Dhaka রবিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৫, ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুর্ভিক্ষ নিয়ে সরকারের বার্তা উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা: রিজভী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী বলেছেন, বিনা ভোটে ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দখল করে রেখে শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে এখন বলছে বিএনপি দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করবে। সরকার দুর্ভিক্ষের আগাম বার্তা দিয়ে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। গুম-খুন, ভোট ডাকাতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, চাপাবাজি ও মূল্যস্ফীতি, ধোঁকাবাজির হাত থেকে কেউ রেহায় পেতে এটা করা হচ্ছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, শেখ হাসিনার অপশাসনে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশটাকে লুটেপুটে খেয়ে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে তারা। তাদের এই কর্মকাণ্ড থেকে পরিত্রাণ পেতে ব্যাপক গণআন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বে অসহায় হয়ে পড়েছে। নিজের অপব্যবস্থাপনা আর ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপি ও বিদেশিদের ওপর অগ্রিম দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যেই সরকার অপশাসনে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, দেশটাকে লুটেপুটে খেয়ে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

রিজভী বলেন, গুম-খুন-ক্রসফায়ারের শিকার হওয়া স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকের উদ্যোগে সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে স্বজনরা তাদের আকুতি ও মর্মান্তিক পরিস্থিতির কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী গুমপন্থি পুলিশ সেখানে তাদের দাঁড়াতে দেয়নি, টেনে-হিঁচড়ে বের করে দিয়েছে। তাদের কথা বলতে দিতেও ভয় পাচ্ছে।

তিনি বলেন, মানুষ তিন বেলা খাবার জোটাতে পারছে না। ক্ষুধার জ্বালায় ত্রিশ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করেছে মা। তাই এক্ষুনি এই সর্বভূক লুটেরা খুনি দুঃশাসক দুরাচারী সরকারকে হঠাতে না পারলে দুর্ভিক্ষ-মন্বন্তরে প্রাণ হারাতে হবে বেঘোরে। পথে ঘাটে পড়ে থাকবে লাশের সারি। তাই আজ ভোটাধিকার, সরকারের গুম-খুন-অপহরণ-জুলুম-নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার, লুটপাট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশের জনগণ রাজপথে মরণপণ লড়াই করছে। এই লড়াইয়ে আমাদের জয়লাভ করতেই হবে।

কারাগারে নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, বর্তমান আইজি প্রিজন সারা দেশে কারাগারগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ রাখার মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এভাবে নির্যাতন-নিপীড়নে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিপর্যস্ত অবস্থা। আত্মীয়-স্বজনের দেখা করা, কাপড়-চোপড় দেওয়া এবং মোবাইলে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আগে ৭ দিনে একবার দেখার সুযোগ দিলেও এখন ১৫ দিনে একবার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে কারাগারগুলো যেন হিটলারের গ্যাস চেম্বারের মতো কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প বানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আজ গুম-খুন-মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের কথা বলতে পারেন না। এক ভয়ঙ্কর গুমের সরকার, ক্রসফায়ারের সরকার, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সরকার রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে এমনভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়, যাতে সরকারের অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ টু-শব্দও না করতে পারে। এজন্য তারা এক ব্যাপক নেটওয়ার্ক বিস্তার করেছে।

রিজভী বলেন, আসুন সাহস-আশা ও দৃঢ় সংকল্পের মনোভাব নিয়ে আমরা চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বিজয়ের পথে ধাবিত করি। অগণতান্ত্রিক আওয়ামী নাৎসিদের অন্তঃসারশূন্য অপপ্রচারের মায়াজাল বেধ করে স্বাধীনতা ও উদার মনোভাবের গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অক্লান্ত উদ্যম অব্যাহত থাকবে।

এই জাতি কোনো দিনই স্বেচ্ছাতন্ত্রের কাছে আত্মসমর্পণ করেনি। গণতান্ত্রিক শক্তির কল্পনা ও আশা সর্বদা সজীব, সক্রিয় ও বিকাশমান। তাই বর্তমান আদর্শের সংগ্রামে আমরা বিজয়ী হবোই। বলেন রিজভী।

গত ৪ ডিসেম্বর রাতে তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক হোসনকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে গেছে উল্লেখ অবিলম্বে তাকে জনসমক্ষে হাজির করার দাবি জানান তিনি।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘কারাগারে বর্তমানে যে আইজি প্রিজন আছেন, তিনি বিএনপির সব বন্দিকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখার মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আমি এর আগে কয়েকবার বলেছি, আইজি প্রিজন এমন ধরনের মানুষ যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করার জন্য শপথ নিয়েছেন যে, কারাগারের ভেতরেও বিএনপির নেতাকর্মীদের জুলুম করবেন, নির্যাতন করবেন এবং বন্দিদের সাধারণ মানুষ হিসেবে যে মানবাধিকার সেটিকে চরমভাবে লঙ্ঘন করবেন। আজ তিনি সারাদেশের কারাগারগুলোতে আরেকটি হিটলারের গ্যাস চেম্বার বানিয়েছেন, কনসেনট্রেশন ক্যাম্প করেছেন। আজ কারাগারগুলোতে নাৎসিদের মতো সেই অবস্থা রয়েছে। সেখানে নিপীড়ন-নির্যাতনে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থা বিপর্যস্ত।’

‘এমনকি বন্দিদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কাপড়-চোপড় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। মোবাইলে কথা বলা একেবারে সীমিত করা হয়েছে, মানে দিতেই চায় না। নিয়ম হয়েছে, সাপ্তাহে একদিন মোবাইলে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে, আর ১৫ দিন পর দেখা-সাক্ষাৎ, আগে যা ছিল প্রতি সাপ্তাহে।’ বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘কারাগারগুলোতে এখন আর সত্যিকার সামাজিক অপরাধীরা থাকবে না। কারাগারগুলো পরিপূর্ণ হবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দিয়ে। কারাগারগুলোতে বেছে বেছে সেই ধরনের অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন যারা শেখ হাসিনার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। এখন কারাগারের ভেতরেও ভয়ঙ্করভাবে নিপীড়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত।’

এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই নিপীড়ন নজিরবিহীন। এই নিপীড়ন ভাষায় বলা যাবে না। অতি উৎসাহী অফিসাররা দলীয় বন্দিদের ওপর এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আমি বন্দিদের ওপর এ ধরনের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি বন্দিদের ন্যায্য অধিকার দেওয়ার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

রিজভী বলেন, ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ হোসেন ডিবি পুলিশের নির্যাতনে অসুস্থ অবস্থায় কারাগারের ভেতরে হাঁটাচলা ও খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। ডিবি পুলিশের নির্যাতনে কারণে হাঁটুতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারছেন না, মাথায় আঘাত করার কারণে মাথায় প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করছেন এবং নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’

‘এমতাবস্থায় কারা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। আমি এই অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং যত দ্রুত সম্ভব অসুস্থ ছাত্রদল নেতা নিয়াজ হোসেনের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার জোর আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় নিয়াজ হোসেনের কিছু হলে সরকারকেই এর দায় বহন করতে হবে।’ যোগ করেন রিজভী।

রিজভী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ১৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং পাঁচটি মামলায় আরও ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

দুর্ভিক্ষ নিয়ে সরকারের বার্তা উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা: রিজভী

প্রকাশের সময় : ১০:২২:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুর কবির রিজভী বলেছেন, বিনা ভোটে ১৫ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতার ময়ূর সিংহাসন দখল করে রেখে শেখ হাসিনা দেশকে উন্নয়নের গল্প শুনিয়ে এখন বলছে বিএনপি দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করবে। সরকার দুর্ভিক্ষের আগাম বার্তা দিয়ে উদোর পিন্ডি বুধোর ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। গুম-খুন, ভোট ডাকাতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংক লুট, অর্থ পাচার, চাপাবাজি ও মূল্যস্ফীতি, ধোঁকাবাজির হাত থেকে কেউ রেহায় পেতে এটা করা হচ্ছে।

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বিকেলে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির এ নেতা বলেন, শেখ হাসিনার অপশাসনে ইতোমধ্যে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। দেশটাকে লুটেপুটে খেয়ে দুর্ভিক্ষের দিকে ঠেলে দিয়েছে তারা। তাদের এই কর্মকাণ্ড থেকে পরিত্রাণ পেতে ব্যাপক গণআন্দোলন সৃষ্টি করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকার দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক দেউলিয়াত্বে অসহায় হয়ে পড়েছে। নিজের অপব্যবস্থাপনা আর ব্যর্থতা ঢাকতে বিএনপি ও বিদেশিদের ওপর অগ্রিম দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যেই সরকার অপশাসনে দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, দেশটাকে লুটেপুটে খেয়ে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

রিজভী বলেন, গুম-খুন-ক্রসফায়ারের শিকার হওয়া স্বজনদের সংগঠন মায়ের ডাকের উদ্যোগে সকালে জাতীয় জাদুঘরের সামনে দাঁড়িয়ে স্বজনরা তাদের আকুতি ও মর্মান্তিক পরিস্থিতির কথা বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী গুমপন্থি পুলিশ সেখানে তাদের দাঁড়াতে দেয়নি, টেনে-হিঁচড়ে বের করে দিয়েছে। তাদের কথা বলতে দিতেও ভয় পাচ্ছে।

তিনি বলেন, মানুষ তিন বেলা খাবার জোটাতে পারছে না। ক্ষুধার জ্বালায় ত্রিশ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করেছে মা। তাই এক্ষুনি এই সর্বভূক লুটেরা খুনি দুঃশাসক দুরাচারী সরকারকে হঠাতে না পারলে দুর্ভিক্ষ-মন্বন্তরে প্রাণ হারাতে হবে বেঘোরে। পথে ঘাটে পড়ে থাকবে লাশের সারি। তাই আজ ভোটাধিকার, সরকারের গুম-খুন-অপহরণ-জুলুম-নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার, লুটপাট ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশের জনগণ রাজপথে মরণপণ লড়াই করছে। এই লড়াইয়ে আমাদের জয়লাভ করতেই হবে।

কারাগারে নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে দাবি করে তিনি বলেন, বর্তমান আইজি প্রিজন সারা দেশে কারাগারগুলোতে বিএনপি নেতাকর্মীদের সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা বন্ধ রাখার মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন। এভাবে নির্যাতন-নিপীড়নে বিএনপি নেতাকর্মীদের বিপর্যস্ত অবস্থা। আত্মীয়-স্বজনের দেখা করা, কাপড়-চোপড় দেওয়া এবং মোবাইলে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছে। আগে ৭ দিনে একবার দেখার সুযোগ দিলেও এখন ১৫ দিনে একবার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। এভাবে কারাগারগুলো যেন হিটলারের গ্যাস চেম্বারের মতো কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প বানানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আজ গুম-খুন-মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার ব্যক্তিরা তাদের কথা বলতে পারেন না। এক ভয়ঙ্কর গুমের সরকার, ক্রসফায়ারের সরকার, মানবাধিকার লঙ্ঘনের সরকার রাষ্ট্রশক্তি দিয়ে এমনভাবে টিকিয়ে রাখতে চায়, যাতে সরকারের অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ টু-শব্দও না করতে পারে। এজন্য তারা এক ব্যাপক নেটওয়ার্ক বিস্তার করেছে।

রিজভী বলেন, আসুন সাহস-আশা ও দৃঢ় সংকল্পের মনোভাব নিয়ে আমরা চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলনকে বিজয়ের পথে ধাবিত করি। অগণতান্ত্রিক আওয়ামী নাৎসিদের অন্তঃসারশূন্য অপপ্রচারের মায়াজাল বেধ করে স্বাধীনতা ও উদার মনোভাবের গণতান্ত্রিক সমাজ বিনির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের অক্লান্ত উদ্যম অব্যাহত থাকবে।

এই জাতি কোনো দিনই স্বেচ্ছাতন্ত্রের কাছে আত্মসমর্পণ করেনি। গণতান্ত্রিক শক্তির কল্পনা ও আশা সর্বদা সজীব, সক্রিয় ও বিকাশমান। তাই বর্তমান আদর্শের সংগ্রামে আমরা বিজয়ী হবোই। বলেন রিজভী।

গত ৪ ডিসেম্বর রাতে তেজগাঁও কলেজ ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশতাক হোসনকে সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তুলে গেছে উল্লেখ অবিলম্বে তাকে জনসমক্ষে হাজির করার দাবি জানান তিনি।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, ‘কারাগারে বর্তমানে যে আইজি প্রিজন আছেন, তিনি বিএনপির সব বন্দিকে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত রাখার মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছেন। আমি এর আগে কয়েকবার বলেছি, আইজি প্রিজন এমন ধরনের মানুষ যিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে নিজের অবস্থান আরও দৃঢ় করার জন্য শপথ নিয়েছেন যে, কারাগারের ভেতরেও বিএনপির নেতাকর্মীদের জুলুম করবেন, নির্যাতন করবেন এবং বন্দিদের সাধারণ মানুষ হিসেবে যে মানবাধিকার সেটিকে চরমভাবে লঙ্ঘন করবেন। আজ তিনি সারাদেশের কারাগারগুলোতে আরেকটি হিটলারের গ্যাস চেম্বার বানিয়েছেন, কনসেনট্রেশন ক্যাম্প করেছেন। আজ কারাগারগুলোতে নাৎসিদের মতো সেই অবস্থা রয়েছে। সেখানে নিপীড়ন-নির্যাতনে বিএনপির নেতাকর্মীদের অবস্থা বিপর্যস্ত।’

‘এমনকি বন্দিদের আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কাপড়-চোপড় দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। মোবাইলে কথা বলা একেবারে সীমিত করা হয়েছে, মানে দিতেই চায় না। নিয়ম হয়েছে, সাপ্তাহে একদিন মোবাইলে স্বজনদের সঙ্গে কথা বলতে পারবে, আর ১৫ দিন পর দেখা-সাক্ষাৎ, আগে যা ছিল প্রতি সাপ্তাহে।’ বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘কারাগারগুলোতে এখন আর সত্যিকার সামাজিক অপরাধীরা থাকবে না। কারাগারগুলো পরিপূর্ণ হবে বিএনপির নেতাকর্মীদের দিয়ে। কারাগারগুলোতে বেছে বেছে সেই ধরনের অফিসার নিয়োগ দিয়েছেন যারা শেখ হাসিনার ভাবধারায় অনুপ্রাণিত। এখন কারাগারের ভেতরেও ভয়ঙ্করভাবে নিপীড়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত।’

এ বিএনপি নেতা বলেন, ‘এই নিপীড়ন নজিরবিহীন। এই নিপীড়ন ভাষায় বলা যাবে না। অতি উৎসাহী অফিসাররা দলীয় বন্দিদের ওপর এক ধরনের যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। আমি বন্দিদের ওপর এ ধরনের নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি বন্দিদের ন্যায্য অধিকার দেওয়ার জোর আহ্বান জানাচ্ছি।

রিজভী বলেন, ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ হল শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ হোসেন ডিবি পুলিশের নির্যাতনে অসুস্থ অবস্থায় কারাগারের ভেতরে হাঁটাচলা ও খাওয়া-দাওয়া করতে পারছেন না। ডিবি পুলিশের নির্যাতনে কারণে হাঁটুতে ভর দিয়ে দাঁড়াতে পারছেন না, মাথায় আঘাত করার কারণে মাথায় প্রচণ্ড ব্যাথা অনুভব করছেন এবং নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে।’

‘এমতাবস্থায় কারা কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের চিকিৎসার ব্যবস্থা করছে না। আমি এই অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং যত দ্রুত সম্ভব অসুস্থ ছাত্রদল নেতা নিয়াজ হোসেনের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার জোর আহ্বান জানাচ্ছি। অন্যথায় নিয়াজ হোসেনের কিছু হলে সরকারকেই এর দায় বহন করতে হবে।’ যোগ করেন রিজভী।

রিজভী আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিএনপির ১৭৫ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার এবং পাঁচটি মামলায় আরও ৫ শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করা হয়েছে।