Dhaka শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে চলছে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ

খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি : 

অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলছে। জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ফলে সাজেক ভ্যালিতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকে আছেন। খাগড়াছড়ি শহরেও অনেকে আটকা পড়েছেন।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ অবরোধ চলবে। এ অবরোধের ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। হঠাৎ অবরোধের ডাক দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা।

অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ির সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। শহরের চেঙ্গী স্কোয়ার, দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়সহ বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে, গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের সমর্থনে পিকেটিং করছে স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এর আগে একই দাবিতে গত বুধবার জেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধ পালন করা হয়েছিল।

খাগড়াছি-সাজেক পরিবহন কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. আরিফ জানান, শুক্রবার অন্তত ২০০টির বেশি গাড়ি সাজেকে গেছে, যাতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক রয়েছেন। শনিবারও খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকগামী বেশ কয়েকটি গাড়ি প্রস্তুত থাকলেও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া সেগুলো ছাড়তে দেওয়া হচ্ছে না।

অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি শহরের বলপাইয়ে আদাম এলাকায় অন্তত ছয়-সাতটি গাড়ি আটকে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। কাছাকাছি অবস্থানে থাকা যাত্রীরা হেঁটে শহরে প্রবেশ করছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে আসা অনেক নৈশ কোচও জেলার বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছে।

অবরোধকারীরা খাগড়াছড়ি-ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক ছাড়াও পানছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়িসহ জেলার বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড তৈরি করেছে। কিছু জায়গায় গাছ কেটে সরাসরি সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।

নোয়াখালী থেকে আসা পর্যটক মো. ফারুক বলেন, বন্ধুদের নিয়ে সাজেক যাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি এসেছি। এখানে এসে অবরোধের খবর পাই। এখন আমরা আটকে আছি, যেতে পারবো কি না কিছুই জানি না।

গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে আসা মো. সোলাইমান বলেন, ছোট ছেলে-মেয়ে নিয়ে পথে আছি। সাজেকের গাড়ি না ছাড়লে হোটেলে উঠব কি না সে চিন্তায় আছি।

তবে এখন পর্যন্ত শহরে ও আশপাশে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, অবরোধের কারণে কোথাও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জনজীবন স্বাভাবিক আছে। পুলিশ সর্তক রয়েছে। সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন আছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরার পথে এক কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে আটক করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

রাজশাহীতে নৌকাডুবে একজনের মৃত্যু, নিখোঁজ ২

দলবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে চলছে সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ

প্রকাশের সময় : ১১:৪৪:০৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

খাগড়াছড়ি জেলা প্রতিনিধি : 

অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলছে। জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। ফলে সাজেক ভ্যালিতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক আটকে আছেন। খাগড়াছড়ি শহরেও অনেকে আটকা পড়েছেন।

শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এ অবরোধ চলবে। এ অবরোধের ফলে জেলার অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। হঠাৎ অবরোধের ডাক দেওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকরা।

অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ির সঙ্গে অভ্যন্তরীণ ও দূরপাল্লার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। শহরের চেঙ্গী স্কোয়ার, দীঘিনালা, পানছড়ি, রামগড়সহ বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে, গাছের গুড়ি ফেলে ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের সমর্থনে পিকেটিং করছে স্থানীয়রা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এর আগে একই দাবিতে গত বুধবার জেলায় আধাবেলা সড়ক অবরোধ পালন করা হয়েছিল।

খাগড়াছি-সাজেক পরিবহন কাউন্টারের দায়িত্বপ্রাপ্ত মো. আরিফ জানান, শুক্রবার অন্তত ২০০টির বেশি গাড়ি সাজেকে গেছে, যাতে প্রায় দুই হাজার পর্যটক রয়েছেন। শনিবারও খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকগামী বেশ কয়েকটি গাড়ি প্রস্তুত থাকলেও প্রশাসনের অনুমতি ছাড়া সেগুলো ছাড়তে দেওয়া হচ্ছে না।

অবরোধের কারণে খাগড়াছড়ি শহরের বলপাইয়ে আদাম এলাকায় অন্তত ছয়-সাতটি গাড়ি আটকে রেখেছেন আন্দোলনকারীরা। কাছাকাছি অবস্থানে থাকা যাত্রীরা হেঁটে শহরে প্রবেশ করছেন। এ ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছেড়ে আসা অনেক নৈশ কোচও জেলার বিভিন্ন জায়গায় আটকে পড়েছে।

অবরোধকারীরা খাগড়াছড়ি-ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়ক ছাড়াও পানছড়ি, দীঘিনালা, মহালছড়িসহ জেলার বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড তৈরি করেছে। কিছু জায়গায় গাছ কেটে সরাসরি সড়ক অবরোধ করা হয়েছে।

নোয়াখালী থেকে আসা পর্যটক মো. ফারুক বলেন, বন্ধুদের নিয়ে সাজেক যাওয়ার জন্য খাগড়াছড়ি এসেছি। এখানে এসে অবরোধের খবর পাই। এখন আমরা আটকে আছি, যেতে পারবো কি না কিছুই জানি না।

গাজীপুর থেকে পরিবার নিয়ে আসা মো. সোলাইমান বলেন, ছোট ছেলে-মেয়ে নিয়ে পথে আছি। সাজেকের গাড়ি না ছাড়লে হোটেলে উঠব কি না সে চিন্তায় আছি।

তবে এখন পর্যন্ত শহরে ও আশপাশে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানিয়েছেন, গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন এবং নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ ব্যারিকেড সরিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখার চেষ্টা করছে।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান, অবরোধের কারণে কোথাও কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জনজীবন স্বাভাবিক আছে। পুলিশ সর্তক রয়েছে। সব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন আছে।

উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় খাগড়াছড়ি সদর এলাকায় প্রাইভেট পড়ে বাসায় ফেরার পথে এক কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাতনামা তিনজনকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেন। সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন শয়ন শীলকে আটক করে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।