Dhaka শুক্রবার, ০১ অগাস্ট ২০২৫, ১৭ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে যেন উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে : তারেক রহমান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিটি নাগরিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে ‘দেশে উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া না দিতে পারে’ সেজন্য নারী সমাজকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া দরকার তেমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে যাতে আর কোনোভাবেই কোনোদিন ফ্যাসিবাদ উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এ ব্যাপারে বিশেষ করে নারী সমাজকে অত্যন্ত সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে এবং সতর্ক এবং সজাগ থাকার জন্য আমি সমগ্র বাংলাদেশের মা-বোনদেরকে আহ্বান জানাই।

একই সঙ্গে দেশের গণতন্ত্রকামী জনসাধারণের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আসুন, নারী-পুরুষ-শিশু, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য শহীদদের কাঙ্ক্ষিত একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সবার জন্য একটি নিরাপদ একটি গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান অভিযাত্রায় অতীতের মতো আগামী দিনেও আমরা আমাদের মা-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থন আশা করি দৃঢ়ভাবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত বলেন, এ দেশে যাতে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে। সেজন্য বিশেষ করে নারী সমাজকে ভূমিকা রাখতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, একজন মায়ের চোখে বাংলাদেশ যেমন হওয়া দরকার, তেমন দেশ গড়তে আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবার জন্য নিরাপদ, গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীরা ভূমিকা রেখেছেন। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কোনও রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার ক্ষেত্রে নারীরা অনেকাংশে পিছিয়ে। তাদের অর্থনৈতিক সাবলম্বীতায় বিএনপির বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে। নারীদের শিক্ষাদান এবং অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করা গেলে পারিবারিক সহিংসতা রোধ করা সম্ভব।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে পরিবার হিসেবে যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে পরিবারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে থেকে আমরা যেটা পরিকল্পনা করছি সামনের দিনগুলোতে সুযোগ আসলে ইমপ্লিমেন্ট করার সেটা হচ্ছে যে, প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ লাখ প্রান্তিক পর্যায়ে যে পরিবার আছে তাদের কাছে আমরা ফ্যামিলি কার্ড চালু করবো।

তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের নারী প্রধানের নামে কিন্তু এই ফ্যামিলি কার্ডটি আমরা ইস্যু করবো। এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক অথবা প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। আমরা আশা করছি, এই ধরনের উদ্যোগে পরিবার এবং সমাজে একদিকে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে। অপরদিকে পরিবারগুলোর জন্য সামনে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সুযোগও তৈরি হবে।

তারেক রহমান বলেন, বিগত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক মা তার প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। আমার মাও তার এক সন্তানকে (আরাফাত রহমান কোকো) হারিয়েছেন আপনাদেরই মতো। বহু স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছে, বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন, অনেক মা বহুভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। অনেক পরিবারের পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। আজও শহীদ আর স্বজন হারানোর অসংখ্য মা বোনের শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ অবসানের পর আমাদের সবার সামনে শিশু-নারী-পুরুষ-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ সামনে এসেছে। যেই সুযোগটি এসেছে আমাদের সামনে, একে কাজে লাগিয়ে শহীদদের কাঙ্খিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামীদিন নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নারীদের উন্নয়নে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূল ধারার বাইরে রেখে কখনোই আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করতে পারবো না, নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব নয়। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কখনোই কোনও রাষ্ট্রেই শুধু বাংলাদেশ নয় কোনও রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারে না এবং সে কারণে নারী শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বিএনপি দিনের সকল কর্মপরিকল্পনাগুলোকে সাজিয়েছে বা গ্রহণ করছে।

বিশ্বায়নের এই সময়ে নারীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের সব দেশে নারীদের জন্য শিক্ষা-চাকরি-ব্যবসাসহ সকল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত। শুধু নারী-পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা-দীক্ষায় কমপক্ষে কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন অত্যন্ত জরুরিভাবে, যদি আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

তারেক রহমান বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, বিশেষ করে নারীদের শিক্ষা দান এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী যদি করা যায়, তবে অর্থনৈতিক টানাপড়েনকে কেন্দ্র করে পারিবারিক সহিংসতাও রোধ করবে বা রোধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। সেই লক্ষ্যেই বিএনপির স্লোগান ‘ক্ষমতায়িত নারী শক্তি, পরিবারের মুক্তি’। এ কারণেই বিএনপির নীতি— মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত দক্ষ জনশক্তি তৈরির রাজনীতি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির রাজনীতি।

দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, তাহসিনা রুশদীর লুনা, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, শহীদ পরিবারের মধ্যে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি, সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় টকশো উপস্থাপক হাসিনা আখতার বক্তব্য রাখেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জিম্বাবুয়েকে হারিয়ে ফাইনালে বাংলাদেশ, সঙ্গী দক্ষিণ আফ্রিকা

দেশে যেন উগ্রবাদ মাথাচাড়া দিতে না পারে : তারেক রহমান

প্রকাশের সময় : ০৮:৫০:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ‘প্রতিটি নাগরিকের জন্য গুরুত্বপূর্ণ’ উল্লেখ করে ‘দেশে উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া না দিতে পারে’ সেজন্য নারী সমাজকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তারেক রহমান।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে জাতীয়তাবাদী মহিলা দল আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এই আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, একজন মায়ের চোখে যেমন বাংলাদেশ হওয়া দরকার তেমন একটি বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে চাইলে আগামী জাতীয় নির্বাচন দেশের প্রতিটি নাগরিকের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশে যাতে আর কোনোভাবেই কোনোদিন ফ্যাসিবাদ উগ্রবাদ, চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে এ ব্যাপারে বিশেষ করে নারী সমাজকে অত্যন্ত সতর্ক এবং সজাগ থাকতে হবে এবং সতর্ক এবং সজাগ থাকার জন্য আমি সমগ্র বাংলাদেশের মা-বোনদেরকে আহ্বান জানাই।

একই সঙ্গে দেশের গণতন্ত্রকামী জনসাধারণের উদ্দেশে তারেক রহমান বলেন, আসুন, নারী-পুরুষ-শিশু, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার জন্য শহীদদের কাঙ্ক্ষিত একটি ইনসাফভিত্তিক গণতান্ত্রিক নিরাপদ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকি। সবার জন্য একটি নিরাপদ একটি গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান অভিযাত্রায় অতীতের মতো আগামী দিনেও আমরা আমাদের মা-বোনদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এবং সমর্থন আশা করি দৃঢ়ভাবে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেশের প্রতিটি মানুষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত বলেন, এ দেশে যাতে ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ ও চরমপন্থা মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে। সেজন্য বিশেষ করে নারী সমাজকে ভূমিকা রাখতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, একজন মায়ের চোখে বাংলাদেশ যেমন হওয়া দরকার, তেমন দেশ গড়তে আগামী নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবার জন্য নিরাপদ, গণতান্ত্রিক মানবিক বাংলাদেশ গড়তে আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে নারীরা ভূমিকা রেখেছেন। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কোনও রাষ্ট্রই এগিয়ে যেতে পারবে না। কিন্তু দেশের প্রেক্ষাপটে অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার ক্ষেত্রে নারীরা অনেকাংশে পিছিয়ে। তাদের অর্থনৈতিক সাবলম্বীতায় বিএনপির বেশকিছু পরিকল্পনা রয়েছে। নারীদের শিক্ষাদান এবং অর্থনৈতিক ভাবে স্বাবলম্বী করা গেলে পারিবারিক সহিংসতা রোধ করা সম্ভব।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশে পরিবার হিসেবে যদি আমরা চিন্তা করি, তাহলে পরিবারের সংখ্যা প্রায় চার কোটি। এর মধ্যে অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারগুলোর মধ্যে থেকে আমরা যেটা পরিকল্পনা করছি সামনের দিনগুলোতে সুযোগ আসলে ইমপ্লিমেন্ট করার সেটা হচ্ছে যে, প্রথম পর্যায়ে কমপক্ষে ৫০ লাখ প্রান্তিক পর্যায়ে যে পরিবার আছে তাদের কাছে আমরা ফ্যামিলি কার্ড চালু করবো।

তিনি বলেন, ইনশাআল্লাহ আসন্ন নির্বাচনে বিএনপি জনগণের রায়ে রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে পরিবারের নারী প্রধানের নামে কিন্তু এই ফ্যামিলি কার্ডটি আমরা ইস্যু করবো। এর লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হচ্ছে, প্রান্তিক পরিবারগুলোকে প্রতি মাসে রাষ্ট্রীয়ভাবে আর্থিক অথবা প্রয়োজনীয় খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হবে। আমরা আশা করছি, এই ধরনের উদ্যোগে পরিবার এবং সমাজে একদিকে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন ঘটবে। অপরদিকে পরিবারগুলোর জন্য সামনে ধীরে ধীরে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার সুযোগও তৈরি হবে।

তারেক রহমান বলেন, বিগত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সময় অনেক মা তার প্রিয় সন্তান হারিয়েছেন। আমার মাও তার এক সন্তানকে (আরাফাত রহমান কোকো) হারিয়েছেন আপনাদেরই মতো। বহু স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামীকে হারিয়েছে, বোন তার ভাইকে হারিয়েছেন, অনেক মা বহুভাবে নির্যাতিত-নিপীড়িত হয়েছেন। অনেক পরিবারের পারিবারিক বন্ধন ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। আজও শহীদ আর স্বজন হারানোর অসংখ্য মা বোনের শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ অবসানের পর আমাদের সবার সামনে শিশু-নারী-পুরুষ-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠনের সুযোগ সামনে এসেছে। যেই সুযোগটি এসেছে আমাদের সামনে, একে কাজে লাগিয়ে শহীদদের কাঙ্খিত বাংলাদেশ গঠনের জন্য আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আগামীদিন নারীদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

নারীদের উন্নয়নে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এবং সাবেক প্রধান বেগম খালেদা জিয়ার নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন তারেক রহমান।

তিনি বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে, দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীকে রাষ্ট্র এবং রাজনীতির মূল ধারার বাইরে রেখে কখনোই আমরা নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করতে পারবো না, নিরাপদ বাংলাদেশ গঠন করা সম্ভব নয়। নারী শক্তিকে কর্মপরিকল্পনার বাইরে রেখে কখনোই কোনও রাষ্ট্রেই শুধু বাংলাদেশ নয় কোনও রাষ্ট্র এগিয়ে যেতে পারে না এবং সে কারণে নারী শক্তিকে প্রাধান্য দিয়ে দেশের অর্ধেক সংখ্যক নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে বিএনপি দিনের সকল কর্মপরিকল্পনাগুলোকে সাজিয়েছে বা গ্রহণ করছে।

বিশ্বায়নের এই সময়ে নারীদের জন্য শিক্ষা ও চাকরি বিষয়টি অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিশ্বের সব দেশে নারীদের জন্য শিক্ষা-চাকরি-ব্যবসাসহ সকল সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত। শুধু নারী-পুরুষ ভেদাভেদ না করে সবাইকে শিক্ষা-দীক্ষায় কমপক্ষে কর্মদক্ষ করে গড়ে তোলা প্রয়োজন অত্যন্ত জরুরিভাবে, যদি আমরা দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই।

তারেক রহমান বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, বিশেষ করে নারীদের শিক্ষা দান এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী যদি করা যায়, তবে অর্থনৈতিক টানাপড়েনকে কেন্দ্র করে পারিবারিক সহিংসতাও রোধ করবে বা রোধ করার ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। সেই লক্ষ্যেই বিএনপির স্লোগান ‘ক্ষমতায়িত নারী শক্তি, পরিবারের মুক্তি’। এ কারণেই বিএনপির নীতি— মানবিক মূল্যবোধে উজ্জীবিত দক্ষ জনশক্তি তৈরির রাজনীতি, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির রাজনীতি।

দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে ও মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, জেএসডির সহসভাপতি তানিয়া রব, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, তাহসিনা রুশদীর লুনা, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা, শহীদ পরিবারের মধ্যে সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম তুলি, সামাজিকযোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় টকশো উপস্থাপক হাসিনা আখতার বক্তব্য রাখেন।