কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি :
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব এ সরকারের কাছে নিরাপদ নয়। দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা আজ হুমকিতে। করিডোর দেওয়ার সিদ্ধান্ত দেবেন নির্বাচিত সরকার, আপনারা সিদ্ধান্ত দেওয়ার কেউ না।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিকেলে জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে কুমিল্লা বিভাগে বিএনপির সদস্য ফরম বিতরণ ও সদস্য নবায়ন কর্মসূচীর উদ্বোধনী সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। আগে আমরা ছিলাম কুকুরের মুখ থেকে এখন বাঘের মুখে। কুকুরের মুখ থেকে বাঘের মুখে পড়েছি। সিন্দাবাদের বুড়ো আমাদের ঘাড়ে চেপে বসেছে, ঘাড় থেকে নামতে চান না, ওনাকে ঘাড় থেকে ঝাঁকি দিয়ে নামাতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের নির্বাচন আদায় করে নিতে হবে। জনগণের ভোটের অধিকার, আমাদের ন্যায্য অধিকার, হিসেবের পাওনা, আমরা বুঝে নিতে চাই। আমরা ভিক্ষা চাই না, আদায় করে নিতে হবে। এ দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয় এ সরকারের হাতে। উপদেস্টাদের অনেকের বাপ চাচারা ব্যবসা শুরু করেছে। ঘুষ খাওয়া শুরু করেছে বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, বিএনপি চাদাঁবাজির মধ্যে নাই, সরকার অপকর্ম চালাচ্ছে অভিযোগ সরকারের সাঙ্গপাঙ্গরাই লুটপাট-ব্যাংক ডাকাতি এরাই করছে। ৯০ হাজার কোটি টাকা গত ৮ মাসে পাচার হয়ে গেছে। এখন আমরা পাচারকারিদের পাল্লায় আছি।
মির্জা আব্বাস বলেন, এ সরকারের বিরুদ্ধে কোন মিডিয়ায় কোন কথা নাই। মিডিয়ার কোন স্বাধীনতা নাই। পত্র পত্রিকায় লিখতে দেন। লজ্জায় আরও অনেক কর্মকাণ্ডের কথা বলছি না।
তিনি বলেন, বিএনপি এখন চাঁদাবাজি দখলবাজির মধ্যে নেই। এ সরকারের সাঙ্গপাঙ্গরা চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত। বিএনপির এখনো সুদিন আসেনি। আগে বিএনপির শত্রু ছিল আওয়ামী লীগ, এখন বিএনপির অনেক শত্রু। এখনো আমাদের নেতা তারেক রহমান দেশে ফেরেননি, ফিরতে পারেননি।
মির্জা আব্বাস বলেন, নির্বাচন আমাদের ন্যায্য পাওনা। জনগণের ভোটের অধিকার আমাদের ন্যায্য অধিকার। সেটি আমরা বুঝে নিতে চাই। আমরা ভিক্ষা চাই না। আমি হয়তো আরও দেরিতে নির্বাচনের কথা বলতাম, কিন্তু এখনই কেন বলছি? কারণ আমি দেখছি আমার স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয় এই সরকারের হাতে। আমি আবারও বলছি এই সরকারের হাতে আমার দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতা নিরাপদ নয়।
তিনি বলেন, সদস্য সংগ্রহের বিষয়ে আমাদের অনেক সাবধান থাকতে হবে। কিছু গোষ্ঠী আছে যারা সুযোগ সন্ধানী। হয়তো আমার-আপনার সঙ্গে একটা ব্যক্তিগত যোগাযোগ ছিল অথবা আছে, সেই সুযোগ নিয়ে তারা বিভিন্ন অঞ্চলে চাঁদাবাজি ও দখলবাজি করছে। আর বদনামটা বিএনপির ঘাড়ে আসছে। সেখান থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে। সেই শ্রেণির লোককে সদস্য করা যাবে না। আর ছদ্মবেশী আওয়ামী লীগ তো নয়ই।
সরকারের সাংগোপাঙ্গরাই চাঁদাবাজি করছে এমন মন্তব্য করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপি তো ক্ষমতায় নেই কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় আছে। আমি এই সরকারকে বলতে চাই, যেই চাঁদাবাদ যেখানেই আছে বুকে সাহস থাকলে তাকে ধরে ফেলেন। কিন্তু আপনাদের বুকে সেই সাহস নেই। কারণ আপনার সাঙ্গপাঙ্গ যারা আছে এই সরকারে, তারাই নিজেরা এখন চাঁদাবাজি করছে। বড় আকারের চাঁদাবাজি করছে। ৯০ হাজার কোটি টাকা গত ৮ মাসে পাচার হয়ে গেছে।
কুমিল্লা জেলা ও মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজি আমিন উর রশিদ ইয়াছিন, কুমিল্লা বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সভাপতি উদবাতুল বারী আবু, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম, মহানগরের সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু প্রমুখ।