Dhaka বুধবার, ৩০ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিস্তা প্রকল্পের জন্য প্রস্তুত চীন, সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকারের : চীনা রাষ্ট্রদূত

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

তিস্তা নদী পুনর্বাসন ও বহুমুখী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিলে চীন দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারবে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’-এ অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সব ধরনের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এখন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকারের হাতে। দীর্ঘদিন ধরেই তিস্তা নদীকে ঘিরে একটি পূর্ণাঙ্গ পানি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে। চীনের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের আলোচনা চললেও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চলছে। এ উদ্যোগের কেন্দ্রে রয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। এটি কোনোভাবেই তৃতীয় কোনো পক্ষবিরোধী জোট নয় এবং এ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। এটি নিয়ে অন্য কোনো দেশের উদ্বেগের কিছু নেইও।

বাংলাদেশে জাতীয় সরকার গঠন কিংবা নির্বাচন কখন হবে-এটি একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করে ইয়াও ওয়েন বলেন, এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণের রয়েছে। চীন সবসময় অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অটল।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহাসিক, গভীর ও বহুমাত্রিক। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ নিজস্ব রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। চীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে সম্মান করে এবং সমর্থন জানায়।’

বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের চীন সফর সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে ইয়াও ওয়েন বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চায়। তবে বিগত ১০ বছরে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে বাধা ছিল। এখন এই সম্পর্ক বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় চীন তদন্তে সহায়তা দেবে কি না জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ঘটনায় চীন গভীর শোকাহত। বাংলাদেশ সরকার সহায়তা চাইলে চীন সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের ত্রিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আছে। বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান ১২টি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে।

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কখন হবে, সেটা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আমি বিদেশি কূটনীতিক হিসেবে মন্তব্য করতে পারি না।

ডিক্যাব আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক, সাংবাদিক ও বিশ্লেষকরা উপস্থিত ছিলেন।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

তিস্তা প্রকল্পের জন্য প্রস্তুত চীন, সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকারের : চীনা রাষ্ট্রদূত

প্রকাশের সময় : ০৪:০৭:৪৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

তিস্তা নদী পুনর্বাসন ও বহুমুখী ব্যবস্থাপনা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার সিদ্ধান্ত নিলে চীন দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু করতে পারবে।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’-এ অংশ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

রাষ্ট্রদূত বলেন, তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন সব ধরনের কারিগরি ও আর্থিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত। এখন সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকারের হাতে। দীর্ঘদিন ধরেই তিস্তা নদীকে ঘিরে একটি পূর্ণাঙ্গ পানি ব্যবস্থাপনা ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা রয়েছে। চীনের অর্থায়নে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের আলোচনা চললেও এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।

তিনি বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের ত্রিপক্ষীয় আলোচনা চলছে। এ উদ্যোগের কেন্দ্রে রয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি। এটি কোনোভাবেই তৃতীয় কোনো পক্ষবিরোধী জোট নয় এবং এ নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার কোনো দেশ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। এটি নিয়ে অন্য কোনো দেশের উদ্বেগের কিছু নেইও।

বাংলাদেশে জাতীয় সরকার গঠন কিংবা নির্বাচন কখন হবে-এটি একান্তই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় বলে মন্তব্য করে ইয়াও ওয়েন বলেন, এসব বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার শুধুমাত্র বাংলাদেশের জনগণের রয়েছে। চীন সবসময় অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিতে অটল।

চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহাসিক, গভীর ও বহুমাত্রিক। আমরা বিশ্বাস করি, বাংলাদেশ নিজস্ব রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে স্থিতিশীলতা বজায় রাখবে এবং উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে। চীন বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে সম্মান করে এবং সমর্থন জানায়।’

বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের চীন সফর সম্পর্কে মন্তব্য জানতে চাইলে ইয়াও ওয়েন বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চায়। তবে বিগত ১০ বছরে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে বাধা ছিল। এখন এই সম্পর্ক বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় চীন তদন্তে সহায়তা দেবে কি না জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত বলেন, এই ঘটনায় চীন গভীর শোকাহত। বাংলাদেশ সরকার সহায়তা চাইলে চীন সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের ত্রিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা স্বাভাবিক। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আছে। বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তান ১২টি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে।

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কখন হবে, সেটা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আমি বিদেশি কূটনীতিক হিসেবে মন্তব্য করতে পারি না।

ডিক্যাব আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন। স্বাগত বক্তব্য দেন ডিক্যাবের সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক, সাংবাদিক ও বিশ্লেষকরা উপস্থিত ছিলেন।