নিজস্ব প্রতিবেদক :
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ভর করে দেশজুড়ে যে তাণ্ডব-হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছে, তার দায় বিএনপি ও জামায়াতের। এই দায় থেকে বাঁচতে বিএনপি এখন আর্ন্তজাতিক তদন্ত দাবি করছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
সেতুমন্ত্রী বলেন, কোনো হত্যাই সরকার সমর্থন করে না। শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সংঘটিত প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচারবিভাগীয় তদন্ত ও বিচার হবে। যারা সহিংসতা চালিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, একাত্তরে যেভাবে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়েছিল, একই কায়দায় সারাদেশ থেকে রাজধানীতে সুইসাইড স্কোয়াড ঢুকিয়ে নজিরবিহীন ধ্বংসলীলা ও লুটপাট চালানো হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী এমন হত্যাকাণ্ড চালাতে পারে না। কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু সমর্থন করি না। প্রধানমন্ত্রী সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলনকে কেন্দ্র করে দেশি-বিদেশি চক্র যে আক্রমণ চালিয়েছে তা কোনো সভ্য জাতি মেনে নিতে পারে না।
ওবায়দুল কাদের বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ৯৩ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে এই প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
আমরা বরাবরই শিক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন জানিয়ে ধৈর্য ধারণে আহবান জানিয়েছিলাম উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা সতর্ক করে আসছিলাম এই আন্দোলনকে পুঁজি করে বিএনপি-জামায়াত, ছাত্রদল-শিবির হত্যা খুন সন্ত্রাস ও লুটপাট নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। সে আশঙ্কায় সত্য প্রমাণিত হয়েছে।
আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের উপর দায় চাপানো হয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের কয়েক হাজার নেতাকর্মী ও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো।
ওয়ানস বিট্রেয়ার অলওয়েস বিট্রেয়ার মন্তব্য করে তিনি বলেন, সেই সঙ্গে মিলিয়ে বলতে চাই ওয়ানস কিলার, অলওয়েজ কিলার। একাত্তরে যারা বিশ্বাস ঘাতক, হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এখনো তারা বিশ্বাস ঘাতক। ৭৫ এ যারা জাতির পিতা, বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করেছে তারা এখনো বিশ্বাস ঘাতক, ২১ আগস্ট এ শেখ হাসিনাকে টার্গেট করে হত্যাযজ্ঞ চালানো হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ৭১ এ যারা বেইমানি করেছে, হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে তারা এখনো বেইমান। এখানে ৭১ এর খুনি, ৭৫ এর খুনি, ২১ আগস্টের খুনি ও ২৪ সালেও একই খুনি ও বিশ্বাসঘাতক। আর তারা হচ্ছে বিএনপি-জামায়াত।
কতজন মারা গেছেন সেই সংখ্যা কি সরকারের কাছে আছে—এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি। উত্তরায় জাহাঙ্গীরের (গাজীপুরের সাবেক মেয়র) সঙ্গে থাকে জুয়েল; তাঁকে মেরে লটকে রাখা হয়েছে। কি বর্বরতা! এ ছাড়া আরও হত্যাকাণ্ড হয়েছে। সবগুলোই বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা করেছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ছাত্রদল-শিবির সুইসাইড স্কোয়াডে অনুপ্রবেশ করে একাত্তরের পাকিস্তানি কায়দায় হত্যা চালিয়েছে।
তিনি বলেন, আন্দোলনের নামে শিক্ষার্থীদের হত্যা করে সরকারের ওপর দায় চাপানো হয়েছে। আমাদের কয়েক হাজার নেতা-কর্মী ও পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করেছে। নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু, আনিসুল হক প্রমুখ।