Dhaka রবিবার, ২৭ জুলাই ২০২৫, ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৫৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৬২ জন। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, হিমালয় পর্বতমালার উত্তরাঞ্চলীয় প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত প্রত্যন্ত ডিংরি কাউন্টির সোগো শহরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর পর্যন্ত অন্তত ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে আর আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬২ জন। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের ২০ কিলোমিটার ব্যাসের মধ্যে তিনটি শহর ও ২৭টি গ্রাম আছে। এগুলোর মোট লোকসংখ্যা ৬৯০০ জন।
শিগেইস বিভাগের ডিংরি কাউন্টিতেই অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ডিংরির চাংসুও শহরে টংলাই এলাকায় বহু ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। শিগেইস বিভাগের লোকসংখ্যা প্রায় আট লাখ।

শিগেইস বিভাগের কেন্দ্রীয় শহর শিগেইস তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, এটি শিগাৎসি নামেও পরিচিত। লাসা থেকে ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপমশ্চিমের এ শহরটি তিব্বতের দ্বিতীয় পবিত্রতম শহর এবং পাঞ্চেন লামার বাসস্থান। ভূমিকম্পে হিমালায় পর্বতমালার নিকটবর্তী এই শহরটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ডিংরি কাউন্টির প্রধান সিনহুয়াকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পটি তাদের কাউন্টিতে প্রবলভাবে অনুভূত হয়েছে। মূল ভূমিকম্পের পর কয়েক ডজন পরাঘাতও অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শহরে উপস্থিত হচ্ছে বলে সিনহুয়া জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সামাজিক মাধ্যমে আসা এক ভিডিওতে লাটসি শহরের চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়া দোকান দেখা গেছে, সামনের রাস্তায় আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযানে নেমেছে চীনের বিমানবাহিনী। এতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গের পাশে অবস্থিত তিব্বতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে থাকায় সেখানে উদ্ধার অভিযান বেশ দুরূহ হবে।

উৎপত্তি স্থল থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতেও ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে। ভোর সকালে কাঠমাণ্ডুর বাসিন্দারা ঘরে ছেড়ে বাইরে ছুটে যান। ভূমিকম্পটি ভুটানের রাজধানী থিম্ফু এবং ভারতের বিহার রাজ্যসহ উত্তরাঞ্চলজুড়ে অনুভূত হয়েছে। তবে এসব অঞ্চলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর হয়নি।

ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষে কারণে চীনের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল, নেপাল ও ভারতের উত্তরাঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পটি নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তরাঞ্চলের পাশাপাশি বাংলাদেশেও অনুভূত হয়েছে।

নেপালেও শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হলেও সেখানে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে বার্তসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন দেশটির এক কর্মকর্তা। ২০১৫ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

 

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

পাকুন্দিয়ায় শরীফ হত্যা মামলার আরো এক আসামী গ্রেফতার

তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত ৫৩

প্রকাশের সময় : ১২:০৭:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ জানুয়ারী ২০২৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : 

চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল তিব্বতে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কমপক্ষে ৫৩ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে আরও ৬২ জন। রিখটার স্কেলে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ১।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) সকালে ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, হিমালয় পর্বতমালার উত্তরাঞ্চলীয় প্রবেশপথ হিসেবে পরিচিত প্রত্যন্ত ডিংরি কাউন্টির সোগো শহরে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি।

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, মঙ্গলবার স্থানীয় সময় দুপুর পর্যন্ত অন্তত ৫৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে আর আহত হয়েছেন আরও অন্তত ৬২ জন। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলের ২০ কিলোমিটার ব্যাসের মধ্যে তিনটি শহর ও ২৭টি গ্রাম আছে। এগুলোর মোট লোকসংখ্যা ৬৯০০ জন।
শিগেইস বিভাগের ডিংরি কাউন্টিতেই অধিকাংশ হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। ডিংরির চাংসুও শহরে টংলাই এলাকায় বহু ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। শিগেইস বিভাগের লোকসংখ্যা প্রায় আট লাখ।

শিগেইস বিভাগের কেন্দ্রীয় শহর শিগেইস তিব্বতের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর, এটি শিগাৎসি নামেও পরিচিত। লাসা থেকে ২৮০ কিলোমিটার দক্ষিণপমশ্চিমের এ শহরটি তিব্বতের দ্বিতীয় পবিত্রতম শহর এবং পাঞ্চেন লামার বাসস্থান। ভূমিকম্পে হিমালায় পর্বতমালার নিকটবর্তী এই শহরটিও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ডিংরি কাউন্টির প্রধান সিনহুয়াকে জানিয়েছেন, ভূমিকম্পটি তাদের কাউন্টিতে প্রবলভাবে অনুভূত হয়েছে। মূল ভূমিকম্পের পর কয়েক ডজন পরাঘাতও অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি হিসাব করতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন শহরে উপস্থিত হচ্ছে বলে সিনহুয়া জানিয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, সামাজিক মাধ্যমে আসা এক ভিডিওতে লাটসি শহরের চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়া দোকান দেখা গেছে, সামনের রাস্তায় আবর্জনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।

ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার অভিযানে নেমেছে চীনের বিমানবাহিনী। এতে ড্রোন ব্যবহার করা হচ্ছে। এভারেস্ট পর্বতশৃঙ্গের পাশে অবস্থিত তিব্বতের তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে থাকায় সেখানে উদ্ধার অভিযান বেশ দুরূহ হবে।

উৎপত্তি স্থল থেকে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার দূরে নেপালের রাজধানী কাঠমাণ্ডুতেও ভূমিকম্পটি অনুভূত হয়েছে। ভোর সকালে কাঠমাণ্ডুর বাসিন্দারা ঘরে ছেড়ে বাইরে ছুটে যান। ভূমিকম্পটি ভুটানের রাজধানী থিম্ফু এবং ভারতের বিহার রাজ্যসহ উত্তরাঞ্চলজুড়ে অনুভূত হয়েছে। তবে এসব অঞ্চলে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে খবর হয়নি।

ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটোনিক প্লেটের সংঘর্ষে কারণে চীনের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চল, নেপাল ও ভারতের উত্তরাঞ্চলে ঘন ঘন ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পটি নেপাল, ভুটান ও ভারতের উত্তরাঞ্চলের পাশাপাশি বাংলাদেশেও অনুভূত হয়েছে।

নেপালেও শক্তিশালী কম্পন অনুভূত হলেও সেখানে এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের ক্ষয়ক্ষতির সন্ধান পাওয়া যায়নি বলে বার্তসংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন দেশটির এক কর্মকর্তা। ২০১৫ সালে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর কাছে ৭ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে প্রায় ৯ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।