নিজস্ব প্রতিবেদক :
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিভিন্ন সংস্থা থেকে ধার নেয়া অর্থে দেশের অর্থনীতি এগোবে না। অর্থনীতি এগিয়ে নিতে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) জাতীয় ভ্যাট দিবস ও সপ্তাহ-২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, জনগণের পরিশোধ করা ট্যাক্স-ভ্যাটের বিপরীতে সেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব সরকারের। ধার নেয়া অর্থে দেশের অর্থনীতি এগোবে না। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আয় বাড়াতে হবে। জনগণের পরিশোধ করা ট্যাক্স–ভ্যাটের বিপরীতে সেবা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ট্যাক্স ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং সেবা বৃদ্ধি করলে জনগণের কর প্রদানে আগ্রহ আরও বাড়বে, যা রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে বড় ভূমিকা রাখবে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, একটা জিনিস ভ্যাটের যেটা হয়, সিস্টেমটা যেন…সবাই বলবেন, খুব সহজ যেন সিস্টেম হয় এবং ভ্যাটে যেন ‘কোনো কারচুপি’ না হয়। এবং ভ্যাট যেন, আপনি বা আমি যদি ভ্যাট দেই, সেটা যেন সরকারের কোষাগারে পৌঁছায়। আমাদের দেশে একটা ‘দুঃখজনক’ ব্যাপার হচ্ছে, ভ্যাটটা অনেক সময় ‘পৌঁছায় না’
পৃথিবীর অন্যান্য দেশে কেনাকাটা করতে গেলে ‘ভ্যাট থেকে নিস্তার নাই’ মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, আমি অনেককে দেখেছি আমার আত্মীয়-স্বজনও, এই দোকানে ভ্যাট আছে? আছে। ঠিক আছে থাক, আরেক দোকানে যাই। ব্যবসায়ী ভ্যাট নেবে না, ঠিক আছে না নিলে চলবে। অতএব আমাদের মধ্যে কিন্তু মানসিকতাটা একটু চেঞ্জ করতে হবে।
কর দিলে সেই তার বিপরীতে সেবাটাও যেন মেলে, তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা।
সালেহউদ্দিন আহমেদের ভাষ্য, কোনো কোনো দেশে আমি একটা দেশ আছে বলবো না, বলছে ট্যাক্স-জিডিপি রেশিও ২৬ শতাংশ। ২৬ শতাংশ ট্যাক্স দেয়। আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন? বলি, ২৬ শতাংশ ট্যাক্স দেয় কারণ হয় কি, ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ সবাই কনভিন্সড। ওই যে ভ্যাট বা ট্যাক্স দিয়ে তোরা তো আবার সেবাটা পায় আবার। ওই যে ২৬ শতাংশ ট্যাক্স নিয়ে এদিক-সেদিক টাকা পাঠিয়ে দিল দেশের বাহিরে, ওইটা হয় না। ওরা জানে যে এই টাকাটা ঠিক কাজে ব্যবহার হবে।
তিনি বলেন, আমাদেরও কিন্তু সরকারের দিক থেকে এটা এনশিওর করতে হবে যে ট্যাক্সটা আপনাদের কাছে নিচ্ছে, মানুষের কাছে, তার বদলে যেন সব ধরনের সেবা যেন এনশিওর করে। তবেই কিন্তু লোকজন কনভিন্সড হবে যে আমি ট্যাক্স দেব, কারণ এটা তো আমার জন্য।
ভ্যাট পদ্ধতির আধুনিকায়ন দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে মন্তব্য করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা বোধহয় দেড় মাস বা দেড় মাস বা দুই মাসের মধ্যে যদি সিস্টেমটাকে আরেকটু তাড়াতাড়ি ডেভেলপ করি, পরবর্তী সরকার যেন এটাকে খুব রাইট আর্নেস্ট নিতে পারে এবং বাংলাদেশের চেহারা সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও কিন্তু আমরা সামনে এগিয়ে যেতে পারি। এটি হবে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেস, আয়কর না বাড়ালে ঋণ করে ‘সামনে আগানো যাবে না’।
তার কথায়, “তবে একটা পোরশন যদি আমরা বাড়াতে পারি, দেখেন ইনকাম ট্যাক্স, আমাদের এমনি উচিত হল ইনকাম ট্যাক্স থেকে সবচেয়ে টাকা বেশি আদায় করা।
“মানে ইনকাম ট্যাক্স ডিপেন্ডেন্ট হওয়া উচিত, নট অন ভ্যাট। আর সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি-টুটি এগুলো কিন্তু আস্তে আস্তে যত কমানো যায়। মোটকথা আমাদের রাজস্ব ব্যবস্থাপনাকে আরেকটু মডার্নাইজ করা, আরো আইটি অরিয়েন্টেড করা, পিপলস ফ্রেন্ডলি করা। ব্যবসায়ীদের ফ্রেন্ডলি করা। না হলে কিন্তু আমরা সামনে এগুতে পারবো না। আমাদের সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকবে। ধার করে বা গ্র্যান্ট নিয়ে আমরা কিন্তু বেশি দূর এগুতে পারবো না।
নিজস্ব প্রতিবেদক 




















