Dhaka বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে কোটিপতির সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে তা উদ্বেগজনক : নজরুল ইসলাম খান

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত কয়েক বছরে বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে তা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

বুধবার (০৫ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ জিয়া, শ্রমিক জাগরণ, উৎপাদন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে কোটিপতির সংখ্যা সাংঘাতিক রকমে বেড়েছে। বিশ্বের বহু দেশের চেয়ে বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে বেশি। এটা উদ্বেগের বিষয়। অথচ বাংলাদেশে কোটি কোটি মানুষ আরও বেশি দরিদ্র হয়েছে। এই যে উন্নয়ন, এ উন্নয়ন অসম উন্নয়ন। কিছু মানুষ আরও বড়লোক হবে, কিছু মানুষ আরও দরিদ্র হবে। এটা সবার জন্য উন্নয়ন না।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ৭ নভেম্বরের বিপ্লবই স্বাধীন বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার পথ খুলে দিয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্র মানা হয় নাই বলেই কিন্তু যুদ্ধটা হয়েছে। জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ যারা হয়েছিলেন তাদের হাতে যদি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হতো তাহলে মুক্তিযুদ্ধই হয়তো হতো না।

তিনি বলেন, মানুষের অভাব-অনটন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জীবন-জীবিকার অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ায় ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পর তৎকালীন সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে, যা মানুষের মৌলিক অধিকার স্থগিত করে দেয়।

১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে সংবিধানের পরিবর্তন ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একদলীয় স্বৈরশাসন (বাকশাল) প্রতিষ্ঠার তীব্র সমালোচনা করেন নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ ব্যবস্থায় সব ক্ষমতা (রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, বিচারিক) একজনের হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছিল এবং বিচার বিভাগকে পদানত করা হয়। বহু পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার সাংবাদিককে বেকার করা হয়।

তিনি বলেন, এ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ৩ নভেম্বর সামরিক অভ্যুত্থানে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী করা হয়। তবে সাধারণ মানুষ ও সেনাবাহিনীর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এতে ক্ষুব্ধ হয়। ফলস্বরূপ, মাত্র চার দিনের মধ্যে ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতা বিপ্লব সংঘটিত হয়, যার মাধ্যমে শহীদ জিয়া মুক্ত হন।

তিনি আরো বলেন, তৎকালীন বাংলাদেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছিল। দেশে কোনো সংসদ ছিল না, মন্ত্রিসভা ছিল না এবং সামরিক বাহিনীসহ সারা দেশে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছিল। এ চরম সংকটের সময়ই মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে দেশ পরিচালনার সাহসিকতাপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর শহীদ জিয়া যে সব যুগান্তকারী কাজ করেন, তার মধ্যে রয়েছে কৃষি বিপ্লব। দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে নদী ও খাল খনন কর্মসূচি শুরু করেন এবং সেচের জন্য ডিপ টিউবওয়েল ও পাওয়ার টিলারের ব্যবস্থা করেন। এর ফলে মাত্র দুই বছরে খাদ্য উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হয়।

তিনি বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্পকারখানাগুলোকে পুনরায় চালু করা হয়। বিশেষ করে চিনি উৎপাদন এত বাড়ে যে বাংলাদেশ রপ্তানি করতে সক্ষম হয়। শহীদ জিয়ার আমলেই প্রথম শ্রমিকদের জন্য ইনসেন্টিভ চালু করা হয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, বেকারত্ব নিরসনে শহীদ জিয়া গার্মেন্টস শিল্পকে শিল্প হিসেবে মর্যাদা দেন এবং এর উন্নয়নের জন্য ‘ব্যাক টু ব্যাক এলসি’ ও ‘বন্ডেড ওয়ারহাউস’ এর ব্যবস্থা করেন। আজকে ৪০ লক্ষাধিক মানুষ এ শিল্পে কাজ করে।

তিনি বলেন, শহীদ জিয়া মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে ১৯৭৬ সালে ছয়টি দেশে ৮ হাজার ৫০০ শ্রমিক পাঠানোর মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানির সূচনা করেন, যা আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি শক্তিশালী স্তম্ভ। বর্তমানে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি বিদেশে কর্মরত।

তিনি আরও বলেন, শহীদ জিয়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মাত্র দুটি ট্রলার দিয়ে মাছ শিকার শুরু করার উদ্যোগ নেন, যা থেকে তার জীবদ্দশায়ই ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি মাছ রপ্তানি হয়েছিল।

বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান তিনটি স্তম্ভ কৃষি, তৈরি পোশাক এবং রেমিট্যান্স এগুলো সবই শহীদ জিয়ার হাত ধরে এবং ৭ নভেম্বরের ফলেই এসেছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, একজন সামরিক শাসক হয়েও জিয়াউর রহমান একদলীয় স্বৈরশাসনের গোরস্থানের উপর বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাগান রচনা করেছিলেন। তার আমলেই বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। তিনি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বহুমত ও বহু দল-এর রাজনীতি নিশ্চিত করেন।

শ্রমিকদের কল্যাণেও জিয়াউর রহমানের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ জিয়া ১৯টি সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেন এবং শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউট (আইআরআই), লেবার ওয়েলফেয়ার সেন্টার ও আবাসন সুবিধা নির্মাণের উদ্যোগ নেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ জিয়া সবার জন্য উন্নয়ন চেয়েছিলেন, কিছু সংখ্যক মানুষের জন্য নয়। বর্তমানে কোটিপতির সংখ্যা বাড়লেও দরিদ্র মানুষ আরও গরিব হচ্ছে। জিয়াউর রহমান সবার জন্য কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উন্নয়ন, নারীর উন্নয়ন, এবং পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড গঠনসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

নজরুল ইসলাম খান জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, শহীদ জিয়া যে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারা শুরু করেছিলেন, তা এগিয়ে নিতে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে।

তিনি বলেন, মনে রাখবেন- সুযোগ বারবার আসে না। ৩১ দফা যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, আপনারা নিশ্চয়ই সেটা দেখেছেনৃসেখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বলা আছে, শ্রমিকদের কথা বিশেষ করে বলা আছে। আমরা যদি এ পরিবর্তনে আমাদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারি তাহলে আমাদের আকাঙ্ক্ষা অনেক কিছুই পূরণ হবে, যেটা শহীদ জিয়া শুরু করেছিলেন, আমরা সেগুলো শেষ করার চেষ্টা করতে পারব। আমি বিশ্বাস করি যে, আপনারা এখানে যারা উপস্থিত আছেন তারা সবাই মিলে চেষ্টা করবেন- শুধু ঢাকায় না, আপনি এখানে না, যার যেখানে বাড়ি, যার যেখানে যোগাযোগ আছে, সব জায়গায় চেষ্টা করবেন; যাতে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীরা বিজয়ী হন।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার-প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, শ্রমিক দলের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম বিষয়ক সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, ফিরোজ উজ জামান মোল্লা, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিমসহ শ্রমিক নেতারা বক্তব্য রাখেন।

আবহাওয়া

খুরশীদ আলমকে হাইকোর্টের বিচারপতি পদ থেকে অপসারণ

দেশে কোটিপতির সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে তা উদ্বেগজনক : নজরুল ইসলাম খান

প্রকাশের সময় : ০৯:০৯:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

গত কয়েক বছরে বিভিন্ন দেশের তুলনায় বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা যেভাবে বেড়েছে তা উদ্বেগজনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

বুধবার (০৫ নভেম্বর) রাজধানীর কাকরাইল ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত ‘ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে শহীদ জিয়া, শ্রমিক জাগরণ, উৎপাদন ও উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে গত কয়েক বছরে কোটিপতির সংখ্যা সাংঘাতিক রকমে বেড়েছে। বিশ্বের বহু দেশের চেয়ে বাংলাদেশে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে বেশি। এটা উদ্বেগের বিষয়। অথচ বাংলাদেশে কোটি কোটি মানুষ আরও বেশি দরিদ্র হয়েছে। এই যে উন্নয়ন, এ উন্নয়ন অসম উন্নয়ন। কিছু মানুষ আরও বড়লোক হবে, কিছু মানুষ আরও দরিদ্র হবে। এটা সবার জন্য উন্নয়ন না।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ৭ নভেম্বরের বিপ্লবই স্বাধীন বাংলাদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতার পথ খুলে দিয়েছিল। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্র মানা হয় নাই বলেই কিন্তু যুদ্ধটা হয়েছে। জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ যারা হয়েছিলেন তাদের হাতে যদি ক্ষমতা দিয়ে দেওয়া হতো তাহলে মুক্তিযুদ্ধই হয়তো হতো না।

তিনি বলেন, মানুষের অভাব-অনটন বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং জীবন-জীবিকার অধিকার ক্ষুণ্ন হওয়ায় ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পর তৎকালীন সরকার জরুরি অবস্থা জারি করে, যা মানুষের মৌলিক অধিকার স্থগিত করে দেয়।

১৯৭৫ সালের জানুয়ারিতে সংবিধানের পরিবর্তন ঘটিয়ে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে কবর দিয়ে একদলীয় স্বৈরশাসন (বাকশাল) প্রতিষ্ঠার তীব্র সমালোচনা করেন নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ ব্যবস্থায় সব ক্ষমতা (রাজনৈতিক, প্রশাসনিক, অর্থনৈতিক, বিচারিক) একজনের হাতে কেন্দ্রীভূত করা হয়েছিল এবং বিচার বিভাগকে পদানত করা হয়। বহু পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে হাজার হাজার সাংবাদিককে বেকার করা হয়।

তিনি বলেন, এ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর ৩ নভেম্বর সামরিক অভ্যুত্থানে মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী করা হয়। তবে সাধারণ মানুষ ও সেনাবাহিনীর সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ এতে ক্ষুব্ধ হয়। ফলস্বরূপ, মাত্র চার দিনের মধ্যে ৭ নভেম্বর সিপাহী-জনতা বিপ্লব সংঘটিত হয়, যার মাধ্যমে শহীদ জিয়া মুক্ত হন।

তিনি আরো বলেন, তৎকালীন বাংলাদেশের ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছিল। দেশে কোনো সংসদ ছিল না, মন্ত্রিসভা ছিল না এবং সামরিক বাহিনীসহ সারা দেশে বিশৃঙ্খলা বিরাজ করছিল। এ চরম সংকটের সময়ই মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে দেশ পরিচালনার সাহসিকতাপূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর শহীদ জিয়া যে সব যুগান্তকারী কাজ করেন, তার মধ্যে রয়েছে কৃষি বিপ্লব। দুর্ভিক্ষপীড়িত দেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়াতে তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেন। তিনি স্বেচ্ছাশ্রমে নদী ও খাল খনন কর্মসূচি শুরু করেন এবং সেচের জন্য ডিপ টিউবওয়েল ও পাওয়ার টিলারের ব্যবস্থা করেন। এর ফলে মাত্র দুই বছরে খাদ্য উৎপাদন প্রায় দ্বিগুণ হয়।

তিনি বলেন, বন্ধ হয়ে যাওয়া শিল্পকারখানাগুলোকে পুনরায় চালু করা হয়। বিশেষ করে চিনি উৎপাদন এত বাড়ে যে বাংলাদেশ রপ্তানি করতে সক্ষম হয়। শহীদ জিয়ার আমলেই প্রথম শ্রমিকদের জন্য ইনসেন্টিভ চালু করা হয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, বেকারত্ব নিরসনে শহীদ জিয়া গার্মেন্টস শিল্পকে শিল্প হিসেবে মর্যাদা দেন এবং এর উন্নয়নের জন্য ‘ব্যাক টু ব্যাক এলসি’ ও ‘বন্ডেড ওয়ারহাউস’ এর ব্যবস্থা করেন। আজকে ৪০ লক্ষাধিক মানুষ এ শিল্পে কাজ করে।

তিনি বলেন, শহীদ জিয়া মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন করে ১৯৭৬ সালে ছয়টি দেশে ৮ হাজার ৫০০ শ্রমিক পাঠানোর মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানির সূচনা করেন, যা আজ বাংলাদেশের অর্থনীতির একটি শক্তিশালী স্তম্ভ। বর্তমানে এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি বিদেশে কর্মরত।

তিনি আরও বলেন, শহীদ জিয়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মাত্র দুটি ট্রলার দিয়ে মাছ শিকার শুরু করার উদ্যোগ নেন, যা থেকে তার জীবদ্দশায়ই ৫০ কোটি ডলারেরও বেশি মাছ রপ্তানি হয়েছিল।

বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রধান তিনটি স্তম্ভ কৃষি, তৈরি পোশাক এবং রেমিট্যান্স এগুলো সবই শহীদ জিয়ার হাত ধরে এবং ৭ নভেম্বরের ফলেই এসেছে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, একজন সামরিক শাসক হয়েও জিয়াউর রহমান একদলীয় স্বৈরশাসনের গোরস্থানের উপর বহুদলীয় গণতন্ত্রের বাগান রচনা করেছিলেন। তার আমলেই বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৭৯ সালের নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। তিনি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বহুমত ও বহু দল-এর রাজনীতি নিশ্চিত করেন।

শ্রমিকদের কল্যাণেও জিয়াউর রহমানের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ জিয়া ১৯টি সেক্টরে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেন এবং শ্রমিকদের জন্য আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ইনস্টিটিউট (আইআরআই), লেবার ওয়েলফেয়ার সেন্টার ও আবাসন সুবিধা নির্মাণের উদ্যোগ নেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, শহীদ জিয়া সবার জন্য উন্নয়ন চেয়েছিলেন, কিছু সংখ্যক মানুষের জন্য নয়। বর্তমানে কোটিপতির সংখ্যা বাড়লেও দরিদ্র মানুষ আরও গরিব হচ্ছে। জিয়াউর রহমান সবার জন্য কর্মসংস্থান, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উন্নয়ন, নারীর উন্নয়ন, এবং পল্লী বিদ্যুৎ বোর্ড গঠনসহ নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

নজরুল ইসলাম খান জনগণের প্রতি আহ্বান জানান, শহীদ জিয়া যে উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের ধারা শুরু করেছিলেন, তা এগিয়ে নিতে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীদের বিজয়ী করার জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে।

তিনি বলেন, মনে রাখবেন- সুযোগ বারবার আসে না। ৩১ দফা যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, আপনারা নিশ্চয়ই সেটা দেখেছেনৃসেখানে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কথা বলা আছে, শ্রমিকদের কথা বিশেষ করে বলা আছে। আমরা যদি এ পরিবর্তনে আমাদের পক্ষে নিয়ে আসতে পারি তাহলে আমাদের আকাঙ্ক্ষা অনেক কিছুই পূরণ হবে, যেটা শহীদ জিয়া শুরু করেছিলেন, আমরা সেগুলো শেষ করার চেষ্টা করতে পারব। আমি বিশ্বাস করি যে, আপনারা এখানে যারা উপস্থিত আছেন তারা সবাই মিলে চেষ্টা করবেন- শুধু ঢাকায় না, আপনি এখানে না, যার যেখানে বাড়ি, যার যেখানে যোগাযোগ আছে, সব জায়গায় চেষ্টা করবেন; যাতে আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীরা বিজয়ী হন।

শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে ও প্রচার-প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুরের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন, শ্রমিক দলের সমন্বয়ক শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, শ্রম বিষয়ক সহ-সম্পাদক হুমায়ুন কবীর খান, ফিরোজ উজ জামান মোল্লা, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম খান নাসিমসহ শ্রমিক নেতারা বক্তব্য রাখেন।