ময়মনসিংহ জেলা প্রতিনিধি :
ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার চারটি ইউনিয়নের যাতায়াতের অন্যতম সড়ক ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক থেকে জিরো পয়েন্ট থেকে হরিরামপুর পর্যন্ত ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ পাকা সড়কটি যেন মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। সড়কটির অবস্থা এতই নাজুক যে বৃষ্টির সময় এটি ছোট-খাট খালে পরিণত হয়। আর শুকনো মৌসুমে ধুলো আর খানাখন্দেও কারণে সড়কে চলাচলকারীদেও শরীরে ধূলা-বালি জমে কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। আর বর্ষা মৌসুমে খানা-খন্দে জমা থাকা পানি ছিটকে যাত্রীদের জামা-কাপড় ভিজে যায়। নিয়মিত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
জানা যায়, ত্রিশাল সদর, সাখুয়া, রামপুর ও হরিরামপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের বাসিন্দাদের সীমাহীন কষ্ট করতে হচ্ছে। বেহাল সড়কের কারণে যানবাহন হেলেদুলে চলছে। বৃষ্টিতে মাঝে মাঝে এমন খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে সেটি দেখলে মনে হবে যেন ছোটখাল খাল। এখানকার ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থী ও রোগীদের অবর্নণীয় দুর্ভোগে পড়তে হয়।
প্রতিদিন এই সড়কে কয়েক হাজার বাস, ট্রাক, লরিসহ অসংখ্য যানবাহন চলাচল করে। তাছাড়া মাছের গাড়ির পানি, সড়কের পাশে একাধিক ইটভাটার ট্রাক ও ভারী বাহন চলাচলের কারণে সড়কটি দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে।
সরেজমিন দেখা গেছে—ত্রিশাল উপজেলার ত্রিশাল সদর, সাখুয়া, রামপুর ও হরিরামপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের মানুষ এই সড়কে চলাচল করেন। উপজেলা সদর, জেলা শহর কিংবা রাজধানী যেতে এই সড়কটি দিয়েই যেতে হয়। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ত্রিশাল জিরো পয়েন্ট হয়ে ত্রিশাল সদরে আসতে এই সড়ক পাড়ি দিয়ে আসতে হয়। মহাসড়ক থেকে উৎপত্তি হওয়ার পর সড়কটিতে আর কোথাও পিচের অস্তিত্ব নেই। ৯ কিলোমিটার সড়কের কোথাও পিচ নেই। খানাখন্দ আর ভাঙা রাস্তার কারণে চলাচল করা দায়। দীর্ঘদিন ধরে মেরামত করা না করায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে আছে।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করলেও সড়কটি সংস্কার না করায় ওই সড়কে চলাচলকারী মানুষকে সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে। খানাখন্দের কারণে এই সড়কে চলতে গিয়ে দুর্ঘটনা কবলিত হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহন। এ ছাড়াও মাঝে মাঝে বড় গর্তে পড়ে গিয়ে বিকল হচ্ছে অসংখ্য যানবাহন।
ব্যবসায়ী, রোগী ও শিক্ষার্থীদের বেশী কষ্ট হচ্ছে। গর্ভবতী মহিলাদের নিয়ে এ সড়কে চলা দায়। স্থানীয় ব্যবসায়ী হাসেম জানান, সড়কটি নষ্ট হওয়ার অন্যতম কারণ মাছের ট্রকের পানি। ট্রাকের অতিরিক্ত সড়কে জমে সড়কটি অল্প সম্পয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। বৃষ্টির সময় রাস্তায় পানি জমে থাকায় বুঝা মুশকিল হয়ে যায় কতটুকু গর্ত রয়েছে। গর্তে পড়ে প্রায় গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া এই সড়কের পাশে একাধিক ইটভাটার ট্রাক ও ভারী বাহন চলার কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে গেছে।
আাশিক আহমেদ জানান, এই সড়কে চলাচলকারী প্রত্যেকটি মানুষকে কষ্ট করতে হচ্ছে। সড়কটি খারাপ থাকার কারণে সিএনজি ও অটোর ভাড়া দ্বিগুন হয়ে গেছে। রিক্সা চালক আলী হোসেন বলেন, প্রতিদিন গাড়ি নষ্ট হয়ে যায়। কখনও কখনও রিক্সা, অটো বা সিএনজি উল্টে যায়। এসড়কটি দ্রুত মেরামতের দাবি জানাচ্ছি। আ. কাদের নামের এক সিএনজি চালক জানান, রাস্তাটি এতই খারাপ যে প্রায়ই যাত্রার মাঝ পথে সিএনজি উল্টে অথবা নষ্ট হয়ে যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী শফিউল্লাহ খন্দকার জানান, সড়কটির জন্য এ বছর কোন বরাদ্দ নেই। সড়ক সংষ্কারের জন্য মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ চাওয়া হবে। সড়কটি চলাচল উপযোগী করতে জুরুরি মেরামতের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।