ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দেশ বাঁচাতে, মানুষ বাঁচাতে তরুণ সমাজ আজ জেগে উঠেছে। তারুণ্যের যে রোডমার্চ শুরু হয়েছে তা সরকার পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিলেট অভিমুখে তারুণ্যের রোডমার্চে যাত্রাপথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড়ে নেতকর্মীদের উদ্দেশ্য বক্তৃতাকালে তিনি এসব কথা বলেন। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা, নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন ও খালেদা জিয়াসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তিসহ একদফা দাবিতে এই রোডমার্চ কর্মসূচি করছে বিএনপি।
তিনি বলেন, ঠিক আছে আপনাদের রায় পেলাম। আমরা হরতাল করি নাই, কিন্তু করব না সেই প্রতিজ্ঞাও করিনি। জনগণের চাপের কারণে হরতাল অবরোধ যা যা করা দরকার, গণতান্ত্রিকপন্থায় এই অবৈধ সরকারকে মাটিতে বসিয়ে দেওয়ার জন্য দল, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে সব ধরনের কর্মসূচি হবে। সেই জন্য আপনারা প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আমাদের এবারের আন্দোলন ডু অর ডাই। হয় মরব, নয়তো লড়ব। দেশের মানুষকে মুক্ত করব, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব এবং দেশের মানুষের মালিকানা ফেরত দেব।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে গয়েশ্বর রায় বলেন, আমরা আগুন দিয়ে মানুষ মারি না, আমরা বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াই না। আমরা তো পথচারীদের বস্ত্রহরণ করি না। আমরা এখনও হরতাল দেইনি। হরতাল দেওয়ার দরকার আছে? অবরোধ দেওয়ার দরকার আছে? আপনারা পালন করবেন? এ সময় এই তিন প্রশ্নের উত্তরে নেতাকর্মীরা ‘হ্যাঁ’ বলে জবাব দেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, বর্তমান সরকার ভোট চুরি করে ক্ষমতায় এসেছে। এ সরকার জনগণের ভোটের অধিকার হরণ করেছে। হাজার হাজার বিএনপি দলীয় নেতা-কর্মীদের গুম খুন মামলা দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে এসে পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে যে এ সরকারের আমলে নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। তাই আজকে বিএনপি একদফা আন্দোলনে মাঠে নেমেছে জনগণের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য।
ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আজ এই রোডমার্চ উপলক্ষে ভৈরবের রাস্তায় লাখ মানুষ যেভাবে জেগে উঠেছে, আমরা বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে ঘরে ফিরব।
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলমের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সহসাংগঠনিক সম্পাদক ওয়ারেশ আলী মামুন, যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েলসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
বেলা সোয়া ১১টার দিকে সিলেটের উদ্দেশে গাড়ি বহর নিয়ে নেতাকর্মীরা গয়েশ্বর রায়ের নেতৃত্বে রোডমার্চ শুরু করে। পথে পথে আরও নেতাকর্মীরা যোগ দিচ্ছেন বলে জানান রোডমার্চে থাকা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স। তিনি বলেন, রাস্তার দুধারে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষ রোডমার্চকে সমর্থন দিচ্ছেন।