Dhaka শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জেন্ডার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও সামাজিক কারণে নারীরা সেই প্রাপ্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন : বিএনপিএস

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, জেন্ডার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও সামাজিক কারণে নারীরা সেই প্রাপ্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নারী উদ্যোক্তাদের উত্তরাধিকার আইনের কারণে নারীদের সম্পদের মালিকানা না থাকায় কোন ঋণ পেতে যে গ্যারান্টি দিতে হয় সেটাতে ব্যর্থ হন। এর ফলে বরাদ্দ থাকলেও নারীরা ঋণ পেতে ব্যর্থ হন।

সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) উদ্যোগে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫: নারী সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক নারীর ক্ষমতায়নে বরাদ্দকৃত জেন্ডার বাজেটের কার্যকর বণ্টন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তিনি।

রোকেয়া কবীর বলেন, বাজেটসহ কর্মক্ষেত্র ও সমাজের অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর দেয়া শ্রম ও তাদের অংশগ্রহণের প্রকৃত প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়ার ব্যাপারে পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ সুবিধা ও তাদের প্রাপ্য আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুরুষদের ভূমিকা রয়েছে। এক্ষেত্রে সবার আগে পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটে নারীদের জন্য বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করতে হবে, পাশাপাশি তাদের জন্য রাখা বরাদ্দ যেন সুষমভাবে তৃণমূল পর্যায়ে বণ্টন হয় সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি গৃহকর্ম সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীদের করা পরিশ্রমের স্বীকৃতি সহ তাকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এছাড়া গৃহকর্মে নারীদের কাজকে আরও সহজ করতে বিভিন্ন হোম অ্যাপ্লায়েন্স সহ অন্যান্য যন্ত্রের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।

কর্মজীবী নারীদের ঘরের বাইরে যেমন কাজ করতে হয়, তেমনি ঘরের ভেতরেও প্রায় সব কাজই করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে পুরুষরা তেমন একটা অংশগ্রহণ করেন না। তিনি বলেন, এই প্রবণতা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম, এমনকি পাহাড়ি অঞ্চল সবখানেই বিদ্যমান।

নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য বিএনপিএস এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে উল্লেখ করে রোকেয়া কবীর বলেন, বাজারগুলোতে নারী উদ্যোক্তাদের দোকান করার স্থান দেয়ার জন্য বিএনপিএস এর পক্ষ থেকে অনেক আগে থেকেই দাবি করা হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে আজ অনেক স্থানেই দেখা যাচ্ছে নারী উদ্যোক্তারা বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন।

তিনি বলেন, দেশের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীই নারী; যাদের সিংহভাগই সম্পদহীন, ক্ষমতাহীন এবং উপার্জনের সুযোগবঞ্চিত ও পরনির্ভরশীল। তাদের দিকে ন্যায়সম্পন্ন ও কার্যকরভাবে সম্পদপ্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা লক্ষ্য করছি, গত কয়েক বছরের বাজেটে নারীদের বড় আকারের ঋণ সুবিধা প্রদানের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু একজন নারীকে বড় আকারে ঋণ নিতে হলে সম্পদ বন্ধক দিতে হয়। যার উত্তরাধিকারের সমান অধিকার নেই, তিনি কীভাবে সম্পদ বন্ধক রাখবেন? সম্পদ বন্ধক ছাড়া নারীদের ঋণ প্রদান করার নিয়ম চালু করতে হবে। এজন্য উত্তরাধিকার আইনে নারীর সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়া খাস জমির বণ্টনে নারীদের ক্ষেত্রে শর্তবিহীন (উপযুক্ত ছেলে থাকা) বণ্টন নিশ্চিত করা জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, মন্ত্রণালয়গুলোর জেন্ডার সংবেদনশীল প্রোগ্রামের ক্ষেত্রেও কম বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়। বাজেটে নারীর জন্য বরাদ্দের পরিকল্পনা ও মনিটরিংয়ের সময় সে বরাদ্দ নারী উন্নয়ন নীতির কর্মকৌশল অনুযায়ী হচ্ছে কি না তার কোনো খতিয়ান আমরা দেখতে পাই না। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বরাদ্দকৃত জেন্ডার বাজেটের কার্যক্রমগুলো কীভাবে সরাসরি নারীর ক্ষমতায়ন ও জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালার কর্মপরিকল্পনার সাথে সম্পর্কিত, তার অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রতি বছর তৈরি ও জনসমক্ষে পেশ করতে হবে।’

নারী প্রগতি সংঘের ১১টি সুপারিশগুলো হলো-

বরাদ্দকৃত বাজেটের মাধ্যমে নারীর জীবনের কোন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো, সে বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত/ খতিয়ান আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের সময় উত্থাপন করতে হবে।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বরাদ্দকৃত জেন্ডার বাজেটের কার্যক্রমগুলো কীভাবে সরাসরি নারীর ক্ষমতায়ন ও জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালার কর্মপরিকল্পনার সাথে সম্পর্কিত, তার অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রতি বছর তৈরি ও জনসমক্ষে পেশ করতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নেয়া কৌশলগুলো কতটুকু জেন্ডার চাহিদা পূরণ করছে এবং অগ্রগতি কতটুকু সে বিষয়কসংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের পাশাপাশি গুণগত বিশ্লেষণের পরিমাপক নির্ধারণ করতে হবে।

প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জেন্ডার বাজেট বিষয়ে ধারণাগত স্পষ্টতা এবং পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জেন্ডার বাজেট ফোকাল পয়েন্টদের তথ্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে থাকতে হবে।

লিড মন্ত্রণালয় হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জেন্ডার বাজেট বিষয়ে ধারণাগত এবং মনিটরিং দক্ষতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের জেন্ডার ও জেন্ডার বাজেট বিষয়ক প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে এবং জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করে তাদের সেবা দানের দক্ষতাকে বাৎসরিক কর্মমূল্যায়নের সাথে যুক্ত করতে হবে।

নারীর জন্য জামানতমুক্ত ঋণ সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তন আনতে হবে।

গৃহস্থালী কাজে নারীর শারীরিক শ্রম লাঘব করার জন্য গৃহস্থালী সরঞ্জামাদির দাম কমিয়ে এবং নারীর কর্মভার লাঘব করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সহিংসতার শিকার নারীদের জন্য সেবা বাড়ানো বিশেষ করে আইনি সহায়তা প্রদান, শেল্টার হোম তৈরি করা এবং সেখানে রেখে তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

জেন্ডার বাজেট বিষয়ক গবেষণার উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে বিআইডিএসসহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জেন্ডার বাজেট বিশ্লেষণের উদ্যোগ নিতে হবে।

সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহনাজ সুমি। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন নারী ও উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

জেন্ডার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও সামাজিক কারণে নারীরা সেই প্রাপ্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন : বিএনপিএস

প্রকাশের সময় : ০৪:৩৬:৫৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া কবীর বলেন, জেন্ডার বাজেট বরাদ্দ থাকলেও সামাজিক কারণে নারীরা সেই প্রাপ্ত সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। নারী উদ্যোক্তাদের উত্তরাধিকার আইনের কারণে নারীদের সম্পদের মালিকানা না থাকায় কোন ঋণ পেতে যে গ্যারান্টি দিতে হয় সেটাতে ব্যর্থ হন। এর ফলে বরাদ্দ থাকলেও নারীরা ঋণ পেতে ব্যর্থ হন।

সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া মিলনায়তনে বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের (বিএনপিএস) উদ্যোগে ‘জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫: নারী সমাজের প্রত্যাশা’ শীর্ষক নারীর ক্ষমতায়নে বরাদ্দকৃত জেন্ডার বাজেটের কার্যকর বণ্টন, বাস্তবায়ন ও মূল্যায়নের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ সব কথা বলেন তিনি।

রোকেয়া কবীর বলেন, বাজেটসহ কর্মক্ষেত্র ও সমাজের অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর দেয়া শ্রম ও তাদের অংশগ্রহণের প্রকৃত প্রাপ্য বুঝিয়ে দেয়ার ব্যাপারে পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সুযোগ সুবিধা ও তাদের প্রাপ্য আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে পুরুষদের ভূমিকা রয়েছে। এক্ষেত্রে সবার আগে পুরুষদের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় বাজেটে নারীদের জন্য বরাদ্দ আরও বৃদ্ধি করতে হবে, পাশাপাশি তাদের জন্য রাখা বরাদ্দ যেন সুষমভাবে তৃণমূল পর্যায়ে বণ্টন হয় সে বিষয়টিও খেয়াল রাখতে হবে। পাশাপাশি গৃহকর্ম সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে নারীদের করা পরিশ্রমের স্বীকৃতি সহ তাকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। এছাড়া গৃহকর্মে নারীদের কাজকে আরও সহজ করতে বিভিন্ন হোম অ্যাপ্লায়েন্স সহ অন্যান্য যন্ত্রের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে।

কর্মজীবী নারীদের ঘরের বাইরে যেমন কাজ করতে হয়, তেমনি ঘরের ভেতরেও প্রায় সব কাজই করতে হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে পুরুষরা তেমন একটা অংশগ্রহণ করেন না। তিনি বলেন, এই প্রবণতা শহর থেকে শুরু করে গ্রাম, এমনকি পাহাড়ি অঞ্চল সবখানেই বিদ্যমান।

নারী উদ্যোক্তাদের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর জন্য বিএনপিএস এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া ও সুপারিশ তুলে ধরা হয়েছে উল্লেখ করে রোকেয়া কবীর বলেন, বাজারগুলোতে নারী উদ্যোক্তাদের দোকান করার স্থান দেয়ার জন্য বিএনপিএস এর পক্ষ থেকে অনেক আগে থেকেই দাবি করা হয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে আজ অনেক স্থানেই দেখা যাচ্ছে নারী উদ্যোক্তারা বিভিন্ন স্থানে ব্যবসা বাণিজ্য করছেন।

তিনি বলেন, দেশের ৫০ শতাংশ জনগোষ্ঠীই নারী; যাদের সিংহভাগই সম্পদহীন, ক্ষমতাহীন এবং উপার্জনের সুযোগবঞ্চিত ও পরনির্ভরশীল। তাদের দিকে ন্যায়সম্পন্ন ও কার্যকরভাবে সম্পদপ্রবাহ বৃদ্ধি করতে হবে। আমরা লক্ষ্য করছি, গত কয়েক বছরের বাজেটে নারীদের বড় আকারের ঋণ সুবিধা প্রদানের কথা বলা হচ্ছে, কিন্তু একজন নারীকে বড় আকারে ঋণ নিতে হলে সম্পদ বন্ধক দিতে হয়। যার উত্তরাধিকারের সমান অধিকার নেই, তিনি কীভাবে সম্পদ বন্ধক রাখবেন? সম্পদ বন্ধক ছাড়া নারীদের ঋণ প্রদান করার নিয়ম চালু করতে হবে। এজন্য উত্তরাধিকার আইনে নারীর সম-অধিকার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। এছাড়া খাস জমির বণ্টনে নারীদের ক্ষেত্রে শর্তবিহীন (উপযুক্ত ছেলে থাকা) বণ্টন নিশ্চিত করা জরুরি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, মন্ত্রণালয়গুলোর জেন্ডার সংবেদনশীল প্রোগ্রামের ক্ষেত্রেও কম বাজেট বরাদ্দ রাখা হয়। বাজেটে নারীর জন্য বরাদ্দের পরিকল্পনা ও মনিটরিংয়ের সময় সে বরাদ্দ নারী উন্নয়ন নীতির কর্মকৌশল অনুযায়ী হচ্ছে কি না তার কোনো খতিয়ান আমরা দেখতে পাই না। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বরাদ্দকৃত জেন্ডার বাজেটের কার্যক্রমগুলো কীভাবে সরাসরি নারীর ক্ষমতায়ন ও জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালার কর্মপরিকল্পনার সাথে সম্পর্কিত, তার অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রতি বছর তৈরি ও জনসমক্ষে পেশ করতে হবে।’

নারী প্রগতি সংঘের ১১টি সুপারিশগুলো হলো-

বরাদ্দকৃত বাজেটের মাধ্যমে নারীর জীবনের কোন ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হলো, সে বিষয়ক তথ্য-উপাত্ত/ খতিয়ান আগামী অর্থবছরের জাতীয় বাজেট উপস্থাপনের সময় উত্থাপন করতে হবে।

মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর বরাদ্দকৃত জেন্ডার বাজেটের কার্যক্রমগুলো কীভাবে সরাসরি নারীর ক্ষমতায়ন ও জাতীয় নারী উন্নয়ন নীতিমালার কর্মপরিকল্পনার সাথে সম্পর্কিত, তার অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রতি বছর তৈরি ও জনসমক্ষে পেশ করতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়নের জন্য নেয়া কৌশলগুলো কতটুকু জেন্ডার চাহিদা পূরণ করছে এবং অগ্রগতি কতটুকু সে বিষয়কসংখ্যাতাত্ত্বিক বিশ্লেষণের পাশাপাশি গুণগত বিশ্লেষণের পরিমাপক নির্ধারণ করতে হবে।

প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের জেন্ডার বাজেট বিষয়ে ধারণাগত স্পষ্টতা এবং পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন বিষয়ে দক্ষতা বৃদ্ধির ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের জেন্ডার বাজেট ফোকাল পয়েন্টদের তথ্য মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে থাকতে হবে।

লিড মন্ত্রণালয় হিসেবে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জেন্ডার বাজেট বিষয়ে ধারণাগত এবং মনিটরিং দক্ষতা বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে।

সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিদের জেন্ডার ও জেন্ডার বাজেট বিষয়ক প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে এবং জেন্ডার সংবেদনশীল পরিবেশ নিশ্চিত করে তাদের সেবা দানের দক্ষতাকে বাৎসরিক কর্মমূল্যায়নের সাথে যুক্ত করতে হবে।

নারীর জন্য জামানতমুক্ত ঋণ সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তন আনতে হবে।

গৃহস্থালী কাজে নারীর শারীরিক শ্রম লাঘব করার জন্য গৃহস্থালী সরঞ্জামাদির দাম কমিয়ে এবং নারীর কর্মভার লাঘব করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সহিংসতার শিকার নারীদের জন্য সেবা বাড়ানো বিশেষ করে আইনি সহায়তা প্রদান, শেল্টার হোম তৈরি করা এবং সেখানে রেখে তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ দিতে হবে।

জেন্ডার বাজেট বিষয়ক গবেষণার উদ্যোগ নিতে হবে। বিশেষ করে বিআইডিএসসহ গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোকে জেন্ডার বাজেট বিশ্লেষণের উদ্যোগ নিতে হবে।

সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহনাজ সুমি। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন নারী ও উন্নয়ন সংগঠনের প্রতিনিধিবৃন্দ।