স্পোর্টস ডেস্ক :
ধর্ষণের দায়ে ব্রাজিলের কিংবদন্তি ফুটবলার দানি আলভসকে সাড়ে চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ৪০ বছর বয়সী আলভেসের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) এই রায় ঘোষণা করে স্পেনের বার্সেলোনার একটি আদালত।
এক বিবৃতিতে আদালত জানিয়েছেন, ‘শারীরিক সম্পর্কের ঘটনায় ভুক্তভোগীর কোনো সম্মতি ছিল না বলে প্রমাণিত হওয়ায় এই রায় দেওয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ভুক্তভোগীর সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে যে তিনি ধর্ষিত হয়েছেন।’
কারাদণ্ড ছাড়াও নির্যাতিত নারীকে দেড় লাখ ইউরো ক্ষতিপূরণ দিতেও আলভেসকে নির্দেশ দেন তিন সদস্যের বিচারক প্যানেল। বার্সেলোনার আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ‘ভুক্তভোগী যে সম্মতি দিয়েছেন তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাদীর ধর্ষণের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’
আলভেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল বার্সেলোনায় নাইট ক্লাবে এক তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন। আদালতে আলভেস বলেছেন, তাদের মাঝে যা হয়েছে সেটা ছিল পুরোপুরি সম্মতিমূলক। ধর্ষণের অভিযোগের পর ৪০ বছর বয়সী গ্রেফতার হন ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসে। তার পর থেকে জেলেই বন্দী ছিলেন। এর মাঝে জামিনের আবেদন হলেও পালিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় নাকচ করে দেওয়া হয় তা।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে একটি পানশালায় কুড়ি বছর বয়সী এক মেয়েকে যৌন হয়রানি করেন আলভেজ। এর পর গত বছরের ১০ জানুয়ারি তদন্ত শুরু হয়। তবে এসব অভিযোগ তখন অস্বীকার করেন আলভেজ। এ বিষয়ে কথা বলতে ন্যু কাম্পের (বার্সেলোনার মাঠ) কাছেই থানায় গিয়েছিলেন আলভেজ। সেখানেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
স্পেনের শীর্ষস্থানীয় ক্রীড়া দৈনিক মার্কার প্রতিবেদনে বলা হয় নাইটক্লাবে বন্ধুদের সঙ্গে ছিলেন ওই নারী। পরে পানশালার বাথরুমে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করেন আলভেজ। এ বিষয়ে বার্সা ইউনিভার্সাল তাদের টুইটারে এক পোস্টে দাবি করে ভুক্তভোগী নারীকে শারীরিকভাবেও নির্যাতন করেছেন ব্রাজিলিয়ান তারকা। অভিযোগ অবশ্য একেবারে উড়িয়ে দেওয়ার মতো ছিল না। কারণ ওই দিন সেই নারীর সঙ্গে পানশালায় উপস্থিত ছিলেন আলভেজও। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
ক্যারিয়ারে তিনটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জেতা আলভেসকে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম ডিফেন্ডার মনে করা হয়। ক্যারিয়ারে সব মিলিয়ে ৪৩টি ট্রফি জিতেছেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার। এর মধ্যে লিওনেল মেসি-জাভি হার্নান্দেজ-ইনিয়েস্তাদের সঙ্গে ২০০৮ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত বার্সেলোনায় খেলে ২৩টি ট্রফি জিতেছেন। নেইমারের সাবেক ক্লাব ও জাতীয় দলের সতীর্থের শুধু কারাদণ্ডই হয়নি, সঙ্গে বাংলাদেশি মুদ্রায় ১ কোটি ৭৮ লাখ টাকাও জরিমানা করা হয়েছে।