Dhaka শুক্রবার, ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুনে মা-শিশুসন্তানসহ ৪ জনের মৃত্যু

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩
  • ১৯৮ জন দেখেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মা ও শিশুসন্তানসহ চার যাত্রী মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে ট্রেনটিতে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই দগ্ধ হয়ে চারজন মারা যান। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।

তারা হলেন- নাদিয়া আক্তার পপি (৩৫) ও তার শিশুসন্তান ইয়াসিন (৩)। অন্য দুজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

নিহতদের মধ্যে নাদিয়া ও তার শিশুসন্তান ছাড়া অন্য দুজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। নাদিয়ার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়। তার বাবার নাম ফজলুর রহমান। তেজগাঁও তেজকুনিপাড়ায় স্বামী মিজানুর রহমানের সঙ্গে থাকতেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার এই তথ্য নিশ্চিত বলেন, আজ ভোর ৫টার দিকে আমাদের কাছে সংবাদ আসে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। আমাদের তিনটি ইউনিট সকাল পৌনে ৭টার দিকে আগুন নির্বাপণ করে। একটি বগি থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশগুলোর মধ্যে একটি শিশু, একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলো নাদিরা আক্তার পপি ও তার তিন বছরের শিশু সন্তান ইয়াসিন।

কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক মো. ফেরদৌস বলেন, তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা গেছেন। তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল, এখন স্বাভাবিক হয়েছে।

নিহত নাদিরার ভাই হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। নাদিরার স্বামী মিজানুর কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা করেন। গত ৩ ডিসেম্বর তারা বেড়ানোর উদ্দেশে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই গতরাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ঢাকায় ফিরছিলেন।

হাবিবুর আরও জানান, তেজগাঁ স্টেশন এসে ট্রেনটি থামলে কিছু যাত্রী সেখানে নেমে যায়। এসময় তাদের পেছনের ছিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যান। এরপর ট্রেন চলতে শুরু করা মাত্রই পিছনের ছিট থেকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে দৌড়ে তিনি ফাহিমকে নিয়ে ট্রেন নামতে পারলেও ভিতরে আটকা পড়েন ছোট ইয়াসিন ও তার মা নাদিরা। তাদের আর কোনোভাবেই বের করতে পারেননি। পরবর্তিতে ফায়ার সার্ভিস তাদের মরদেহ বের করে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ (এএসআই) মো. মাসুদ জানান, মরদেহ ৪টি সকালে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। মৃত দু’জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। দু’জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি।

গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহল্লাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়ার চিলাই ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্বৃত্তরা রেললাইন কেটে ফেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় এক যাত্রী নিহত এবং ট্রেনের লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকোমাস্টারসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

চলতি বর্ষা যশোরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়ক চলাচলের অযোগ্য, দুর্ভোগে পথচারীরা

তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুনে মা-শিশুসন্তানসহ ৪ জনের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ১১:৪৩:১৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

রাজধানীর তেজগাঁও রেলস্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে দগ্ধ হয়ে মা ও শিশুসন্তানসহ চার যাত্রী মারা গেছেন। আহত হয়েছেন আরও কয়েকজন।

মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ভোর ৫টার দিকে ট্রেনটিতে আগুন দেয় দুর্বত্তরা। এতে ঘটনাস্থলেই দগ্ধ হয়ে চারজন মারা যান। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে পাঠানো হয়।

তারা হলেন- নাদিয়া আক্তার পপি (৩৫) ও তার শিশুসন্তান ইয়াসিন (৩)। অন্য দুজনের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

নিহতদের মধ্যে নাদিয়া ও তার শিশুসন্তান ছাড়া অন্য দুজনের পরিচয় এখনো জানা যায়নি। নাদিয়ার গ্রামের বাড়ি নেত্রকোনায়। তার বাবার নাম ফজলুর রহমান। তেজগাঁও তেজকুনিপাড়ায় স্বামী মিজানুর রহমানের সঙ্গে থাকতেন তিনি।

ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর থেকে মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা শাহজাহান শিকদার এই তথ্য নিশ্চিত বলেন, আজ ভোর ৫টার দিকে আমাদের কাছে সংবাদ আসে তেজগাঁও রেলওয়ে স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগিতে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। আমাদের তিনটি ইউনিট সকাল পৌনে ৭টার দিকে আগুন নির্বাপণ করে। একটি বগি থেকে চারজনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশগুলোর মধ্যে একটি শিশু, একজন নারী ও দুজন পুরুষ। এর মধ্যে দুজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। তারা হলো নাদিরা আক্তার পপি ও তার তিন বছরের শিশু সন্তান ইয়াসিন।

কমলাপুর রেলওয়ে থানার পরিদর্শক মো. ফেরদৌস বলেন, তেজগাঁও স্টেশনে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে ঘটনাস্থলেই চারজন মারা গেছেন। তাদের মরদেহ ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার পর ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল, এখন স্বাভাবিক হয়েছে।

নিহত নাদিরার ভাই হাবিবুর রহমান হাবিব জানান, তাদের বাড়ি নেত্রকোনার সদর উপজেলার বরুনা গ্রামে। নাদিরার স্বামী মিজানুর কারওয়ান বাজারে হার্ডওয়ারের ব্যবসা করেন। গত ৩ ডিসেম্বর তারা বেড়ানোর উদ্দেশে গ্রামের বাড়ি গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই গতরাত ১২টার দিকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসে ঢাকায় ফিরছিলেন।

হাবিবুর আরও জানান, তেজগাঁ স্টেশন এসে ট্রেনটি থামলে কিছু যাত্রী সেখানে নেমে যায়। এসময় তাদের পেছনের ছিটে থাকা দুই ব্যক্তিও নেমে যান। এরপর ট্রেন চলতে শুরু করা মাত্রই পিছনের ছিট থেকে আগুন জ্বলে উঠে। মুহূর্তেই আগুন পুরো বগিতে ছড়িয়ে পড়ে। সেখান থেকে দৌড়ে তিনি ফাহিমকে নিয়ে ট্রেন নামতে পারলেও ভিতরে আটকা পড়েন ছোট ইয়াসিন ও তার মা নাদিরা। তাদের আর কোনোভাবেই বের করতে পারেননি। পরবর্তিতে ফায়ার সার্ভিস তাদের মরদেহ বের করে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী ইনচার্জ (এএসআই) মো. মাসুদ জানান, মরদেহ ৪টি সকালে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে এসেছে রেলওয়ে থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। মৃত দু’জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। দু’জনের পরিচয় এখনও শনাক্ত হয়নি।

গত ১৩ ডিসেম্বর ভোরে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার প্রহল্লাদপুর ইউনিয়নের বনখড়িয়ার চিলাই ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনসহ সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। দুর্বৃত্তরা রেললাইন কেটে ফেলায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। ওই দুর্ঘটনায় এক যাত্রী নিহত এবং ট্রেনের লোকোমাস্টার ও সহকারী লোকোমাস্টারসহ বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হয়।