দিনাজপুর জেলা প্রতিনিধি :
দিনাজপুর চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতাড়ায় একটি ইট ভাটায় অভিযান চালানোর সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা চালিয়েছেন ভাটার মালিক-শ্রমিকরা।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) দুপুরে ভাটার মালিকের নির্দেশে শ্রমিকরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ভেকুসহ ৪টি গাড়ি ভাঙচুর করে।
শ্রমিকদের হামলায় দিনাজপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রুনায়েত আমিন রেজাসহ ভেকু গাড়ির চালক সুরুজ, হেলপার মাসুদ ও তিনজন পুলিশ কনস্টেবলসহ ছয় জন আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুরে দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার সাইতাড়া ইউনিয়নের পূর্ব সাইতাড়া গ্রামের রাবারড্যাম সংলগ্ন মোকারম হোসেনের মালিকানাধীন এমএইচবি ব্রিক্স নামে একটি ইট ভাটায় অভিযান চালান ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও পরিবেশ অধিদপ্তর সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুলতানা সালেহা সুমি। এ সময় মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেট মোকারম হোসেনকে ডেকে তার ভাটা পরিচালনার বৈধ কাগজপত্র দেখতে চান।
এ সময় তিনি ভাটা পরিচালনার কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ৪ লাখ টাকা জরিমানা করেন। জরিমানার টাকা না দিয়ে উল্টো ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন ভাটা মালিক মোকারম হোসেন ও তার ছোট ভাই মোস্তাফিজার।
পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ভেকু দিয়ে ইটভাটা ভাঙচুর শুরু করে। এতে মোকারমের আদেশে শ্রমিকরা মোবাইল কোর্টের ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। তখন ম্যাজিস্ট্রেটদের বহন করা গাড়ির সামনের ও পিছনের দুটি গ্লাস এবং ভেকু ভেঙে দেয়।
এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটসহ পুলিশ সদস্যরা ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ভাটায় অবরুদ্ধ করে রাখে শ্রমিকরা। খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম শরিফুল হক ও চিরিরবন্দর থানার ওসি আবু হাসনাত খানসহ সঙ্গীও ফোর্স গিয়ে তাদের উদ্ধার করে চিরিরবন্দর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। এ ঘটনায় ভাটা মালিক মোকারমের ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান, ভাটা শ্রমিক আনন্দ রায় ও শরিফুল হকসহ তিন জনকে আটক করে চিরিরবন্দর থানা পুলিশ।
চিরিরবন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসনাত খান বলেন, বিষটি জানতে চিরিরবন্দর উপজেলা নির্বাহী অফিসার একেএম মরিফুল হকসহ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে তাদের উদ্ধার করি এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেই। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
ভাটা মালিক মোকারমের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মোবাইল কোর্টে অংশ নেওয়া দিনাজপুর জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রুনায়েত আমিন রেজা বলেন, মোবাইল কোর্টের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দুটি, পুলিশের ১টি গাড়ি ও ভেকু ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আমিসহ তিন জন পুলিশ কনস্টেবল ও ভেকুর ড্রাইভার হেলপার আহত হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।