নিজস্ব প্রতিবেদক :
ঢাকার ধানমন্ডির একটি আবাসিক এলাকায় সমন্বয়ক পরিচয়ে ‘বিশৃঙ্খলা তৈরির’ অভিযোগে আটক তিন জনকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নেওয়ার ঘটনায় ভুল স্বীকার করেছেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
দলের যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহ উদ্দিন সিফাতের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ধানমন্ডি থানার একটি ঘটনায় আটক তিন জনকে মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনার ঘটনায় এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক ও রাজনৈতিক পর্ষদের সদস্য আব্দুল হান্নান মাসউদকে কারণ দর্শানো নোটিশ পাঠানো হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তিনি কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত ও মৌখিক জবাব দিয়েছেন ‘রাজনৈতিক পর্ষদ’ এর কাছে।
এতে আরো বলা হয়েছে, নোটিশে উল্লেখিত কর্মকাণ্ডে ভুল ছিল বলে তিনি স্বীকার করেছেন এবং আগামীতে এই ধরনের ভুলের পুনরাবৃত্তি হবে না মর্মে দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। পাশাপাশি থানায় আটককৃত ব্যক্তিদের কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ছিল না বলে প্রমাণসাপেক্ষে প্রতীয়মান হওয়ায় রাজনৈতিক পর্ষদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তার ওপর আরোপিত কারণ দর্শানো নোটিশ প্রত্যাহার করা হলো।
উল্লেখ্য, ১৯ মে রাতে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ নামক সংগঠনের তিন সদস্য ধানমন্ডির একটি বাসায় হাক্কানী পাবলিশার্সের চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। ওই সময় তারা তাকে ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে গ্রেফতারের দাবি জানায় এবং পুলিশের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়ে পড়ে।
ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, একজন তরুণ থানার ওসিকে উদ্দেশ্য করে তর্ক করছেন, আপনি গ্রেফতার করলেন না কেন, আমি বলছি গ্রেফতার করেন!
পরে পুলিশ ওই তিনজনকে হেফাজতে নেয়। এরপর হান্নান মাসউদ ধানমন্ডি থানায় গিয়ে তাদের জামিনে মুক্ত করে আনেন।
এই পদক্ষেপ নিয়েই প্রশ্ন ওঠে দলের ভেতরে-বাইরে। এনসিপি মনে করে, হান্নান মাসউদ ব্যক্তিগতভাবে এমন একটি স্পর্শকাতর বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে এনসিপি তার কাছে কারণ দর্শাতে বলে এবং লিখিত ব্যাখ্যা চায়। নোটিশে বলা হয়, আটক ব্যক্তিদের মুক্তির বিষয়টি সংগঠনের সঙ্গে সমন্বয় না করে তিনি নিজের পরিচয়ে কাজ করেছেন, যা সাংগঠনিক শৃঙ্খলার পরিপন্থী।
হান্নান মাসউদ সেই নোটিশের জবাবে দায় স্বীকার করেছেন এবং তার কর্মকাণ্ডে কোনো রাজনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল না বলেও জানান। তিনি রাজনৈতিক পর্ষদে মৌখিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে জানান, ভবিষ্যতে তিনি আরও সতর্ক থাকবেন।