Dhaka বৃহস্পতিবার, ০৭ অগাস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই দলকেই পছন্দের জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দিল ডিএমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে তাদের পছন্দের জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার (২৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এবং বিএনপি নয়াপল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে। তবে এতে ২০টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওযামী লীগকে শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিকে তাদের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জামায়াত ইসলামীকে শাপলা চত্বরে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড.খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কাছে আমরা সাতটি বিষয় জানতে চেয়েছিলাম। দলের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে চিঠিতে তারা যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছে আশা করব সেগুলো তারা অনুসরণ করবে। দুই দলই নিশ্চিত করেছে তাদের সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। আমরা নিরাপত্তা দিতে চাই ঢাকাবাসীর। আশা করি, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সহযোগিতা করবে।

দুই দলকে ২০টি শর্ত দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, শর্ত না থাকলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা হতে পারে। শর্তগুলো স্বাভাবিক। কী কী করা যাবে, সমাবেশে কখন আসবে, কখন আসবে না সবকিছুই শর্তে বলা আছে।

বিএনপির সমাবেশে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির বক্তব্য প্রচার করা যাবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে শর্তগুলো দেওয়া আছে সবগুলো আইনি কাঠামোর মধ্যে দেওয়া আছে।

জামায়াতকে অনুমতি দেওয়া হয়নি, এরপরও মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি, এ বিষয়ে পুলিশের পদক্ষেপ কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কিন্তু লিগ্যাল ফ্রেমে আছে। আমরা বৈধ আইনি কাঠামোর জায়গায় আছি। প্রত্যেকের উচিত রাষ্ট্রের যে প্রচলিত আইন আছে তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।

এদিকে পুলিশের অনুমতি পাওয়ার আগেই বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট এবং নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিকেল থেকেই অবস্থান নিতে শুরু করেন দুই দলের নেতাকর্মীরা। হাজারো নেতাকর্মীর উপস্থিতির কারণে দুই এলাকায়ই কার্যত বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার নেতাকর্মীদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।

অন্যদিকে, বড় দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখ এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।

যে শর্ত দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। শর্তগুলো হলো-

১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. অনুমোদিত স্থানের মধ্যেই সমাবেশ এর যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. দুপুর ১২টার পূর্বে কোনক্রমেই জনসমাগম করা যাবে না।
৫. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনার পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেন্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. অনুমোদিত স্থানের বাইরে কোথাও লোক সমবেত হতে পারবে না।
৮. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
৯. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোন বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১০. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৫টা) সমাবেশ এর সার্বিক কার্যক্রম অবশ্যই শেষ করতে হবে।
১১. সমাবেশ সমাপ্তির পর প্রস্থানের সময় রাস্তায় কোথাও কোন সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বা অবস্থান করা যাবে না।
১২, আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি সমাবেশে বক্তব্য প্রদান বা তার কোন বক্তব্য সমাবেশে প্রচার করা যাবে না।
১৩. রাস্তার বাম লেন ন্যূনতম ব্যবহার করে সমাবেশ করতে হবে এবং অন্য লেনসমূহ কোনক্রমেই ব্যবহার করা যাবে না।
১৪. আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৫. রাষ্ট্রবিরোধী কোন কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
১৬. উস্কানিমূলক কোন বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
১৭. সমাবেশে ব্যানারের আড়ালে কোন ধরনের লাঠি-সোঁটা বা রড সদৃশ কোন বস্তু ব্যবহার করা যাবে না।
১৮. আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও কোন বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
১৯. উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২০. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।

আবহাওয়া

সাজা থেকে খালাস পেলেন জি কে শামীম

দুই দলকেই পছন্দের জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দিল ডিএমপি

প্রকাশের সময় : ০৮:৩৯:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে তাদের পছন্দের জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। শনিবার (২৮ অক্টোবর) আওয়ামী লীগ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে এবং বিএনপি নয়াপল্টনে তাদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করার অনুমতি পেয়েছে। তবে এতে ২০টি শর্ত জুড়ে দিয়েছে পুলিশ।

শুক্রবার (২৭ অক্টোবর) রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড. খ. মহিদ উদ্দিন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, রাজধানীর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওযামী লীগকে শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বিএনপিকে তাদের নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জামায়াত ইসলামীকে শাপলা চত্বরে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) ড.খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কাছে আমরা সাতটি বিষয় জানতে চেয়েছিলাম। দলের পক্ষ থেকে আমাদের কাছে চিঠিতে তারা যে বিষয়গুলো উল্লেখ করেছে আশা করব সেগুলো তারা অনুসরণ করবে। দুই দলই নিশ্চিত করেছে তাদের সমাবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। আমরা নিরাপত্তা দিতে চাই ঢাকাবাসীর। আশা করি, রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সহযোগিতা করবে।

দুই দলকে ২০টি শর্ত দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, শর্ত না থাকলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা হতে পারে। শর্তগুলো স্বাভাবিক। কী কী করা যাবে, সমাবেশে কখন আসবে, কখন আসবে না সবকিছুই শর্তে বলা আছে।

বিএনপির সমাবেশে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির বক্তব্য প্রচার করা যাবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে শর্তগুলো দেওয়া আছে সবগুলো আইনি কাঠামোর মধ্যে দেওয়া আছে।

জামায়াতকে অনুমতি দেওয়া হয়নি, এরপরও মতিঝিলের শাপলা চত্বরে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি, এ বিষয়ে পুলিশের পদক্ষেপ কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কিন্তু লিগ্যাল ফ্রেমে আছে। আমরা বৈধ আইনি কাঠামোর জায়গায় আছি। প্রত্যেকের উচিত রাষ্ট্রের যে প্রচলিত আইন আছে তার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা।

এদিকে পুলিশের অনুমতি পাওয়ার আগেই বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেট এবং নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনের সড়কে বিকেল থেকেই অবস্থান নিতে শুরু করেন দুই দলের নেতাকর্মীরা। হাজারো নেতাকর্মীর উপস্থিতির কারণে দুই এলাকায়ই কার্যত বন্ধ হয়ে যায় যান চলাচল। পুলিশের পক্ষ থেকে বারবার নেতাকর্মীদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করা হলেও তাতে কোনো কাজ হয়নি।

অন্যদিকে, বড় দুই রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন প্রবেশমুখ এবং গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট।

যে শর্ত দেওয়া হয়েছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে। শর্তগুলো হলো-

১. এই অনুমতিপত্র স্থান ব্যবহারের অনুমতি নয়, স্থান ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে অনুমোদন নিতে হবে।
২. স্থান ব্যবহারের অনুমতিপত্রে উল্লেখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন করতে হবে।
৩. অনুমোদিত স্থানের মধ্যেই সমাবেশ এর যাবতীয় কার্যক্রম সীমাবদ্ধ রাখতে হবে।
৪. দুপুর ১২টার পূর্বে কোনক্রমেই জনসমাগম করা যাবে না।
৫. নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব ব্যবস্থাপনার পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক (দৃশ্যমান আইডি কার্ডসহ) নিয়োগ করতে হবে।
৬. নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সমাবেশে আগতদের হ্যান্ড হেন্ড মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে (ভদ্রোচিতভাবে) চেকিং এর ব্যবস্থা করতে হবে।
৭. অনুমোদিত স্থানের বাইরে কোথাও লোক সমবেত হতে পারবে না।
৮. আজান, নামাজ ও অন্যান্য ধর্মীয় সংবেদনশীল সময় মাইক/শব্দযন্ত্র ব্যবহার করা যাবে না।
৯. ধর্মীয় অনুভূতির ওপর আঘাত আসতে পারে এমন কোন বিষয়ে ব্যঙ্গচিত্র প্রদর্শন, বক্তব্য প্রদান বা প্রচার করা যাবে না।
১০. অনুমোদিত সময়ের মধ্যে (দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৫টা) সমাবেশ এর সার্বিক কার্যক্রম অবশ্যই শেষ করতে হবে।
১১. সমাবেশ সমাপ্তির পর প্রস্থানের সময় রাস্তায় কোথাও কোন সংক্ষিপ্ত সমাবেশ বা অবস্থান করা যাবে না।
১২, আদালত কর্তৃক সাজাপ্রাপ্ত কোন ব্যক্তি সমাবেশে বক্তব্য প্রদান বা তার কোন বক্তব্য সমাবেশে প্রচার করা যাবে না।
১৩. রাস্তার বাম লেন ন্যূনতম ব্যবহার করে সমাবেশ করতে হবে এবং অন্য লেনসমূহ কোনক্রমেই ব্যবহার করা যাবে না।
১৪. আইন-শৃঙ্খলা পরিপন্থী ও জননিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কার্যকলাপ করা যাবে না।
১৫. রাষ্ট্রবিরোধী কোন কার্যকলাপ ও বক্তব্য প্রদান করা যাবে না।
১৬. উস্কানিমূলক কোন বক্তব্য প্রদান বা প্রচারপত্র বিলি করা যাবে না।
১৭. সমাবেশে ব্যানারের আড়ালে কোন ধরনের লাঠি-সোঁটা বা রড সদৃশ কোন বস্তু ব্যবহার করা যাবে না।
১৮. আইন-শৃঙ্খলার অবনতি ও কোন বিরূপ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ দায়ী থাকবেন।
১৯. উল্লিখিত শর্তাবলী যথাযথভাবে পালন না করলে তাৎক্ষণিকভাবে এই অনুমতির আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে।
২০. জনস্বার্থে কর্তৃপক্ষ কোন কারণ দর্শানো ব্যতিরেকে এই অনুমতি আদেশ বাতিল করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন।