নিজস্ব প্রতিবেদক :
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, এ দেশের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বিএনপি। তবে সন্ত্রাস ও সহিংসতা করে ৭ জানুয়ারি নির্বাচন বানচাল করা যাবে না।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিংয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক এ কথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে নিরাপত্তা ও উন্নয়নের জন্য বড় হুমকি বিএনপি। সহিংসতা করে, ষড়যন্ত্র করে সাত জানুয়ারি নির্বাচনকে বানচাল করা যাবে না। বিএনপি যদি মনে করে তারা সন্ত্রাস করবে আর সরকার বসে থাকবে, এটা ভুল ধারণা। হামলা সহিংসতায় কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি দেশের নির্বাচন ও গণতন্ত্রের পথে হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের কারণেই দেশের সার্বিক গণতন্ত্র সংকটের মুখে। দেশকে খাটো করতে বিদেশিদের কাছে বদনাম করে কিছু লোক ও বিএনপির মতো কিছু দল। বাংলাদেশের অর্জন সারা দুনিয়ার প্রশংসিত। উন্নয়ন সমৃদ্ধির পথে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেক এগিয়ে গেছে। এদেশের কিছু লোক আছে তাদের প্রশংসা করতে সংকীর্ণতা থাকে। তারা দেশকে ছোট করার জন্য সব সময় বিদেশিদের কাছে দেশের বদনাম করে। দেশের নিরাপত্তার জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি বিএনপি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা বলতে চাই, সহিংসতা করে সন্ত্রাস করে নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। তারা যদি মনে করে সহিংসতা করবে আর সরকার বসে থাকবে তা হবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠিন ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিএনপি মানুষকে জিম্মি করে রাজনীতি করে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ মানেই বাসে আগুন, গুপ্ত হামলা। গতকালও বেশ কয়েকটি যানবাহনে তারা আগুন দিয়েছে।
শরিকদের আপত্তি থাকলেও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচন করতে পারবে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুব স্পষ্ট। তাদের নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। বলপ্রয়োগের মতো কোনো কর্মকাণ্ড তারা করতে পারবে না। আমাদের শরিকদের আপত্তি থাকতে পারে। তবে আমরা স্পষ্ট বলে দিয়েছি, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা থাকবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, এখানে স্বস্তি অস্বস্তির বিষয় নয়, প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, স্বতন্ত্র থাকবে। তবে কাউকে সহিংসতা করতে দেয়া হবে না। সে যে দলের প্রার্থীই হোক। নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনের স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীর দায়িত্ব পালন নিয়ে আপত্তি নেই আওয়ামী লীগের। তবে সেনাবাহিনীকে সব বিষয়ে বিতর্কিত করার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বিষয়ে আওয়ামী লীগের অবস্থান স্পষ্ট। বল প্রয়োগ বা ফ্রি স্টাইলে যাওয়া যাবে না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবে।
স্বতন্ত্র প্রার্থীর কারণে গঠনতন্ত্র লঙ্ঘন হলো কি না, এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, দেশের সার্বিক গণতন্ত্র যেখানে হুমকির মধ্যে সেখানে দেশের প্রয়োজনে দলীয় সভাপতি সিদ্ধান্ত দেবেন।
প্রার্থীদের সম্পদ বৃদ্ধির বিষয়ে তিনি বলেন, প্রার্থীদের সম্পদ বৃদ্ধি অবৈধ হলে দুদক দেখবে।
জনপ্রিয়তার কারণে সবাই নৌকা চাচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির সঙ্গে এখনও আলাপ আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, সহিংসতা করে বা কোনো ষড়যন্ত্র করে ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বানচাল করা যাবে না। বিএনপি যদি মনে করে তারা সন্ত্রাস করলে সরকার বসে থাকবে, তাহলে তারা ভুল করছে। এ সময় নির্বাচন বিরোধী যেকোনো বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে শক্ত অবস্থান নেয়ার আহ্বানও জানান ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ আগ্রহ দেখিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নির্বাচন বিষয়ক টেকনিকাল টিম ইতোমধ্যেই এখানে আছে। তারা নির্বাচন পর্যন্ত থাকবে। এছাড়া ভারত, জাপান, ফিলিস্তিন, ওআইসি ও আরব লীগ পর্যবেক্ষক পাঠাবে। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আগ্রহী আরও দেশ আছে। সেগুলো শিগগিরই জানা যাবে বলেও জানান এই আওয়ামী লীগ নেতা।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, এসএম কামাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।