নিজস্ব প্রতিবেদক :
নেত্রকোনার দুর্গাপুরের বিরিশিরি ইউনিয়নের হারিয়াউন্দ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন সেতুটি ৯ বছর ধরে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে। এতে যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন দুই ইউনিয়নের অন্তত ২৫ গ্রামের মানুষ। শুষ্ক মৌসুমে এ পথে সেতুর স্থানটি ধান ক্ষেত দিয়ে ঘুরে যাওয়া গেলেও বর্ষা মৌসুমে যাতায়াতকারীদের চার কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।
এছাড়াও নারী-পুরুষ, বয়স্ক মানুষও রোগীসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এ নিয়ে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় বাসিন্দারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার দাবি জানালেও এত দিনেও সেতুটি সংস্কার বা পুনঃনির্মাণের ব্যবস্থা করেনি কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৪ সালে বন্যার পানির তোড়ে আশপাশের ২৫ গ্রামের যাতায়াতের একমাত্র সেতুটি ধসে পড়ে। এরপর ২০২০ সালের বন্যায় সড়ক থেকে বিছিন্ন হয়ে যায় সেতুটি। ফলে গ্রামীণ জনপদের লোকজন ভোগান্তির মধ্যে রয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ঐ ধসে পড়া সেতুটি বছরের পর বছর পার হলেও নির্মাণের এখনও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
এতে দক্ষিন জাগিরপাড়া, নাওদাড়া, জাঙ্গালিয়া কান্দা, ভাদুয়া, মুন্সিপাড়া, নন্দেরছটি, পূর্বনন্দেরছটি, বন্ধউসান, গৌরাখালী, শাহাপুর, কৃষ্ণপুর আটলা, নিশ্চন্তপুর, বারই পাড়া, হারিয়াউন্দসহ প্রায় ২৫টি গ্রামের মানুষের ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। ৯ বছর ধরে এভাবে পড়ে থাকা সেতুটি কবে আলোর মুখ দেখবে এমন প্রশ্ন ভুক্তভোগীদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ধসে পড়া সেতু ও রাস্তা-ঘাটের অবস্থা খারাপ থাকার কারণে যানবাহন ঢুকতে না পারায় এলাকার ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।
জাগিরপাড়া গ্রামের সাইদুল ইসলাম বলেন, ছেলেমেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। একটা অসুস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য শহরে নেওয়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাই দ্রুত সেতু নির্মাণ করা হলে আর ভোগান্তি থাকবে না।
কৃষক আব্দুল লতিফ বলেন, এখানে সেতু না থাকায় তাঁদের মতো কৃষকদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাঁরা কৃষিপণ্য শহরে সহজে নিয়ে যেতে পারেন না। কৃষিপণ্য গ্রামেই বিক্রি করতে হচ্ছে তাতে ভালো মূল্যও মিলছে না। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী সেতুটি পুননির্মাণের দাবি জানিয়ে আসছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রুহু বলেন, ওই সেতুর ওপর দিয়ে শহরে যেতে মানুষ চলাচল করত। সেতু ভাঙা থাকার কারণে এলাকার লোকজন দুর্ভোগে পড়েছে। আমি অনেকবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কাছে জানিয়েছি ইঞ্জিনিয়ার বলেছেন ব্রিজ সেকশন হয়েছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ খোয়াজুর রহমান বলেন, এই সেতুটি আমাদের না। সেতুটি (এলজিইডি) করেনি। তিনি আরো বলেন, ওই এলাকার সড়কটিই এলজিইডি’র আইডিভুক্ত না তাহলে সেখানে সেতু নির্মাণ কিভাবে করবে। তবে ওই সড়কটি (এলজিইডি) আইডি ভুক্ত করার প্রস্তাবনা দিয়েছি এবং উল্টে থাকা ব্রীজটি জায়গায় একটি তিন ব্যাল্ড কালভার্ট তৈরি হবে।