Dhaka রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তিন যুগেও সংস্কার হয়নি সেতু, সাঁকোই ভরসা

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর কুলিক নদীর ব্রিজটি সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে এভাবেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেতু নির্মাণ হবে এ আশায় তিন যুগ ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের কাছে সেতুটি যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।

এ জনবহুল এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে ১৯৮৬-৮৭ সালে ১৫০ মিটারের সেতু নির্মাণ করা হয়। ওই বছরেই ভয়াবহ বন্যায় এটি ভেঙে যায়। মধ্যখানে পড়ে থাকে প্রায় ৩০-৪০ মিটার সেতুর অবশিষ্ট অংশ এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দুপাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা। তখন থেকেই দুই ইউনিয়নের মানুষ এ চরম দুর্ভোগের মোকাবিলা আর আবেদন-নিবেদন করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এরপরও মেরামত কিংবা নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কাজ সারতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষদের। সেখানে পারাপারে পথচারীদের দিতে হয় জনপ্রতি ১০ টাকা। এভাবেই বাঁশের সেতুতে টাকা দিয়ে প্রায় ২৮ বছর ধরে পারাপার হচ্ছেন বর্মপুর, রসুনপুর, বিরাশী, লেহেম্বা ও রাউতনগর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রিজটি সংস্কারে সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরগুলো বারবার নির্মাণের আশ্বাস দিলেও এর কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন সময়ে কয়েকবার মাপযোগ করে নিয়ে গেলেও সংস্কারের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। প্রতিদিন এ অস্থায়ী বাঁশের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রায় পাঁচ হাজারেরও অধিক মানুষ চলাচল করেছে। এ বাঁশের সাঁকোতেই লেহেম্বা ও হোসেনগাঁও দুই ইউনিয়নের মানুষের মিলিত হওয়ার একমাত্র মাধ্যম। সেতুর পূর্ব পার্শ্বে বিরাশী বাজারসহ একটি মাদ্রাসা, চারটি বিদ্যালয় এবং পশ্চিম পাশে রাউতনগর বাজারসহ একটি কলেজ, দুইটি মাদ্রাসা এবং তিনটি বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিদিন শিক্ষার্থী, পথচারী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ টাকা গুণে এই সাঁকো দিয়ে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হয়। অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাঁকো পারাপারের টাকা না দিতে পাড়ায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এটি নতুনভাবে দ্রুত সংস্কার এখন যেন তাদের সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

উপজেলা প্রকৌশলী কেএম সাব্বিরুল ইনাম জানান, সেতুটি দ্রুত নির্মাণে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি, আমাদের নিজস্ব কিছু জটিলতা রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক হলে নির্মাণ কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে বলে আশা করছি।

জনপ্রিয় খবর

আবহাওয়া

মিটফোর্ড হত্যাকাণ্ড : আসামি টিটন গাজী ৫ দিনের রিমান্ডে

তিন যুগেও সংস্কার হয়নি সেতু, সাঁকোই ভরসা

প্রকাশের সময় : ০৪:৪১:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ মে ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক : 

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার রাউতনগর কুলিক নদীর ব্রিজটি সংস্কারের অভাবে দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে এভাবেই পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সেতু নির্মাণ হবে এ আশায় তিন যুগ ধরে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন এলাকাবাসী। স্থানীয়দের কাছে সেতুটি যেন মরার উপর খাঁড়ার ঘা।

এ জনবহুল এলাকার মানুষের কথা চিন্তা করে ১৯৮৬-৮৭ সালে ১৫০ মিটারের সেতু নির্মাণ করা হয়। ওই বছরেই ভয়াবহ বন্যায় এটি ভেঙে যায়। মধ্যখানে পড়ে থাকে প্রায় ৩০-৪০ মিটার সেতুর অবশিষ্ট অংশ এবং বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দুপাড়ের যোগাযোগ ব্যবস্থা। তখন থেকেই দুই ইউনিয়নের মানুষ এ চরম দুর্ভোগের মোকাবিলা আর আবেদন-নিবেদন করতে করতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন। এরপরও মেরামত কিংবা নতুন সেতু নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে কাঠ ও বাঁশের সাঁকো তৈরি করে কাজ সারতে হচ্ছে ওই এলাকার মানুষদের। সেখানে পারাপারে পথচারীদের দিতে হয় জনপ্রতি ১০ টাকা। এভাবেই বাঁশের সেতুতে টাকা দিয়ে প্রায় ২৮ বছর ধরে পারাপার হচ্ছেন বর্মপুর, রসুনপুর, বিরাশী, লেহেম্বা ও রাউতনগর এলাকার কয়েক হাজার মানুষ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রিজটি সংস্কারে সাবেক সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমান ও বর্তমান সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরগুলো বারবার নির্মাণের আশ্বাস দিলেও এর কোনো বাস্তবায়ন হয়নি। বিভিন্ন সময়ে কয়েকবার মাপযোগ করে নিয়ে গেলেও সংস্কারের ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। প্রতিদিন এ অস্থায়ী বাঁশের সেতু দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে প্রায় পাঁচ হাজারেরও অধিক মানুষ চলাচল করেছে। এ বাঁশের সাঁকোতেই লেহেম্বা ও হোসেনগাঁও দুই ইউনিয়নের মানুষের মিলিত হওয়ার একমাত্র মাধ্যম। সেতুর পূর্ব পার্শ্বে বিরাশী বাজারসহ একটি মাদ্রাসা, চারটি বিদ্যালয় এবং পশ্চিম পাশে রাউতনগর বাজারসহ একটি কলেজ, দুইটি মাদ্রাসা এবং তিনটি বিদ্যালয় রয়েছে। প্রতিদিন শিক্ষার্থী, পথচারী, শিক্ষক ও সাধারণ মানুষ টাকা গুণে এই সাঁকো দিয়ে বাধ্য হয়ে যাতায়াত করতে হয়। অনেক দরিদ্র শিক্ষার্থীর অভিভাবক সাঁকো পারাপারের টাকা না দিতে পাড়ায় স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। এটি নতুনভাবে দ্রুত সংস্কার এখন যেন তাদের সময়ের দাবি হয়ে উঠেছে।

উপজেলা প্রকৌশলী কেএম সাব্বিরুল ইনাম জানান, সেতুটি দ্রুত নির্মাণে আমরা দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছি, আমাদের নিজস্ব কিছু জটিলতা রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক হলে নির্মাণ কাজ খুব দ্রুত শুরু হবে বলে আশা করছি।