নিজস্ব প্রতিবেদক :
দেশে এখন আগুন নিয়ে যে নাশকতা হচ্ছে তার সঙ্গে বিএনপি জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শনিবার (৮ এপ্রিল) বিকেলে মিরপুরে সিদ্ধান্ত স্কুল মাঠে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, মির্জা ফখরুল আজ ঘন ঘন আগুনের কথা বলেন। এই আগুন ও সন্ত্রাস- দুটোই তারা সৃষ্টি করেছেন। আমাদের সন্দেহ, দেশে এখন আগুন নিয়ে যে নাশকতা হচ্ছে, সে নাশকতার সঙ্গে বিএনপি যুক্ত। কারণ আগুন নিয়ে যারা নাশকতা করছে তাদের অতীতের ইতিহাস আগুন-সন্ত্রাস। এই ইতিহাস এদেশের মানুষ ভুলে যায়নি।
কাদের বলেন, বিএনপি এই রমজানে ৩৬৫টি কর্মসূচি দিয়েছে। বিভিন্ন থানায় রাস্তা বন্ধ করে, অবরোধ করে, রমজানে মানুষকে কষ্ট দিয়ে যে রাজনীতি করছে, তা গণবিরোধী রাজনীতি। সেই রাজনীতি মানুষের রাজনীতি নয়। যারা এ দেশে আগুন সন্ত্রাস করে চিহ্নিত সন্ত্রাসী হিসেবে সবার কাছে পরিচিত সেই বিএনপি এখন আগুনের কথা বলে তখন আমাদের কাছে মনে হয় ঠাকুর ঘরে কে রে? আমি কলা খাইনি।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির কর্মসূচির ডাক দিয়েছে। এটাই তাদের রাজনীতি। যারা এই দেশে আগুন সন্ত্রাস করে, সন্ত্রাসী হিসেবে চিহ্নিত, সবার কাছে পরিচিত, সেই বিএনপি এখন আগুনের কথা বলে।
তিনি বলেন, বিএনপির পদযাত্রা নীরবযাত্রা। মানুষ বলে মরণযাত্রা। এখন বিএনপির আন্দোলন মাটিতে নেমে গেছে, তার নাম অবস্থান কর্মসূচি। এ আন্দোলন পাবলিক খায় না, এ আন্দোলনে জনগণ নেই।
সরকার পদত্যাগ করে বিএনপির সঙ্গে সংলাপে বসা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার যদি পদত্যাগ করে তাহলে সংলাপ করবে কে? এ প্রশ্নের উত্তর মির্জা ফখরুলের কাছে জানতে চাই। এ উদ্ভট, আবোল তাবোল কথা বলছে বিএনপি। আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপির মরা গাঙে আর জোয়ার আসে না। ভাটার টান এসে গেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ৫২ দল শুনেছি, এখন পাঁচ হাজার পাওয়ারের বাতি জ্বালিয়েও বিএনপির শরিকদের খুঁজে পাওয়া যাবে না। কোথায় ২৭ দফা? রাষ্ট্র নাকি মেরামত করবে? এই রাষ্ট্র মেরামত করেছেন শেখ হাসিনা। রাষ্ট্র যারা ধ্বংস করে তারা মেরামত করতে পারে না।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কত নালিশ, কূটনীতিকদের পাড়ায় পাড়ায় বিএনপি নেতাদের পদচারণা। এমনকি জাতিসংঘের কাছে নালিশ দেবে। জাতিসংঘের এটা কাজ নয়, কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা। এর আগে মির্জা ফখরুল জাতিসংঘের দুয়ারে ঘুরেছে। জাতিসংঘ মহাসচিবকে পায়নি, কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে খালি হাতে ফিরেছে। যাদের কাছে নালিশ করবে তাদের হাতে সালিশ করার ক্ষমতা নেই। লজ্জা শরম থাকলে আন্দোলনের কথা মুখে বলবেন না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, নির্বাচন নিয়ে জাতিসংঘের কাছে নালিশ দিয়ে বিএনপির কোনো লাভ হবে না। কারণ সালিশ করার এখতিয়ার তাদের নেই। নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। তাই সরকারের অধীনেই সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। বিএনপি নির্বাচনে না আসলে জোর করা হবে না। তবে বাধা দিতে চাইলে তা প্রতিহত করবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনে সরকার শুধুই রুটিন দায়িত্ব পালন করবে।
তিনি বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য আইন করে স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে শেখ হাসিনার সরকার। নির্বাচন কমিশনের উপর সরকারের কোনো হস্তক্ষেপ থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মাধ্যমে নির্বাচনকে ভণ্ডুল করা বিএনপির মতলব। নির্বাচনে না এলে জোর করে আনতে পারব না। কিন্তু নির্বাচনে বাধা দিতে আসলে প্রতিরোধ করা হবে। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন পর্যন্ত রাস্তা ছাড়ব না, অপরাজনীতির হোতা বিএনপিকে প্রতিহত করব।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি গণবিরোধী রাজনীতি করে বলেই রমজান মাসে তারা কর্মসূচির পরিকল্পনা করে মানুষকে কষ্ট দেয়। দেশে আগুন নিয়ে নাশকতার সঙ্গে বিএনপি জড়িত জানিয়ে তিনি বলেন, বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন তাই সাধারণ মানুষ আর তাদের চায় না।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে সংকটের কারণে সাধারণ জিনিসপত্রের দাম একটু বাড়লেও দেশ ঘুরে দাঁড়িয়েছে। তাই আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এখন দেশে আগুন নিয়ে যে নাশকতা করছে তার সঙ্গে বিএনপি জড়িত।
দারুসসালাম থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত ও ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচিসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা।
পরে সুবিধাভোগীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী ও ঈদ উপহার বিতরণ করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।