Dhaka শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে এক চেতনার বদলে আরেক চেতনার উদ্ভব হয়েছে : রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের লোকজন সর্বত্র অবস্থান করে আছে। বর্তমানে দেশে এক চেতনার বদলে আরেক চেতনার উদ্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ কেন? তাহলে কি নতুন করে শেখ হাসিনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে?

শনিবার (১৬ আগস্ট) প্রেস ক্লাবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জুলাই আন্দোলনে শিশু-কিশোররা আবাবিল পাখির ঝাঁকের মতো রাজপথে নেমে এসেছিল। এর মাধ্যমে আমরা মুক্তি পেয়েছি, গণতন্ত্রও মুক্তি পেয়েছে। তবে অভ্যুত্থানের পর তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি শুনেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি তিনি তার কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে বলেছেন- তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে আমরা যেখানেই যাই সেখানেই শুনি, একটি সংগঠনের লোক তারা সেখানে বসে আছে। ডিসি কে? তারা বলছে এইটা একটি বিশেষ দলের লোক। ওরা ডিসিগিরি করছে না ওখানে তাদের সংগঠনের কাজ করছে।

তিনি বলেন, আমি এমনও শুনেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি তিনি তার কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে বলেছেন তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না। এটা একদম সত্য কথা আজকে আমাকে বলেছে, আমি আপনাদের সামনে কোনো মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছি না। এ জন্য আহনাফ, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছে? নিজের শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে পুলিশের গুলি বরণ করে নিয়েছে এই গণতন্ত্রের জন্য?

বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনা যে চেতনা তৈরি করেছিলেন সেই পাঁতানো চেতনার জন্যই কি এত রক্তপাত এত হানাহানি? শেখ হাসিনা যেমন তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই বলতো একে ধরো, এদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দাও। আবার নতুন করে দেখছি ধর্মের নামে অন্য চেতনা। যে রুকন না হলে চাকরি করতে পারবে না।

রিজভী বলেন, অনেকেই উপদেষ্টার পদ পেয়েছেন, অনেকেই ভালো আছেন। তাহলে কি শেখ হাসিনার যে অপশাসন, দুঃশাসন, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, টাকা লুট, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য, চাকরি বাণিজ্যের পুনরাবৃত্তি নতুন আঙ্গিকে মানুষ দেখতে চায়? এই জন্য প্রায় দেড় হাজারের মতো শিশু-কিশোর, তরুণ, শ্রমিক, রিকশাচালকরা জীবন দিয়েছেন? এই উপলব্ধি তো সবার হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, এখনো তো নির্বাচন হয়নি। কে ক্ষমতায় যাবে, জনগণ কাকে ভোট দিবে এটা তো এখনো নির্দিষ্ট হয়নি তাহলে এই কথাগুলো এখনই কেন আসছে? এগুলো কেন আমাদেরকে শুনতে হচ্ছে?

রিজভী বলেন, সরকারি দপ্তর থেকে অনেকেই আসছেন- তারা বলছেন আমরা কি করব? আমরা যদি ওই দলের সদস্য রুকন না হই আমরা তো চাকরি করতে পারবো না। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ভূত তার আত্মারা আবার নতুন করে নতুন কায়দায় নতুন চেতনায় ভর করেছে। এটার জন্য তো এই ছেলেরা জীবন দেয়নি।

বিএনপি নেতা আরও বলেন, আমরা সেই গণতন্ত্র চেয়েছি যে গণতন্ত্রে এই দেশের ভোটাররা ভোট দিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবে। এই জন্যই আমাদের লড়াই, এজন্যই আমাদের এত সংগ্রাম, এত ত্যাগ। এর জন্যই স্কুল, কলেজের ছেলেরা এত রক্ত দিয়েছে নিজেদের জীবন দিয়েছে। এখানে এক চেতনাধারী বিদায় নিয়ে আরেক চেতনাধারী ক্ষমতার মধ্যে বসবে এটা তো জনগণ প্রত্যাশা করে না।

তিনি বলেন, বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে সেই চেতনাধারীরা। তাদের লোক হতে হবে। তাদের লোক ছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবেন না, কোনো চাকরি হবে না। আবার সেই একমাত্রিক একটি দেশ গড়ার প্রচেষ্টা চলছে, গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রের জন্য তো দীর্ঘ ষোল বছর বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করেনি। এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গোটা দেশকে সংগঠিত করেননি।

সংগঠনের সভাপতি মীর সরফৎ আলী সপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম,সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ প্রমুখ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নিলে বিদেশে-অনলাইনে পরে থাকতে হবে : তারেককে ইঙ্গিত করে পাটওয়ারী

দেশে এক চেতনার বদলে আরেক চেতনার উদ্ভব হয়েছে : রিজভী

প্রকাশের সময় : ০৪:০৩:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

একটি নির্দিষ্ট সংগঠনের লোকজন সর্বত্র অবস্থান করে আছে। বর্তমানে দেশে এক চেতনার বদলে আরেক চেতনার উদ্ভব হয়েছে বলে মন্তব্য করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, যারা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ কেন? তাহলে কি নতুন করে শেখ হাসিনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে?

শনিবার (১৬ আগস্ট) প্রেস ক্লাবে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান ও ফ্যাসিবাদ পতনের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জুলাই আন্দোলনে শিশু-কিশোররা আবাবিল পাখির ঝাঁকের মতো রাজপথে নেমে এসেছিল। এর মাধ্যমে আমরা মুক্তি পেয়েছি, গণতন্ত্রও মুক্তি পেয়েছে। তবে অভ্যুত্থানের পর তাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ তোলা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমি শুনেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি তিনি তার কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে বলেছেন- তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে আমরা যেখানেই যাই সেখানেই শুনি, একটি সংগঠনের লোক তারা সেখানে বসে আছে। ডিসি কে? তারা বলছে এইটা একটি বিশেষ দলের লোক। ওরা ডিসিগিরি করছে না ওখানে তাদের সংগঠনের কাজ করছে।

তিনি বলেন, আমি এমনও শুনেছি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যিনি ডিজি তিনি তার কর্মকর্তা কর্মচারীদেরকে বলেছেন তোমরা রুকন না হলে তোমাদের চাকরি থাকবে না। এটা একদম সত্য কথা আজকে আমাকে বলেছে, আমি আপনাদের সামনে কোনো মিথ্যা কথা বানিয়ে বলছি না। এ জন্য আহনাফ, মুগ্ধ, আবু সাঈদ, ওয়াসিম শেখ হাসিনার পুলিশের গুলিতে জীবন দিয়েছে? নিজের শার্টের বোতাম খুলে দিয়ে পুলিশের গুলি বরণ করে নিয়েছে এই গণতন্ত্রের জন্য?

বিএনপি নেতা বলেন, শেখ হাসিনা যে চেতনা তৈরি করেছিলেন সেই পাঁতানো চেতনার জন্যই কি এত রক্তপাত এত হানাহানি? শেখ হাসিনা যেমন তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ করলেই বলতো একে ধরো, এদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে দাও। আবার নতুন করে দেখছি ধর্মের নামে অন্য চেতনা। যে রুকন না হলে চাকরি করতে পারবে না।

রিজভী বলেন, অনেকেই উপদেষ্টার পদ পেয়েছেন, অনেকেই ভালো আছেন। তাহলে কি শেখ হাসিনার যে অপশাসন, দুঃশাসন, চুরি, ডাকাতি, সন্ত্রাস, টাকা লুট, চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য, চাকরি বাণিজ্যের পুনরাবৃত্তি নতুন আঙ্গিকে মানুষ দেখতে চায়? এই জন্য প্রায় দেড় হাজারের মতো শিশু-কিশোর, তরুণ, শ্রমিক, রিকশাচালকরা জীবন দিয়েছেন? এই উপলব্ধি তো সবার হওয়া উচিত।

তিনি বলেন, এখনো তো নির্বাচন হয়নি। কে ক্ষমতায় যাবে, জনগণ কাকে ভোট দিবে এটা তো এখনো নির্দিষ্ট হয়নি তাহলে এই কথাগুলো এখনই কেন আসছে? এগুলো কেন আমাদেরকে শুনতে হচ্ছে?

রিজভী বলেন, সরকারি দপ্তর থেকে অনেকেই আসছেন- তারা বলছেন আমরা কি করব? আমরা যদি ওই দলের সদস্য রুকন না হই আমরা তো চাকরি করতে পারবো না। শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও তার ভূত তার আত্মারা আবার নতুন করে নতুন কায়দায় নতুন চেতনায় ভর করেছে। এটার জন্য তো এই ছেলেরা জীবন দেয়নি।

বিএনপি নেতা আরও বলেন, আমরা সেই গণতন্ত্র চেয়েছি যে গণতন্ত্রে এই দেশের ভোটাররা ভোট দিয়ে যাকে ইচ্ছা তাকে রাষ্ট্র ক্ষমতায় বসাবে। এই জন্যই আমাদের লড়াই, এজন্যই আমাদের এত সংগ্রাম, এত ত্যাগ। এর জন্যই স্কুল, কলেজের ছেলেরা এত রক্ত দিয়েছে নিজেদের জীবন দিয়েছে। এখানে এক চেতনাধারী বিদায় নিয়ে আরেক চেতনাধারী ক্ষমতার মধ্যে বসবে এটা তো জনগণ প্রত্যাশা করে না।

তিনি বলেন, বড় বড় ইউনিভার্সিটিতে সেই চেতনাধারীরা। তাদের লোক হতে হবে। তাদের লোক ছাড়া কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারবেন না, কোনো চাকরি হবে না। আবার সেই একমাত্রিক একটি দেশ গড়ার প্রচেষ্টা চলছে, গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রের জন্য তো দীর্ঘ ষোল বছর বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করেনি। এর জন্য বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গোটা দেশকে সংগঠিত করেননি।

সংগঠনের সভাপতি মীর সরফৎ আলী সপুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.আব্দুল মঈন খান, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম,সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী নেওয়াজ প্রমুখ।