Dhaka রবিবার, ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৩ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তৃতীয় মেয়াদে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত নিকোলাস মাদুরো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি পার্টির নেতা নিকোলাস মাদুরো। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখলেন তিনি। এদিকে, ভোট গণনায় ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এনে ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার কথা জানিয়েছে মাদুরোর মূল প্রতিদ্বন্দী অ্যাডমুন্ড গনজালেস।

দেশটির স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ জুলাই) মধ্যরাতের পর নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।

দেশটির জাতীয় নির্বাচন কাউন্সিলের (সিএনই) প্রধান এলভিস আমোরোসো জানান, গণনা করা ৮০ শতাংশ ভোটের মধ্যে ৫১ দশমিক ২০ শতাংশ পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাদুরো আর তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধীদলীয় প্রার্থী এদমুন্দো গনসালেস পেয়েছেন ৪৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ ভোট।

ফলাফল ঘোষণার পূর্বে দেশটির স্থানীয় সময় রবিবার রাত ১১ টার দিকে সামাজিক মাধ্যম এক্সের এক পোস্টে গনজালেজ বলেন,‘ফলাফল লুকানো যাবে না। দেশ শান্তিপূর্ণভাবে একটি পরিবর্তন বেছে নিয়েছে।’

তিনি ফলাফল ঘোষণার আগেই উদ্যাপন শুরু করেন। তখন তিনি জানান, তাদের ‘উদ্যাপনের কারণ’ রয়েছে। ফলাফল প্রকাশের পূর্বে বিভিন্ন জনমত জরিপে তার জয়ের দিকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের জন্য পরিচিত এডিসন রিসার্চের এক জরিপে গনজালেজের ৬৫ শতাংশ ও মাদুরোর ৩১ শতাংশ ভোট পাওয়ার পূর্ভাবাস দেওয়া হয়েছিল। গনজালেজ ৬৫ শতাংশ ও মাদুরো ১৪ শতাংশ ভোট পাবেন বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল দেশটির স্থানীয় সংস্থা মেগানালিসিস।

২৫ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছে মাদুরোর দল। তার মধ্যে টানা ১১ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছেন মাদুরো। বলা হচ্ছিল এবারের নির্বাচনে তিনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। কারণ তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডমুন্ড গনজালেস এবার ব্যাপক সমর্থন টানতে পেরেছিলেন।

নির্বাচনের আগে হওয়া প্রায় সব জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন গনজালেস। তবে যে কোনো উপায়ে মাদুরো ক্ষমতা ধরে রাখবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মাদুরো। নিজ দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ দাবি করে মাদুরো বলেছিলেন, এবার যদি তিনি নির্বাচিত না হন, তাহলে ‘রক্তগঙ্গা’ বয়ে যাবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভোট গণনায় যাতে কোনো কারচুপি না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে সারাদেশের ভোটকেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার ‘সাক্ষী’ মোতায়েন করেছিল। কিন্তু তাদেরকে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি করেছেন গনজালেসের নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র।

দেশটির অনেক নাগরিকের দাবি, দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার সুযোগে নির্বাহী বিভাগের পাশাপাশি আইন ও বিচার বিভাগের ওপর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে মাদুরোর দল। আর সেই প্রভাব নির্বাচনেও কাজে লাগিয়েছেন মাদুরো।

ভেনেজুয়েলায় ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট নেওয়া হয়। ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রটি প্রতিটি ভোটের জন্য একটি কাগজের রসিদও প্রিন্ট করে, যা পরে একটি ব্যালট বাক্সে রাখা হয়। আইন অনুসারে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলো প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের রসিদ গণনার জন্য সাক্ষী পাঠাতে পারবে।

বিরোধীদের দাবি, রসিদ গণনার কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে ও মুদ্রিত রসিদের এক তৃতীয়াংশেরও কম অংশ বিরোধীদের সাক্ষীর সামনে আনা হয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

তৃতীয় মেয়াদে ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত নিকোলাস মাদুরো

প্রকাশের সময় : ১২:২১:০৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন সমাজতান্ত্রিক পিএসইউভি পার্টির নেতা নিকোলাস মাদুরো। এই নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো দেশটির ক্ষমতা ধরে রাখলেন তিনি। এদিকে, ভোট গণনায় ব্যাপক জালিয়াতির অভিযোগ এনে ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ করার কথা জানিয়েছে মাদুরোর মূল প্রতিদ্বন্দী অ্যাডমুন্ড গনজালেস।

দেশটির স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ জুলাই) মধ্যরাতের পর নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানিয়েছে।

দেশটির জাতীয় নির্বাচন কাউন্সিলের (সিএনই) প্রধান এলভিস আমোরোসো জানান, গণনা করা ৮০ শতাংশ ভোটের মধ্যে ৫১ দশমিক ২০ শতাংশ পেয়েছেন ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট মাদুরো আর তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিরোধীদলীয় প্রার্থী এদমুন্দো গনসালেস পেয়েছেন ৪৪ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ ভোট।

ফলাফল ঘোষণার পূর্বে দেশটির স্থানীয় সময় রবিবার রাত ১১ টার দিকে সামাজিক মাধ্যম এক্সের এক পোস্টে গনজালেজ বলেন,‘ফলাফল লুকানো যাবে না। দেশ শান্তিপূর্ণভাবে একটি পরিবর্তন বেছে নিয়েছে।’

তিনি ফলাফল ঘোষণার আগেই উদ্যাপন শুরু করেন। তখন তিনি জানান, তাদের ‘উদ্যাপনের কারণ’ রয়েছে। ফলাফল প্রকাশের পূর্বে বিভিন্ন জনমত জরিপে তার জয়ের দিকে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনের জন্য পরিচিত এডিসন রিসার্চের এক জরিপে গনজালেজের ৬৫ শতাংশ ও মাদুরোর ৩১ শতাংশ ভোট পাওয়ার পূর্ভাবাস দেওয়া হয়েছিল। গনজালেজ ৬৫ শতাংশ ও মাদুরো ১৪ শতাংশ ভোট পাবেন বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল দেশটির স্থানীয় সংস্থা মেগানালিসিস।

২৫ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছে মাদুরোর দল। তার মধ্যে টানা ১১ বছর ধরে প্রেসিডেন্ট হিসেবে রয়েছেন মাদুরো। বলা হচ্ছিল এবারের নির্বাচনে তিনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেন। কারণ তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডমুন্ড গনজালেস এবার ব্যাপক সমর্থন টানতে পেরেছিলেন।

নির্বাচনের আগে হওয়া প্রায় সব জনমত জরিপে এগিয়ে ছিলেন গনজালেস। তবে যে কোনো উপায়ে মাদুরো ক্ষমতা ধরে রাখবেন বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মাদুরো। নিজ দেশের নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে স্বচ্ছ দাবি করে মাদুরো বলেছিলেন, এবার যদি তিনি নির্বাচিত না হন, তাহলে ‘রক্তগঙ্গা’ বয়ে যাবে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ভোট গণনায় যাতে কোনো কারচুপি না হয়, সেটা নিশ্চিত করতে সারাদেশের ভোটকেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার ‘সাক্ষী’ মোতায়েন করেছিল। কিন্তু তাদেরকে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় বলে দাবি করেছেন গনজালেসের নেতৃত্বাধীন জোটের মুখপাত্র।

দেশটির অনেক নাগরিকের দাবি, দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকার সুযোগে নির্বাহী বিভাগের পাশাপাশি আইন ও বিচার বিভাগের ওপর অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে মাদুরোর দল। আর সেই প্রভাব নির্বাচনেও কাজে লাগিয়েছেন মাদুরো।

ভেনেজুয়েলায় ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ভোট নেওয়া হয়। ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রটি প্রতিটি ভোটের জন্য একটি কাগজের রসিদও প্রিন্ট করে, যা পরে একটি ব্যালট বাক্সে রাখা হয়। আইন অনুসারে, নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলগুলো প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের রসিদ গণনার জন্য সাক্ষী পাঠাতে পারবে।

বিরোধীদের দাবি, রসিদ গণনার কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে ও মুদ্রিত রসিদের এক তৃতীয়াংশেরও কম অংশ বিরোধীদের সাক্ষীর সামনে আনা হয়েছে।