বগুড়া জেলা প্রতিনিধি :
বগুড়ায় ‘দাঁড়িপাল্লা মার্কায়’ ভোট দিলে ভাতার কার্ড করে দেওয়ার প্রলোভনে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সদর উপজেলার বড় বেলাইল গ্রামে এ ঘটনায় সন্দেহ হলে জনগণ মোকছেদ আলী (৪৭) নামে এক প্রতারককে আটক করে পুলিশে দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীদের পক্ষে মোমিনুল ইসলাম শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে সদর থানায় মামলা করেছেন।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাহফুজ আলম জানান, অভিযোগের ব্যাপারে তদন্ত চলছে। গ্রেফতার ওই প্রতারককে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ, মামলা সূত্র ও স্থানীয়রা জানান, মোকছেদ আলী বগুড়া সদরের হরিগাড়ী ইসলামপুর উত্তরপাড়ার মন্তাজ আলীর ছেলে। মোকছেদ আলী ও তার সহযোগীরা কয়েক দিন আগে সদর উপজেলার বড় বেলাইল গ্রামে যান। এ সময় তারা জানান যে, আসন্ন নির্বাচনে ‘দাঁড়িপাল্লা’ প্রতীকে ভোট দিলে তাদের বিভিন্ন ধরনের ভাতার কার্ড করে দেওয়া হবে। তাদের প্রলোভনে পড়ে গ্রামের কয়েকজন দরিদ্র মানুষ নিজেদের জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি জমা দেন।
শনিবার (৫ডিসেম্বর) সকালে মোকছেদ আলী ও তার লোকজন ওই গ্রামে গিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের অনলাইন ফরম দেখান। এছাড়া ভাতার কার্ড তৈরির জন্য খরচ হিসেবে জনপ্রতি ২৫০ টাকা করে দাবি করেন। বড় বেলাইল হিন্দুপাড়া গ্রামের গোপীনাথ, মিলন, জমনী নারীসহ কয়েকজনের কাছে টাকা নেওয়া হয়। বিষয়টি সন্দেহজনক হওয়ায় স্থানীয় মোমিনুল ইসলাম, বিপ্লব কুমার গুপ্ত ও মিলনের সহযোগিতায় মোকছেদ আলীকে আটক করা হয়। এ সময় ভুক্তভোগীরা উত্তেজিত হয়ে উঠেন। তারা মারমুখী হয়ে উঠলে মোমিনুল ইসলাম ‘৯৯৯’ নম্বরে ফোন দেন।
সদর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তাদের কাছে মোকছেদ আলীকে হস্তান্তর করা হয়। পুলিশ তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
অভিযোগের ব্যাপারে প্রশ্ন করলে মোকছেদ আলী কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। এ ব্যাপারে মোমিনুল ইসলাম শনিবার রাতে সদর থানায় তার (মোকছেদ) বিরুদ্ধে মামলা করেন।
মামলার বাদী মোমিনুল ইসলাম জানান, মোকছেদ আলী প্রতারণার মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে ভুল বুঝিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। এছাড়া তিনি ভাতা কার্ডের বিনিময়ে ‘দাঁড়িপাল্লা প্রতীকে’ ভোট চাইছিলেন। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা নিতে তিনি ওই প্রতারকের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন।
সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মাহফুজ আলম জানান, বাদীর মামলায় উল্লেখ করা অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে। রোববার দুপুরে মোকছেদ আলীকে আদালতের মাধ্যমে বগুড়া জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
বগুড়া সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নুরুল ইসলাম জানান, এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে যেকোনো ভাতার কার্ড দেওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়া এখন ভাতার সবধরনের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। অভিযোগের সত্যতা পেলে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়া জেলা প্রতিনিধি 























