Dhaka মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫, ৩০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তৃতীয় টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণে আগ্রহী জাপান, দেখা হচ্ছে গুরুত্বের সঙ্গে : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নবনির্মিত তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপান। দেশটির এ আগ্রহকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

শনিবার (৭ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সফররত জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার মাশাহিরো ওকামুরার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের অপারেশন এবং রক্ষাবেক্ষণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপান। একাধিক জাপানি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিমান এবং সিভিল এভিয়েশন মিলে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। তৃতীয় টার্মিনাল ডিজাইনের ক্ষেত্রে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম সেরা হয়ে থাকবে এমন নয়, যাত্রী সেবাতে যেন বিশ্ব সেরা হতে পারে সেটির নির্দশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন।

জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের কাজ শেষের দিকে। খুব শিগগিরই লাইন ৬ খুলে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় টার্মিনাল আংশিক উদ্ধোধন হলো। মাতারবাড়ির কাজ এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধু রেল সেতু যমুনার ওপরে নির্মিত হচ্ছে-এটিও এগিয়েছে। যে প্রজেক্টগুলো হাতে সেগুলো যেন যথা সময়ে স্মুথলি কাজ শেষ হয়, সেটির বিষয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং আরও প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক আমরা বিশেষভাবে, কৌশলগত সম্পর্কের ওপর ভীত্তি করে সামনের দিনে বাংলাদেশে ২০৪১ সালে উন্নত আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হতে জাপানের অব্যাহত একটি সহযোগিতার অংশ হচ্ছে বড় অগ্রাধিকারে থাকবে। সেটির জন্য আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও কিভাবে জোরদার করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করেছি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দু’একটি রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন সময়ে যে ধরনের কনসার্ন (উদ্বেগ) বা অন্যান্য কথা শোনা যায়, এ ধরনের কিছু জাপানের দিক থেকে নেই।

বৈঠকে নির্বাচন প্রসঙ্গ এসেছে কি না জানতে চাইলে জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে আমাদের ইচ্ছাটা (সুষ্ঠু নির্বাচন করার) পুনর্ব্যক্ত করেছি। কিন্তু বাংলাদেশ জাপানের মধ্যে যে সম্পর্ক, দু’একটি রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন সময়ে যে ধরনের কনসার্ন ও অন্যান্য কথা শুনছেন; এ ধরনের কিছু তাদের (জাপানের) নেই।

তিনি বলেন, আমরা পুনর্ব্যক্ত করেছি (সুষ্ঠু নির্বাচন করার), যেটা প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের ব্যবসার কথা বলতে গিয়ে বলেছি যে, গত ১৫ বছরের ধারাবাহিকতায় এবং যেটাকে আমরা বলি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কনটিনিউটি অব পলিসি-এটাও একটা বড় কনট্রিবিউটিং ফ্যাক্টর; আমাদের উন্নয়নে আজকের বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে। সামনের দিনেও এটা অব্যাহত থাকবে। অব্যাহত থাকার ব্যাপারে সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকার বদ্ধপরিকর।

বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার দেশ হিসেবে জাপানের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছ কি-না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী জানান, না দেয়নি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, তিনি রোববার (৮ অক্টোবর) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপানের সহযোগিতা প্রয়োজন। মিয়ানমারের সঙ্গে জাপানের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে। মিয়ানমারে বর্তমানে সেনা শাসনের কারণে একটি জটিলতা আছে। এটি নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় উপমন্ত্রী কোমুরা মাসাহিরো বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় জাপান সন্তোষ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে জাপান স্বেচ্ছায়, মর্যাদার ভিত্তিতে ও নিরাপদে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন আশা করে। আমাদের প্রত্যাশা মিয়ানমার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

উপমন্ত্রী আরও বলেন, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে সহায়তা করতে পেরে জাপান গর্বিত।

বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশ তথা ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

সংস্কার না হওয়ায় খানাখন্দে চলাচলে অনুপযোগী, দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

তৃতীয় টার্মিনাল রক্ষণাবেক্ষণে আগ্রহী জাপান, দেখা হচ্ছে গুরুত্বের সঙ্গে : পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ১০:২৯:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নবনির্মিত তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপান। দেশটির এ আগ্রহকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

শনিবার (৭ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় সফররত জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত পার্লামেন্টারি ভাইস মিনিস্টার মাশাহিরো ওকামুরার সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

শাহরিয়ার আলম বলেন, তৃতীয় টার্মিনালের অপারেশন এবং রক্ষাবেক্ষণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপান। একাধিক জাপানি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে। বিমান এবং সিভিল এভিয়েশন মিলে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবে। তৃতীয় টার্মিনাল ডিজাইনের ক্ষেত্রে অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম সেরা হয়ে থাকবে এমন নয়, যাত্রী সেবাতে যেন বিশ্ব সেরা হতে পারে সেটির নির্দশনা প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন।

জাপানের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, মেট্রোরেলের কাজ শেষের দিকে। খুব শিগগিরই লাইন ৬ খুলে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় টার্মিনাল আংশিক উদ্ধোধন হলো। মাতারবাড়ির কাজ এগিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধু রেল সেতু যমুনার ওপরে নির্মিত হচ্ছে-এটিও এগিয়েছে। যে প্রজেক্টগুলো হাতে সেগুলো যেন যথা সময়ে স্মুথলি কাজ শেষ হয়, সেটির বিষয়ে আলোচনা করেছি।

তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং আরও প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে। আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক আমরা বিশেষভাবে, কৌশলগত সম্পর্কের ওপর ভীত্তি করে সামনের দিনে বাংলাদেশে ২০৪১ সালে উন্নত আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হতে জাপানের অব্যাহত একটি সহযোগিতার অংশ হচ্ছে বড় অগ্রাধিকারে থাকবে। সেটির জন্য আমরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য আরও কিভাবে জোরদার করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করেছি।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে দু’একটি রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন সময়ে যে ধরনের কনসার্ন (উদ্বেগ) বা অন্যান্য কথা শোনা যায়, এ ধরনের কিছু জাপানের দিক থেকে নেই।

বৈঠকে নির্বাচন প্রসঙ্গ এসেছে কি না জানতে চাইলে জবাবে শাহরিয়ার আলম বলেন, আমরা স্বপ্রণোদিত হয়ে আমাদের ইচ্ছাটা (সুষ্ঠু নির্বাচন করার) পুনর্ব্যক্ত করেছি। কিন্তু বাংলাদেশ জাপানের মধ্যে যে সম্পর্ক, দু’একটি রাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন সময়ে যে ধরনের কনসার্ন ও অন্যান্য কথা শুনছেন; এ ধরনের কিছু তাদের (জাপানের) নেই।

তিনি বলেন, আমরা পুনর্ব্যক্ত করেছি (সুষ্ঠু নির্বাচন করার), যেটা প্রধানমন্ত্রী বারবার বলেছেন। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে জাপানের ব্যবসার কথা বলতে গিয়ে বলেছি যে, গত ১৫ বছরের ধারাবাহিকতায় এবং যেটাকে আমরা বলি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা কনটিনিউটি অব পলিসি-এটাও একটা বড় কনট্রিবিউটিং ফ্যাক্টর; আমাদের উন্নয়নে আজকের বাংলাদেশ যেখানে দাঁড়িয়ে আছে। সামনের দিনেও এটা অব্যাহত থাকবে। অব্যাহত থাকার ব্যাপারে সুষ্ঠু নির্বাচনে সরকার বদ্ধপরিকর।

বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার পাওয়ার দেশ হিসেবে জাপানের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া দিয়েছ কি-না জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী জানান, না দেয়নি।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনার প্রসঙ্গে শাহরিয়ার আলম বলেন, তিনি রোববার (৮ অক্টোবর) রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যাবেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাপানের সহযোগিতা প্রয়োজন। মিয়ানমারের সঙ্গে জাপানের ঐতিহাসিক সম্পর্ক আছে। মিয়ানমারে বর্তমানে সেনা শাসনের কারণে একটি জটিলতা আছে। এটি নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

জাপানের পররাষ্ট্র বিষয়ক সংসদীয় উপমন্ত্রী কোমুরা মাসাহিরো বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় জাপান সন্তোষ প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে জাপান স্বেচ্ছায়, মর্যাদার ভিত্তিতে ও নিরাপদে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন আশা করে। আমাদের প্রত্যাশা মিয়ানমার এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

উপমন্ত্রী আরও বলেন, হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পে সহায়তা করতে পেরে জাপান গর্বিত।

বাংলাদেশ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও ভারতীয় উপমহাদেশ তথা ইন্দো প্যাসিফিক অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ দেশ হিসেবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।