Dhaka শনিবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৫, ১ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, সতর্ক চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

দক্ষিণ চীন সাগরে একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে ট্র্যাক করেছে চীন। ওই যুদ্ধজাহাজটিকে বেইজিংয়ের জলসীমা থেকে ‘চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক’ করেছে চীনা সামরিক বাহিনী।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) এক বিবৃতিতে চীনের সামরিক বাহিনী বলেছে, কোনো সরকারি অনুমতি ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্রসমৃদ্ধ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস মিলিয়াস অবৈধভাবে চীনের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল। যা শান্তি ও ব্যস্ত জলপথের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলেছিল।

তবে চীনের এ দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, খবরটি মিথ্যা। এছাড়া যুদ্ধজাহাজকে ধাওয়ার দেওয়ার খবরটিও ভুয়া বলে অভিহিত করেছে তারা।

এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউএসএস মিলিয়াস দক্ষিণ চীন সাগরে নির্ধারিত অভিযান পরিচালনা করছিল এবং আমাদের জাহাজকে সেখানে ধাওয়া দেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক আইন যেখানে অনুমতি দেয় সেখানেই যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব কার্যক্রম (বিমান উড়ানো ও যুদ্ধজাহাজ চালানো) অব্যাহত রাখবে।

বিরোধপূর্ণ পারাসেল দ্বীপপুঞ্জটি দক্ষিণ চীন সাগরের ৭ স্কয়ার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এই দ্বীপপুঞ্জের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। সেখানে দেশটি বিভিন্ন সামরিক অবকাঠামো তৈরি করেছে। তবে তাইওয়ান ও ভিয়েতনামও দ্বীপপুঞ্জটির মালিকানা দাবি করে থাকে।

এর আগে গত জুলাইয়েও যুক্তরাষ্ট্রের একটি ডেস্ট্রয়ারকে ওই একই এলাকা থেকে ধাওয়া দেওয়ার দাবি করেছিল চীন। ওই সময়ও ঘটনাটিকে মিথ্যা হিসেবে দাবি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

চীন প্রায় গোটা দক্ষিণ চীন সাগরের উপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে। একটি কৌশলগত এই জলপথের মাধ্যমে বছরে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। যদিও আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে এই দাবির কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এবং ব্রুনাই সকলেই সাগরে ওভারল্যাপিং মালিকানা দাবি করে আসছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌ চলাচলের স্বাধীনতা বজায় রাখতে এই জলপথে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে।

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি’র (পিএলএ) সাউদার্ন থিয়েটার কমাণ্ড জানিয়েছে, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস মিলিয়াস বৃহস্পতিবার প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের কাছে জলপথে প্রবেশ করেছে। এই অঞ্চল ভিয়েতনামও নিজেদের বলে দাবি করছে।

মুখপাত্র তিয়ান জুনলি বলেছেন, পিএলএ সমুদ্রে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধ বিমানের মাধ্যমে ‘আইন অনুসারে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজটি ট্র্যাক করেছে এবং এটিকে চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।

তিনি বলেন, জাহাজটি ‘চীনা সরকারের অনুমতি ছাড়াই চীনের ভূখণ্ডের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করেছে, এটি এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষতি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ চীন সাগরে তাদের দাবি জাহির করার সময়, চীনা কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে যার মধ্যে কিছু সামরিক সুবিধা এবং রানওয়ে রয়েছে।

আঞ্চলিক দেশগুলো চীনা জাহাজের বিরুদ্ধে তাদের মাছ ধরার নৌকাকে হয়রানির অভিযোগও করেছে।

দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলোতে চীনের সামরিক অবকাঠামো নির্মাণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যা বেড়েই চলছে।

দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং যেন প্রভাব বিস্তার না করতে পারে সেজন্য ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে একত্রিত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

যারা নির্বাচন বিলম্ব করতে চায়, তারা গণতন্ত্রের শক্তি নয় : সালাহউদ্দিন আহমদ

দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ, সতর্ক চীন

প্রকাশের সময় : ০২:৪৩:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মার্চ ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

দক্ষিণ চীন সাগরে একটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজকে ট্র্যাক করেছে চীন। ওই যুদ্ধজাহাজটিকে বেইজিংয়ের জলসীমা থেকে ‘চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক’ করেছে চীনা সামরিক বাহিনী।

এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) এক বিবৃতিতে চীনের সামরিক বাহিনী বলেছে, কোনো সরকারি অনুমতি ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্রসমৃদ্ধ মার্কিন যুদ্ধজাহাজ ইউএসএস মিলিয়াস অবৈধভাবে চীনের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল। যা শান্তি ও ব্যস্ত জলপথের স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে ফেলেছিল।

তবে চীনের এ দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, খবরটি মিথ্যা। এছাড়া যুদ্ধজাহাজকে ধাওয়ার দেওয়ার খবরটিও ভুয়া বলে অভিহিত করেছে তারা।

এ ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের সপ্তম নৌবহর এক বিবৃতিতে বলেছে, ইউএসএস মিলিয়াস দক্ষিণ চীন সাগরে নির্ধারিত অভিযান পরিচালনা করছিল এবং আমাদের জাহাজকে সেখানে ধাওয়া দেওয়া হয়নি। আন্তর্জাতিক আইন যেখানে অনুমতি দেয় সেখানেই যুক্তরাষ্ট্র নিজস্ব কার্যক্রম (বিমান উড়ানো ও যুদ্ধজাহাজ চালানো) অব্যাহত রাখবে।

বিরোধপূর্ণ পারাসেল দ্বীপপুঞ্জটি দক্ষিণ চীন সাগরের ৭ স্কয়ার কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃত। এই দ্বীপপুঞ্জের ওপর চীনের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। সেখানে দেশটি বিভিন্ন সামরিক অবকাঠামো তৈরি করেছে। তবে তাইওয়ান ও ভিয়েতনামও দ্বীপপুঞ্জটির মালিকানা দাবি করে থাকে।

এর আগে গত জুলাইয়েও যুক্তরাষ্ট্রের একটি ডেস্ট্রয়ারকে ওই একই এলাকা থেকে ধাওয়া দেওয়ার দাবি করেছিল চীন। ওই সময়ও ঘটনাটিকে মিথ্যা হিসেবে দাবি করেছিল যুক্তরাষ্ট্র।

চীন প্রায় গোটা দক্ষিণ চীন সাগরের উপর সার্বভৌমত্ব দাবি করে। একটি কৌশলগত এই জলপথের মাধ্যমে বছরে ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য হয়। যদিও আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে এই দাবির কোনো আইনি ভিত্তি নেই।

ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া এবং ব্রুনাই সকলেই সাগরে ওভারল্যাপিং মালিকানা দাবি করে আসছে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক জলসীমায় নৌ চলাচলের স্বাধীনতা বজায় রাখতে এই জলপথে যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন করে।

চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি’র (পিএলএ) সাউদার্ন থিয়েটার কমাণ্ড জানিয়েছে, গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার ইউএসএস মিলিয়াস বৃহস্পতিবার প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের কাছে জলপথে প্রবেশ করেছে। এই অঞ্চল ভিয়েতনামও নিজেদের বলে দাবি করছে।

মুখপাত্র তিয়ান জুনলি বলেছেন, পিএলএ সমুদ্রে যুদ্ধজাহাজ ও যুদ্ধ বিমানের মাধ্যমে ‘আইন অনুসারে মার্কিন যুদ্ধ জাহাজটি ট্র্যাক করেছে এবং এটিকে চলে যাওয়ার জন্য সতর্ক করেছে।

তিনি বলেন, জাহাজটি ‘চীনা সরকারের অনুমতি ছাড়াই চীনের ভূখণ্ডের জলসীমায় অনুপ্রবেশ করেছে, এটি এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার ক্ষতি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

দক্ষিণ চীন সাগরে তাদের দাবি জাহির করার সময়, চীনা কর্তৃপক্ষ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করেছে যার মধ্যে কিছু সামরিক সুবিধা এবং রানওয়ে রয়েছে।

আঞ্চলিক দেশগুলো চীনা জাহাজের বিরুদ্ধে তাদের মাছ ধরার নৌকাকে হয়রানির অভিযোগও করেছে।

দক্ষিণ চীন সাগরের দ্বীপগুলোতে চীনের সামরিক অবকাঠামো নির্মাণ এবং যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজের উপস্থিতি নিয়ে দুই দেশের মধ্যে সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে। যা বেড়েই চলছে।

দক্ষিণ চীন সাগরে বেইজিং যেন প্রভাব বিস্তার না করতে পারে সেজন্য ওই অঞ্চলের অন্যান্য দেশগুলোকে দীর্ঘদিন ধরে একত্রিত করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।