Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুভোর্গ থেকে মুক্তি পাচ্ছে কাজলা-যাত্রাবাড়ী মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

যেন আলোর নিচে অন্ধকার! ঝকঝকে, তকতকে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে কাজলা-যাত্রাবাড়ী মহাসড়ক রাস্তা গর্ত আর খানাখন্দে ভরা আর একেবারে চলাচলের অনুপযোগী ছিল। নিচের রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। গর্তগুলোতে পানি জমে জলজটের সৃষ্টি হয়ে থাকতে। নিচের রাস্তায় যানজট যেন নিত্যদিনের সঙ্গী ছিল।

এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ দিতে রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে যাত্রাবাড়ী এলাকার সড়কে মেরামতের কাজ চলছে। এখন ঢাকায় প্রবেশ পথে বাম পাশের লেনে নিচ দিয়ে যান চলাচলা বন্ধ। তবে সব ধরনের যান চলাচলা অব্যাহত আছে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে।

দূরপাল্লার বড় বড় বাস, লরি, ট্রাকসহ গণপরিবহনগুলো চালাতে বেগ পেতে হচ্ছিল চালকদের। ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ও পিক-আপগুলো খানাখন্দে পড়ে আটকে থাকতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা, অনেক সময় গর্তে পড়ে বিকল হয়ে যেত বিভিন্ন যানবাহন। কখনো আবার রিকশা-ভ্যান, পিক-আপ উল্টে মালামাল পড়ে যেত।কারো কারো অভিযোগ ছিল, ফ্লাইওভারে এখনো টোল আদায় করা হচ্ছে। যদি নিচের রাস্তা ভালো থাকে, তাহলে টোল দিয়ে অনেকেই ফ্লাইওভারে উঠবেন না। এজন্য রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগ কোনো নেই।

এদিকে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা ও ফ্লাইওভারের পিলারের দেওয়ালের কারণে অনেক সরু হয়ে গেছে সড়ক। এতে তীব্র যানজট দেখা যাচ্ছে এ সড়কে। ফ্লাইওভারের ওঠার আগে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট বলেন, আমরাও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।

এ এলাকায় ১৫ বছর ধরে রিকশা চালান আবুল কালাম। তিনি বলেন, আমি এ এলাকায় ১৫ বছর ধরে রিকশা চালাই। তিন বছর ধরে রাস্তার এ অবস্থা। মাঝে মধ্যে একটু বালি ফালানো হয়। কয়েকদিন পর আবার একই অবস্থা হয়ে যায়। প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন গর্তে পরে ঘন্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে। তীব্র যানজটে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যেত। বর্তমানে এই রাস্তা সংস্কারের ফলে আমরা এই দুভোর্গ থেকে মুক্তি পাচ্ছে।

পথচারী বেলাল আহমেদ বলেন, রাস্তার এ অবস্থা দেখে নিজের কাছেই অনেক খারাপ লাগতো। গর্তে আর খানাখন্দে কত মালামাল বোঝাই করা ভ্যান, পিক-আপ পড়ে যেতে দেখেছি তার হিসেব নেই। বৃষ্টি নামলে তো এ রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যেত। অবশেষে আমাদের মুক্তি মিলছে এই দুভোর্গ থেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, কিছুদিন টানা বৃষ্টির কারণে এ সড়ক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক সংস্কারসহ পথচারীদের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে ডিএসসিসি এরি মধ্যে কাজ শুরু করেছে। এ সড়কের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য সড়কেও আমরা কাজ করছি।

২০১৩ সালে উদ্বোধন করা হয় হানিফ ফ্লাইওভার। এটির বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওরিয়ন গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা, টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায়। ২৪ বছরে নির্মাণ ব্যয় তুলে নেবে প্রতিষ্ঠানটি। আর আদায় হওয়া টোলের ৫ শতাংশ ডিএসসিসির তহবিলে জমা হবে।

রাজধানীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের আগে-পরে উদ্বোধন করা হয়েছে কুড়িল, মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোড ফ্লাইওভার ও মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। এসব ফ্লাইওভার ব্যবহারে টোল দিতে হয় না। যার কারণে নিচের সড়কও পরিপাটি। একমাত্র মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারেই টোল দিতে হয়। কিন্তু এত বছরেও এর নিচের সড়কগুলো ঠিক করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। তবে এবার দেখার পালা সংস্কারের পর সড়কটি টেকসই হয় কত দিন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

দুভোর্গ থেকে মুক্তি পাচ্ছে কাজলা-যাত্রাবাড়ী মহাসড়ক ব্যবহারকারীরা

প্রকাশের সময় : ১২:১৯:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

যেন আলোর নিচে অন্ধকার! ঝকঝকে, তকতকে হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে কাজলা-যাত্রাবাড়ী মহাসড়ক রাস্তা গর্ত আর খানাখন্দে ভরা আর একেবারে চলাচলের অনুপযোগী ছিল। নিচের রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী যাত্রীদের ভোগান্তির যেন শেষ নেই। গর্তগুলোতে পানি জমে জলজটের সৃষ্টি হয়ে থাকতে। নিচের রাস্তায় যানজট যেন নিত্যদিনের সঙ্গী ছিল।

এমন পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ দিতে রাজধানীর মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে যাত্রাবাড়ী এলাকার সড়কে মেরামতের কাজ চলছে। এখন ঢাকায় প্রবেশ পথে বাম পাশের লেনে নিচ দিয়ে যান চলাচলা বন্ধ। তবে সব ধরনের যান চলাচলা অব্যাহত আছে ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে।

দূরপাল্লার বড় বড় বাস, লরি, ট্রাকসহ গণপরিবহনগুলো চালাতে বেগ পেতে হচ্ছিল চালকদের। ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ও পিক-আপগুলো খানাখন্দে পড়ে আটকে থাকতো ঘণ্টার পর ঘণ্টা, অনেক সময় গর্তে পড়ে বিকল হয়ে যেত বিভিন্ন যানবাহন। কখনো আবার রিকশা-ভ্যান, পিক-আপ উল্টে মালামাল পড়ে যেত।কারো কারো অভিযোগ ছিল, ফ্লাইওভারে এখনো টোল আদায় করা হচ্ছে। যদি নিচের রাস্তা ভালো থাকে, তাহলে টোল দিয়ে অনেকেই ফ্লাইওভারে উঠবেন না। এজন্য রাস্তা সংস্কারে উদ্যোগ কোনো নেই।

এদিকে সড়কের এমন বেহাল অবস্থা ও ফ্লাইওভারের পিলারের দেওয়ালের কারণে অনেক সরু হয়ে গেছে সড়ক। এতে তীব্র যানজট দেখা যাচ্ছে এ সড়কে। ফ্লাইওভারের ওঠার আগে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্ট বলেন, আমরাও দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছি।

এ এলাকায় ১৫ বছর ধরে রিকশা চালান আবুল কালাম। তিনি বলেন, আমি এ এলাকায় ১৫ বছর ধরে রিকশা চালাই। তিন বছর ধরে রাস্তার এ অবস্থা। মাঝে মধ্যে একটু বালি ফালানো হয়। কয়েকদিন পর আবার একই অবস্থা হয়ে যায়। প্রতিদিন অসংখ্য যানবাহন গর্তে পরে ঘন্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকতে। তীব্র যানজটে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে যেত। বর্তমানে এই রাস্তা সংস্কারের ফলে আমরা এই দুভোর্গ থেকে মুক্তি পাচ্ছে।

পথচারী বেলাল আহমেদ বলেন, রাস্তার এ অবস্থা দেখে নিজের কাছেই অনেক খারাপ লাগতো। গর্তে আর খানাখন্দে কত মালামাল বোঝাই করা ভ্যান, পিক-আপ পড়ে যেতে দেখেছি তার হিসেব নেই। বৃষ্টি নামলে তো এ রাস্তার অবস্থা খারাপ হয়ে যেত। অবশেষে আমাদের মুক্তি মিলছে এই দুভোর্গ থেকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা এ বিষয়ে বলেন, কিছুদিন টানা বৃষ্টির কারণে এ সড়ক কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়ক সংস্কারসহ পথচারীদের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে ডিএসসিসি এরি মধ্যে কাজ শুরু করেছে। এ সড়কের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত অন্যান্য সড়কেও আমরা কাজ করছি।

২০১৩ সালে উদ্বোধন করা হয় হানিফ ফ্লাইওভার। এটির বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ওরিয়ন গ্রুপ এর ব্যবস্থাপনা, টোল আদায় ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পায়। ২৪ বছরে নির্মাণ ব্যয় তুলে নেবে প্রতিষ্ঠানটি। আর আদায় হওয়া টোলের ৫ শতাংশ ডিএসসিসির তহবিলে জমা হবে।

রাজধানীতে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের আগে-পরে উদ্বোধন করা হয়েছে কুড়িল, মিরপুর-এয়ারপোর্ট রোড ফ্লাইওভার ও মগবাজার-মৌচাক ফ্লাইওভার। এসব ফ্লাইওভার ব্যবহারে টোল দিতে হয় না। যার কারণে নিচের সড়কও পরিপাটি। একমাত্র মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারেই টোল দিতে হয়। কিন্তু এত বছরেও এর নিচের সড়কগুলো ঠিক করতে পারেনি সংশ্লিষ্টরা। তবে এবার দেখার পালা সংস্কারের পর সড়কটি টেকসই হয় কত দিন।