Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিস্তা রেল সেতুতে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

উত্তর জনপদের কাউনিয়ায় তিস্তা রেল সেতুর মেয়াদ শেষ হয়েছে ২২ বছর আগে। বর্তমানে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ৪টি আন্তনগর ট্রেনসহ ২২টি ট্রেন। লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের সঙ্গে দেশের রেল যোগাযোগের জন্য ১৯০১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুর মেয়াদ ধরা হয় ১০০ বছর। ২০০০ সালের আক্টোবরে সেতু নির্মাণের শতবর্ষ পূর্ণ হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে ২২ বছর।

লালমনিরহাট রেলওয়ে ডিভিশনের ২০টি ট্রেন এই সেতু দিয়ে চলাচল করছে। এর মধ্যে রয়েছে আন্তনগর, ডেমু, মেইল, লোকাল ও মালবাহী ট্রেন। সেতুটির পাশে আরেকটি রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়নে দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ নেই। রেলওয়ের সূত্র মতে, তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির দৈর্ঘ্য ২১১০ ফুট। এটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রেলসেতু হিসেবে পরিচিতি পায়। সেতুর উত্তর পাশে লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকা এবং দক্ষিণ পাশে যুক্ত রয়েছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেতুটির কাউনিয়া প্রান্তে পাকিস্তানি বাহিনী বোমাবর্ষণ করায় একটি গার্ডার পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ১৯৭২ সালে মেরামত করে সেতুটি পুনরায় চালু করা হয়। ১৯৭৭ সালে রেলওয়ে এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে রেল সেতুতে মিটারগেজ লাইনের পাশে ২৬০টি স্টিল প্লেট ও কাঠের পাটাতন স্থাপন করে। ১৯৭৮ সালে ট্রেন লাইনের পাশাপাশি সেতুতে সড়ক যোগাযোগ চালু করা হয়। সেই থেকে সেতু ওপর দিয়ে ট্রেন, যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচল শুরু করে। অতিরিক্ত মাল বোঝাই ও পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে সেতুতে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ২০০১ সালে সেতুর পূর্ব পাশে তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতু উদ্বোধন করেন। এতে রেল সেতুতে গাড়ি বন্ধ হলেও ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা বেশ নাজুক। দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রেলের যাত্রী ও অভিজ্ঞ মহল।

তিস্তা রেলসেতু এলাকার বাসিন্দা জাহেদুল ও আনোয়ার বলেন, ট্রেন চলার সময় সেতু কাপতে থাকে। মাঝে মাঝে মেরামতের কাজ হলেও সেতুর কোনো উন্নতি ঘটেনি। রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চল জোনের প্রধান প্রকৌশলী জানান, তিস্তা সেতুর কিছুটা মেরামত করা হয়েছে। এখন ট্রেন চলাচলে তেমন সমস্যা নেই। আমরা একে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু বলতে পারি না। যাত্রীদের আতঙ্কের ব্যাপারটি সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করব।

রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ম্যানেজার বলেন, তিস্তা রেলসেতু ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবুও এর পশ্চিম পাশে নতুন করে আরো একটি ডাবল ব্রডগেজ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

তিস্তা রেল সেতুতে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ট্রেন

প্রকাশের সময় : ০৭:১১:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

উত্তর জনপদের কাউনিয়ায় তিস্তা রেল সেতুর মেয়াদ শেষ হয়েছে ২২ বছর আগে। বর্তমানে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে ৪টি আন্তনগর ট্রেনসহ ২২টি ট্রেন। লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের সঙ্গে দেশের রেল যোগাযোগের জন্য ১৯০১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার সেতুটি নির্মাণ করে। সেতুর মেয়াদ ধরা হয় ১০০ বছর। ২০০০ সালের আক্টোবরে সেতু নির্মাণের শতবর্ষ পূর্ণ হয়। এরপর পেরিয়ে গেছে ২২ বছর।

লালমনিরহাট রেলওয়ে ডিভিশনের ২০টি ট্রেন এই সেতু দিয়ে চলাচল করছে। এর মধ্যে রয়েছে আন্তনগর, ডেমু, মেইল, লোকাল ও মালবাহী ট্রেন। সেতুটির পাশে আরেকটি রেল সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়নে দৃশ্যত কোনো উদ্যোগ নেই। রেলওয়ের সূত্র মতে, তিস্তা নদীর ওপর নির্মিত সেতুটির দৈর্ঘ্য ২১১০ ফুট। এটি দেশের তৃতীয় বৃহত্তম রেলসেতু হিসেবে পরিচিতি পায়। সেতুর উত্তর পাশে লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা এলাকা এবং দক্ষিণ পাশে যুক্ত রয়েছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলা।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেতুটির কাউনিয়া প্রান্তে পাকিস্তানি বাহিনী বোমাবর্ষণ করায় একটি গার্ডার পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ১৯৭২ সালে মেরামত করে সেতুটি পুনরায় চালু করা হয়। ১৯৭৭ সালে রেলওয়ে এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ যৌথভাবে রেল সেতুতে মিটারগেজ লাইনের পাশে ২৬০টি স্টিল প্লেট ও কাঠের পাটাতন স্থাপন করে। ১৯৭৮ সালে ট্রেন লাইনের পাশাপাশি সেতুতে সড়ক যোগাযোগ চালু করা হয়। সেই থেকে সেতু ওপর দিয়ে ট্রেন, যাত্রীবাহী বাস, ট্রাক ও বিভিন্ন যানবাহন চলাচল শুরু করে। অতিরিক্ত মাল বোঝাই ও পাথর বোঝাই ট্রাক চলাচলের কারণে সেতুতে ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ২০০১ সালে সেতুর পূর্ব পাশে তিস্তা সড়ক সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা সড়ক সেতু উদ্বোধন করেন। এতে রেল সেতুতে গাড়ি বন্ধ হলেও ট্রেন চলাচল অব্যাহত থাকে। বর্তমানে সেতুটির অবস্থা বেশ নাজুক। দুর্ঘটনা এড়াতে সেতুর উন্নয়নে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রেলের যাত্রী ও অভিজ্ঞ মহল।

তিস্তা রেলসেতু এলাকার বাসিন্দা জাহেদুল ও আনোয়ার বলেন, ট্রেন চলার সময় সেতু কাপতে থাকে। মাঝে মাঝে মেরামতের কাজ হলেও সেতুর কোনো উন্নতি ঘটেনি। রেলওয়ের পশ্চিম অঞ্চল জোনের প্রধান প্রকৌশলী জানান, তিস্তা সেতুর কিছুটা মেরামত করা হয়েছে। এখন ট্রেন চলাচলে তেমন সমস্যা নেই। আমরা একে ঝুঁকিপূর্ণ সেতু বলতে পারি না। যাত্রীদের আতঙ্কের ব্যাপারটি সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করব।

রেলওয়ের লালমনিরহাট বিভাগীয় ম্যানেজার বলেন, তিস্তা রেলসেতু ঝুঁকিপূর্ণ নয়। তবুও এর পশ্চিম পাশে নতুন করে আরো একটি ডাবল ব্রডগেজ সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।