় কথা বলেছি। বেশিরভাগ প্রস্তাব পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের। আমাদের নদীর পাড়গুলো ভেঙে গেছে, সেখানে আমরা প্রজেক্ট এপ্রুভ করলাম। নদীগুলো যদি আমরা সংরক্ষণ না করি তাহলে বর্ষা মৌসুমে দেখা যাবে পাড় ভাঙতে থাকবে। এ জন্য ৬টি প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। আর বাকিগুলো খাদ্য গুদাম নিয়ে। এছাড়া এলএনজি আনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কাস্টমস কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন তাদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে এনবিআরের অর্ডিন্যান্স করা হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কিছুই বলতে চাই না। তারা যা বলার বলবে। আপনারা বিষয়টা ভালো করে পড়বেন। দেখবেন তাদের স্বার্থ সংরক্ষিত আছে। সুতরাং তাদের দুশ্চিন্তা করার কিছুই নেই। এনবিআর যেভাবে আছে তাদের টার্মস অব রেফারেন্স অনুযায়ী একটা ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস। পলিসি ডিভিশন আর ইমপ্লিমেন্টেশন ডিভিশন এক থাকে না। সব দেশেই আলাদা থাকে। পলিসি ডিভিশনটা একটু প্রফেশনাল লোক দিয়ে কাজ করতে হয়। অর্থনৈতিক পরিসংখান এবং জিডিপি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয়। আর এনবিআর করবে এটা ইমপ্লিমেন্ট।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিভক্ত করায় রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ পর্যন্ত এরই মধ্যে রাজস্ব আদায় গতবারের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি হয়েছে। খুব হতাশাব্যঞ্জক না, আমি আরও আশা করছি। অ্যাটলিস্ট গতবারের তুলনায় কম হবে না।

তিনি বলেন, মোটামুটি বাজেটটা আমরা বাস্তবায়ন করবো, বিরাট একটা গ্যাপ নিয়ে করবো না। প্রকল্প, এডিপি বাস্তবায়ন করবো অত্যন্ত বাস্তবভিত্তিতে। বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নিয়ে, ধার করে ডেফিসিট দিয়ে এগুলো করবো না। ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না। কিছুটা তো ডেফিসিট (ঘাটতি) থাকবে। সেটা পূরণ করতে আমি নেগোশিয়েট করছি, আমরা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে প্রজেক্টের ব্যাপারে কথা বলছি, সেটা মোটামুটি এখন সাকসেসফুল।

গতকাল একটি অধ্যাদেশ হয়েছে, যেটার মাধ্যমে ৫৩ বছরের এনবিআর ভেঙে গেলো। বলা হচ্ছে কাস্টম ট্যাক্স ক্যাডারের যারা কর্মকর্তারা তারা লম্বা সময় ধরে আন্দোলন করছিলেন, তাদের মতামত উপেক্ষা করেই এ অধ্যাদেশ করা হলো। বিষয়টি সে রকম? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাদেশটা ভালো করে পড়ে দেখেন, তাদের স্বার্থ সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত আছে। পলিসি একটা ডিভিশন হবে, এটা অত্যন্ত ছোট একটা ডিভিশন। অতএব এনবিআরের দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। এনবিআর থাকবে, এনবিআর যেভাবে আছে কতগুলো টার্মস অব রেফারেন্স হিসেবে।

তিনি বলেন, এটা ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস পলিসি ডিভিশন আর ইমপ্লিমেশন ডিভিশন এক থাকে না। সব দেশেই আলাদা থাকে। কারণ পলিসি ডিভিশনটা প্রফেশনাল লোক দিয়ে কাজ করতে হয়ে। অর্থনীতি, পরিসংখ্যান, দেশের জিডিপি এগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয়। আর এনবিআর করবে এটা ইমপ্লিমেন্ট। এখন এনবিআর যদি পলিসিও করে, মানে যাদের কাজ কেবল আদায় করা এটা একটা কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট থাকে। আমি পলিসি করলাম, আমি আবার লোক দিয়ে আদায় করলাম।

অত্যন্ত চিন্তা করে এটা করা হয়েছে। ওদের সঙ্গে যে আলাপ করিনি তা না, আমার যদি মনে করেন এনবিআরের হাজার হাজার লোকের সঙ্গে আলাপ করতে হবে, তা না। যারা মেম্বার, সদস্য ডেফিনেটলি তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। ওদিকে আবার প্রশাসনের লোকের কিছু মন্তব্য আছে, তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না : অর্থ উপদেষ্টা

প্রকাশের সময় : ০৩:৩৪:১০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ মে ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী অর্থবছরের বাজেটে বাস্তব ভিত্তিক বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) নেওয়া হবে বলে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে আমরা বাজেট বাস্তবায়ন করবো না। ধার করে বড় বড় মেগা প্রকল্প করবো না।

মঙ্গলবার (১৩ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নতুন ভবনে অর্থ উপদেষ্টার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেনে, বিরাট একটা গ্যাপ নিয়ে বাজেট করব না। বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নিয়ে ধার করে ডেফিসিট (ঘাটতি) দিয়ে এগুলো করব না। ব্যাংক থেকে বড় ঋণ করে, টাকা ছাপিয়ে আমরা এসব করব না।

উপদেষ্টা বলেন, আমাদের তেলের একটু ঘাটতি আছে। আমরা রাইস ব্রান অয়েল আনার বিষয় কথা বলেছি। বেশিরভাগ প্রস্তাব পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের। আমাদের নদীর পাড়গুলো ভেঙে গেছে, সেখানে আমরা প্রজেক্ট এপ্রুভ করলাম। নদীগুলো যদি আমরা সংরক্ষণ না করি তাহলে বর্ষা মৌসুমে দেখা যাবে পাড় ভাঙতে থাকবে। এ জন্য ৬টি প্রজেক্ট হাতে নেওয়া হয়েছে। আর বাকিগুলো খাদ্য গুদাম নিয়ে। এছাড়া এলএনজি আনার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

কাস্টমস কর্মকর্তারা অভিযোগ করছেন তাদের মতামতকে গুরুত্ব না দিয়ে এনবিআরের অর্ডিন্যান্স করা হয়েছে এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমরা এ ব্যাপারে কিছুই বলতে চাই না। তারা যা বলার বলবে। আপনারা বিষয়টা ভালো করে পড়বেন। দেখবেন তাদের স্বার্থ সংরক্ষিত আছে। সুতরাং তাদের দুশ্চিন্তা করার কিছুই নেই। এনবিআর যেভাবে আছে তাদের টার্মস অব রেফারেন্স অনুযায়ী একটা ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস। পলিসি ডিভিশন আর ইমপ্লিমেন্টেশন ডিভিশন এক থাকে না। সব দেশেই আলাদা থাকে। পলিসি ডিভিশনটা একটু প্রফেশনাল লোক দিয়ে কাজ করতে হয়। অর্থনৈতিক পরিসংখান এবং জিডিপি সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয়। আর এনবিআর করবে এটা ইমপ্লিমেন্ট।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বিভক্ত করায় রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, রাজস্ব আদায়ে কোনো প্রভাব পড়বে না। এ পর্যন্ত এরই মধ্যে রাজস্ব আদায় গতবারের তুলনায় ২ শতাংশ বেশি হয়েছে। খুব হতাশাব্যঞ্জক না, আমি আরও আশা করছি। অ্যাটলিস্ট গতবারের তুলনায় কম হবে না।

তিনি বলেন, মোটামুটি বাজেটটা আমরা বাস্তবায়ন করবো, বিরাট একটা গ্যাপ নিয়ে করবো না। প্রকল্প, এডিপি বাস্তবায়ন করবো অত্যন্ত বাস্তবভিত্তিতে। বড় বড় মেগা প্রজেক্ট নিয়ে, ধার করে ডেফিসিট দিয়ে এগুলো করবো না। ব্যাংক থেকে ধার করে, টাকা ছাপিয়ে বাজেট বাস্তবায়ন করবো না। কিছুটা তো ডেফিসিট (ঘাটতি) থাকবে। সেটা পূরণ করতে আমি নেগোশিয়েট করছি, আমরা আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ), বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে প্রজেক্টের ব্যাপারে কথা বলছি, সেটা মোটামুটি এখন সাকসেসফুল।

গতকাল একটি অধ্যাদেশ হয়েছে, যেটার মাধ্যমে ৫৩ বছরের এনবিআর ভেঙে গেলো। বলা হচ্ছে কাস্টম ট্যাক্স ক্যাডারের যারা কর্মকর্তারা তারা লম্বা সময় ধরে আন্দোলন করছিলেন, তাদের মতামত উপেক্ষা করেই এ অধ্যাদেশ করা হলো। বিষয়টি সে রকম? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, অধ্যাদেশটা ভালো করে পড়ে দেখেন, তাদের স্বার্থ সম্পূর্ণরূপে সংরক্ষিত আছে। পলিসি একটা ডিভিশন হবে, এটা অত্যন্ত ছোট একটা ডিভিশন। অতএব এনবিআরের দুশ্চিন্তা করার কোনো কারণ নেই। এনবিআর থাকবে, এনবিআর যেভাবে আছে কতগুলো টার্মস অব রেফারেন্স হিসেবে।

তিনি বলেন, এটা ইন্টারন্যাশনাল প্র্যাকটিস পলিসি ডিভিশন আর ইমপ্লিমেশন ডিভিশন এক থাকে না। সব দেশেই আলাদা থাকে। কারণ পলিসি ডিভিশনটা প্রফেশনাল লোক দিয়ে কাজ করতে হয়ে। অর্থনীতি, পরিসংখ্যান, দেশের জিডিপি এগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকতে হয়। আর এনবিআর করবে এটা ইমপ্লিমেন্ট। এখন এনবিআর যদি পলিসিও করে, মানে যাদের কাজ কেবল আদায় করা এটা একটা কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট থাকে। আমি পলিসি করলাম, আমি আবার লোক দিয়ে আদায় করলাম।

অত্যন্ত চিন্তা করে এটা করা হয়েছে। ওদের সঙ্গে যে আলাপ করিনি তা না, আমার যদি মনে করেন এনবিআরের হাজার হাজার লোকের সঙ্গে আলাপ করতে হবে, তা না। যারা মেম্বার, সদস্য ডেফিনেটলি তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে। ওদিকে আবার প্রশাসনের লোকের কিছু মন্তব্য আছে, তাদের সঙ্গে আলাপ হয়েছে।