Dhaka রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দেশে আংশিক দুর্ভিক্ষ চলছে : জি এম কাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

একটি গোষ্ঠী দেশের মালিক বনে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলের নেতা জি এম কাদের।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছিল এদেশের মানুষ বৈষম্য দূর করার জন্য। কিন্তু বর্তমান সরকার বৈষম্য সৃষ্টি করছে। একটি গোষ্ঠী দেশের মালিক। আর কারও খবর নেই। ৪ কোটি মানুষ ক্রয়ক্ষমতার বাইরে আছে। দেশে একটি দুর্ভিক্ষের অবস্থা চলছে, আংশিক দুর্ভিক্ষ চলছে।

বুধবার (২০ মার্চ) বিকালে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারি হিসাবেই দেশের প্রায় ২৬ ভাগ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই বিশাল অংশ ধার করে খাবার ক্রয় করছে। খাদ্যদ্রব্য তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ৪ কোটি মানুষ এমন বাস্তবতা মোকাবিলা করছে। যারা পরিবারভুক্ত নয় তারা এই হিসাবের বাইরে। তারা বছরে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করছে খাবার ক্রয় করতে। ঋণ না করলে তারা খাবার পাচ্ছে না। যারা ধার পরিশোধ করতে পারে, তাদেরই মানুষ ধার দেয়। প্রায় চার কোটি মানুষ খাদ্য কিনতে ধার করছে কিন্তু হতদরিদ্ররা তো কারো কাছে ধার পায় না, তারা কী খেয়ে তিনবেলা খেতে পাচ্ছে? যারা কারো কাছে ধার পায় না এমন অন্তত আরও ১০ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে।

জিএম কাদের বলেন, অমর্ত্য সেন বলেছিলেন পণ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় ক্রয় ক্ষমতার অভাবে। সরকার বলে বেড়ায়, দেশে নাকি রুগ্ন মানুষ দেখা যায় না। এটা কী সত্য কথা? আমাদের বেশির ভাগ মানুষ অর্থ কষ্টে আছে। সরকার যদি না বোঝে দেশের মানুষ কষ্টে আছে তাহলে সমাধান হবে কিভাবে? মানুষ যখন মোটেও খাদ্য কিনতে পারবে না, না খেয়ে মারা যাবে- সে অবস্থা এখনো আসেনি। তবে, সে দিকেই তো দেশ যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সকল কাজ জনগণের স্বার্থে করেছিলেন। জনগণও সব সময় তাকে নন্দিত করে রেখেছিলেন। এরশাদকে দেখলে পঙ্গপালের মত মানুষ ছুটে আসতেন। আমরা সঠিকভাবে রাজনীতি করে এরশাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। তার সময়ে সবাই আইনের মধ্যেই ছিলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে ছিলেন না। বিরোধীদলীয় কর্মকাণ্ড কোন রকম বাঁধা দেওয়া হতো না। নব্বই পরবর্তী যেকোন সময়ের চেয়ে এরশাদের সময় বেশি গণতন্ত্র ভোগ করেছে দেশের মানুষ। ইতিহাস একদিন সাক্ষ্য দিবে।

তিনি বলেন, কোন দল যদি তাদের নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে টিকতে না পারে তাহলে সামনের দিনে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অস্বাভাবিক রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই স্বাভাবিক রাজনীতি চলতে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিরোধীদলকে কাজ করতে দেওয়া সরকারেরই দায়িত্ব।

বিরোীদলীয় চিফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যারা বলছেন, জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে- তারা ভুল বলছেন। জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে না। রাজনীতি হচ্ছে একটি চলন্ত ট্রেনের মত। চলার পথে কেউ নেমে যাবে আবার কেউ নতুন করে উঠবে, এভাবেই রাজনীতি চলছে। গুটি কয়েক লোক চলে গেলেও জাতীয় পার্টির ক্ষতি হবে না, জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে নিজস্ব গতিতে। জাতীয় পার্টিতে নতুন প্রজন্ম যোগ দেবে। আমরা তাদের সাথে নিয়ে রাজনীতি এগিয়ে নেবো।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, এ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, কৃষক পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম খান।

এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে সকালে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপির নেতৃত্বে কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোরআন তেলাওয়াত ও বিকেলে জাতীয় পার্টি মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক জহিরুল আলম রুবেলের সভাপতিত্বে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কারের ভবিষ্যৎ পরবর্তী সংসদের হাতে ছেড়ে দেব না : নাহিদ ইসলাম

দেশে আংশিক দুর্ভিক্ষ চলছে : জি এম কাদের

প্রকাশের সময় : ০৯:২১:২৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ মার্চ ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

একটি গোষ্ঠী দেশের মালিক বনে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদে বিরোধী দলের নেতা জি এম কাদের।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ করেছিল এদেশের মানুষ বৈষম্য দূর করার জন্য। কিন্তু বর্তমান সরকার বৈষম্য সৃষ্টি করছে। একটি গোষ্ঠী দেশের মালিক। আর কারও খবর নেই। ৪ কোটি মানুষ ক্রয়ক্ষমতার বাইরে আছে। দেশে একটি দুর্ভিক্ষের অবস্থা চলছে, আংশিক দুর্ভিক্ষ চলছে।

বুধবার (২০ মার্চ) বিকালে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীর কার্যালয় মিলনায়তনে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ৯৫তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সরকারি হিসাবেই দেশের প্রায় ২৬ ভাগ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এই বিশাল অংশ ধার করে খাবার ক্রয় করছে। খাদ্যদ্রব্য তাদের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। ৪ কোটি মানুষ এমন বাস্তবতা মোকাবিলা করছে। যারা পরিবারভুক্ত নয় তারা এই হিসাবের বাইরে। তারা বছরে কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা ঋণ করছে খাবার ক্রয় করতে। ঋণ না করলে তারা খাবার পাচ্ছে না। যারা ধার পরিশোধ করতে পারে, তাদেরই মানুষ ধার দেয়। প্রায় চার কোটি মানুষ খাদ্য কিনতে ধার করছে কিন্তু হতদরিদ্ররা তো কারো কাছে ধার পায় না, তারা কী খেয়ে তিনবেলা খেতে পাচ্ছে? যারা কারো কাছে ধার পায় না এমন অন্তত আরও ১০ কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে।

জিএম কাদের বলেন, অমর্ত্য সেন বলেছিলেন পণ্যের অভাবে দুর্ভিক্ষ হয় না, দুর্ভিক্ষ হয় ক্রয় ক্ষমতার অভাবে। সরকার বলে বেড়ায়, দেশে নাকি রুগ্ন মানুষ দেখা যায় না। এটা কী সত্য কথা? আমাদের বেশির ভাগ মানুষ অর্থ কষ্টে আছে। সরকার যদি না বোঝে দেশের মানুষ কষ্টে আছে তাহলে সমাধান হবে কিভাবে? মানুষ যখন মোটেও খাদ্য কিনতে পারবে না, না খেয়ে মারা যাবে- সে অবস্থা এখনো আসেনি। তবে, সে দিকেই তো দেশ যাচ্ছে।

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ সকল কাজ জনগণের স্বার্থে করেছিলেন। জনগণও সব সময় তাকে নন্দিত করে রেখেছিলেন। এরশাদকে দেখলে পঙ্গপালের মত মানুষ ছুটে আসতেন। আমরা সঠিকভাবে রাজনীতি করে এরশাদের স্বপ্নের নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো। তার সময়ে সবাই আইনের মধ্যেই ছিলেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে ছিলেন না। বিরোধীদলীয় কর্মকাণ্ড কোন রকম বাঁধা দেওয়া হতো না। নব্বই পরবর্তী যেকোন সময়ের চেয়ে এরশাদের সময় বেশি গণতন্ত্র ভোগ করেছে দেশের মানুষ। ইতিহাস একদিন সাক্ষ্য দিবে।

তিনি বলেন, কোন দল যদি তাদের নীতি আদর্শ নিয়ে রাজনীতিতে টিকতে না পারে তাহলে সামনের দিনে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। অস্বাভাবিক রাজনীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। তাই স্বাভাবিক রাজনীতি চলতে দেওয়া সরকারের দায়িত্ব। বিরোধীদলকে কাজ করতে দেওয়া সরকারেরই দায়িত্ব।

বিরোীদলীয় চিফ হুইপ মো. মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, যারা বলছেন, জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে- তারা ভুল বলছেন। জাতীয় পার্টি ভেঙে যাচ্ছে না। রাজনীতি হচ্ছে একটি চলন্ত ট্রেনের মত। চলার পথে কেউ নেমে যাবে আবার কেউ নতুন করে উঠবে, এভাবেই রাজনীতি চলছে। গুটি কয়েক লোক চলে গেলেও জাতীয় পার্টির ক্ষতি হবে না, জাতীয় পার্টি এগিয়ে যাবে নিজস্ব গতিতে। জাতীয় পার্টিতে নতুন প্রজন্ম যোগ দেবে। আমরা তাদের সাথে নিয়ে রাজনীতি এগিয়ে নেবো।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. জে. (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এমপি, এ্যাড. মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, সৈয়দ দিদার বখত, ঢাকা মহানগর উত্তরের সদস্য সচিব সুলতান আহমেদ সেলিম, যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন, কৃষক পার্টির সাধারণ সম্পাদক এবিএম লিয়াকত হোসেন চাকলাদার, জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন, জাতীয় ছাত্র সমাজের সাধারণ সম্পাদক মো. আশরাফুল ইসলাম খান।

এরশাদের জন্মদিন উপলক্ষে সকালে জাতীয় পার্টি মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপির নেতৃত্বে কাকরাইলস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয় চত্বরে প্রতিকৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করেন নেতা-কর্মীরা। সকাল থেকে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কোরআন তেলাওয়াত ও বিকেলে জাতীয় পার্টি মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক জহিরুল আলম রুবেলের সভাপতিত্বে দোয়া মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়েছে।