Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ ৮ মাস পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আাবারো ট্রেন চলাচল শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দীর্ঘ ৮ মাস বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আবারো ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ জন ভোগান্তি শেষে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

সোমবার (৩১ জুলাই) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ উদ-দৌলা খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে নতুন করে ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাওয়ায় উৎসাহের সঞ্চার হয়েছে ওই অঞ্চলের যাত্রীদের মধ্যে। যারা নিয়মিত নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা এসে অফিস করেন তারা যেন আবারো প্রাণ ফিরে পেলেন। অন্য দিকে শহরের প্লাটফর্ম পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে ট্রেন চলাচলের জন্য।

১২ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুট ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-গেণ্ডারিয়া অংশে তিনটি আলাদা রেললাইন নির্মাণকাজ শুরু হয়। গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশন পুনর্র্নিমাণ ও পুরাতন লাইন সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে এ রুট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

এরপর নারায়ণগঞ্জ থেকে কোনো ট্রেন ঢাকা কিংবা ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জেও আসেনি কোনো ট্রেন। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.১ কিলোমিটার। এ রুটে প্রতিদিন ২৬টি ট্রেনে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করতো।

এ প্রকল্পের পরিচালক সেলিম রউফ জানিয়েছিলেন, এর আগে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ যে পুরাতন সিঙ্গেল লাইন ছিল সেটিই আবার চালু করা হচ্ছে। নতুন করে যে ডুয়েল গেজ লাইন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেটি শেষ হবে ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। সেটি চালু হলে আবার পুরাতন লাইন নতুন করে সংস্কার করা হবে।

এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রী ফারজানা ইসলাম বলেন, আমার বাসা গেণ্ডারিয়া, অফিস নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জে অফিসে যেতে ট্রেনে মাত্র ২৫ মিনিট লাগে। কিন্তু গেণ্ডারিয়া থেকে অনেক কষ্টে একাধিক বাহন ব্যবহার করতে হতো। সময় লেগে যেতো এক ঘণ্টারও বেশি, সীমাহীন ভোগান্তি ছিল গত ৮ মাস।

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন, কম ভাড়ায় এবং কম সময়ে রাজধানী ঢাকায় যাওয়ার জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ট্রেন। দীর্ঘ ৮ মাস ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ট্রেন যাত্রীর। ফের ট্রেন চালু হওয়ার সংবাদে খুশির বন্যা বইছে যাত্রীদের মাঝে।

স্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব ১২ কিলোমিটারের সামান্য বেশি। ব্রিটিশ আমলের তৈরি একটি মিটারগেজ রেলপথ দিয়েই এখনও এ সেকশনে ট্রেন চালানো হচ্ছিল। তিনটি প্যাকেজে কাজ চলা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্পের ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তথ্যানুসারে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৮২ শতাংশ। তাই নতুন লাইনে ট্রেন চালানো যাচ্ছে না। ফলে পুরাতন লাইনেই ট্রেন চলবে।

প্রকল্প সূত্র বলছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে ৩৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েল গেজ রেললাইন প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও ঠিকাদার নিয়োগ না হওয়ায় তা শেষ করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ সময়সীমা গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হলেও এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। এখন কাজ শেষ হতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫৮ কোটি ৩৪ লাখ।

প্রকল্প সূত্রে আরও জানা যায়, এ লাইনের সিগন্যালিংয়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি। ২০২৬ সালের জুলাইয়ের মধ্যে এ প্রকল্প শেষ হবে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে প্রকল্পের আওতায় ৫টি রেলস্টেশনের উন্নয়নের কাজ চলছে। স্টেশনগুলো- শ্যামপুর, পাগলা, ফতুল্লা, চাষাড়া ও নারায়ণগঞ্জ স্টেশন।

এর আগে গত ২৫ জুলাই রাজধানীর কমলাপুর থেকে গ্যাংকারে চড়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনের সময় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন করার জন্য যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে কন্ডাক্টর কাজ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্প রিভাইজ করে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন করে টেন্ডারিং করে দ্রুত কাজ শুরু হবে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

দীর্ঘ ৮ মাস পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আাবারো ট্রেন চলাচল শুরু

প্রকাশের সময় : ১২:১৬:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ অগাস্ট ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

দীর্ঘ ৮ মাস বন্ধ থাকার পর ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে আবারো ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। দীর্ঘ জন ভোগান্তি শেষে মঙ্গলবার (১ আগস্ট) সকাল ৭টা থেকে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

সোমবার (৩১ জুলাই) রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা সিরাজ উদ-দৌলা খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে নতুন করে ট্রেন চলাচল শুরু হতে যাওয়ায় উৎসাহের সঞ্চার হয়েছে ওই অঞ্চলের যাত্রীদের মধ্যে। যারা নিয়মিত নারায়ণগঞ্জ থেকে ঢাকা এসে অফিস করেন তারা যেন আবারো প্রাণ ফিরে পেলেন। অন্য দিকে শহরের প্লাটফর্ম পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে ট্রেন চলাচলের জন্য।

১২ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুট ও পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-গেণ্ডারিয়া অংশে তিনটি আলাদা রেললাইন নির্মাণকাজ শুরু হয়। গেণ্ডারিয়া রেলস্টেশন পুনর্র্নিমাণ ও পুরাতন লাইন সংস্কারের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে এ রুট বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।

এরপর নারায়ণগঞ্জ থেকে কোনো ট্রেন ঢাকা কিংবা ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জেও আসেনি কোনো ট্রেন। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথের দৈর্ঘ্য ১২.১ কিলোমিটার। এ রুটে প্রতিদিন ২৬টি ট্রেনে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ যাতায়াত করতো।

এ প্রকল্পের পরিচালক সেলিম রউফ জানিয়েছিলেন, এর আগে ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ যে পুরাতন সিঙ্গেল লাইন ছিল সেটিই আবার চালু করা হচ্ছে। নতুন করে যে ডুয়েল গেজ লাইন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে সেটি শেষ হবে ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। সেটি চালু হলে আবার পুরাতন লাইন নতুন করে সংস্কার করা হবে।

এ রুটে নিয়মিত চলাচলকারী যাত্রী ফারজানা ইসলাম বলেন, আমার বাসা গেণ্ডারিয়া, অফিস নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জে অফিসে যেতে ট্রেনে মাত্র ২৫ মিনিট লাগে। কিন্তু গেণ্ডারিয়া থেকে অনেক কষ্টে একাধিক বাহন ব্যবহার করতে হতো। সময় লেগে যেতো এক ঘণ্টারও বেশি, সীমাহীন ভোগান্তি ছিল গত ৮ মাস।

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রুটে ট্রেনের নিয়মিত যাত্রী হাবিবুর রহমান বলেন, কম ভাড়ায় এবং কম সময়ে রাজধানী ঢাকায় যাওয়ার জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ট্রেন। দীর্ঘ ৮ মাস ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার ট্রেন যাত্রীর। ফের ট্রেন চালু হওয়ার সংবাদে খুশির বন্যা বইছে যাত্রীদের মাঝে।

স্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম জানান, ঢাকা থেকে নারায়ণগঞ্জের দূরত্ব ১২ কিলোমিটারের সামান্য বেশি। ব্রিটিশ আমলের তৈরি একটি মিটারগেজ রেলপথ দিয়েই এখনও এ সেকশনে ট্রেন চালানো হচ্ছিল। তিনটি প্যাকেজে কাজ চলা ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েলগেজ রেললাইন প্রকল্পের ২০২২ সালের ডিসেম্বরের তথ্যানুসারে প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে ৮২ শতাংশ। তাই নতুন লাইনে ট্রেন চালানো যাচ্ছে না। ফলে পুরাতন লাইনেই ট্রেন চলবে।

প্রকল্প সূত্র বলছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে ২০১৪ সালের জুলাইয়ে ৩৭৮ কোটি ৬৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ ডুয়েল গেজ রেললাইন প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও ঠিকাদার নিয়োগ না হওয়ায় তা শেষ করা সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ সময়সীমা গত বছরের ডিসেম্বরে শেষ হলেও এ পর্যন্ত প্রকল্পের ৮২ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে। এখন কাজ শেষ হতে ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫৮ কোটি ৩৪ লাখ।

প্রকল্প সূত্রে আরও জানা যায়, এ লাইনের সিগন্যালিংয়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি। ২০২৬ সালের জুলাইয়ের মধ্যে এ প্রকল্প শেষ হবে। ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলওয়ে প্রকল্পের আওতায় ৫টি রেলস্টেশনের উন্নয়নের কাজ চলছে। স্টেশনগুলো- শ্যামপুর, পাগলা, ফতুল্লা, চাষাড়া ও নারায়ণগঞ্জ স্টেশন।

এর আগে গত ২৫ জুলাই রাজধানীর কমলাপুর থেকে গ্যাংকারে চড়ে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনের সময় রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন জানান, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন করার জন্য যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে কন্ডাক্টর কাজ থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নেয়। ডুয়েল গেজ ডাবল লাইন প্রকল্প রিভাইজ করে একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন করে টেন্ডারিং করে দ্রুত কাজ শুরু হবে।